ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চ্যালেঞ্জের মুখে সরকার ॥ নতুন সড়ক আইন

প্রকাশিত: ১০:৫৭, ২৩ নভেম্বর ২০১৯

  চ্যালেঞ্জের মুখে সরকার ॥ নতুন সড়ক আইন

রাজন ভট্টাচার্য ॥ সরকারের আশ্বাসেও পরিবহন সেক্টরে সঙ্কট নিরসন হয়নি। পুরোপুরি কাটেনি অচলাবস্থা। পাঁচ দিনেও স্বাভাবিক হয়নি সারাদেশে বাস চলাচল। শ্রমিক ও মালিক পক্ষের নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ার কারণেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ার অভিযোগ করেছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টদের অনেকেই। তারা চান, সরকারের পক্ষ থেকে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসুক। অন্যথায় এই সেক্টরে বিভিন্ন ইস্যুতে ইচ্ছাকৃত অস্থিরতা বিরাজ করতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে আইন বাস্তবায়নে সরকারকে কঠোর হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তবে একাধিক সূত্র বলছে, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের দুদিনব্যাপী বৈঠকে ইতিবাচক কোন সিদ্ধান্ত না এলে সারাদেশে পরিবহন চলাচল আগের অবস্থায় ফিরবে না। যদিও বৈঠকটি শুক্রবার রাতে শেষ হয়েছে। দীর্ঘ চেষ্টার পর আইনটি বাস্তবায়নে সরকারের সামনে যে চ্যালেঞ্জ এসেছে তা কতটুকু মোকাবেলা করতে পারবে তাই এখন দেখার বিষয়। আগামী বছরের মধ্যে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত বছরের প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে মৃত্যুর সংখ্যা ২৪ হাজার। জাতিসংঘের তথ্য বলছে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৬৭ ভাগের বয়স ১৫-৪৯ এর মধ্যে। অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার কর্মক্ষমরাই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে আইন বাস্তবায়ন জরুরী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। দেশের পরিবহন শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী এই সংগঠনের নেতা সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান ও এক সময়ের বাম নেতা ওসমান আলী। যদিও তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বলছেন, বাস না চালানো বা ধর্মঘটের পেছনে সংগঠনের কোন সমর্থন নেই। জেলা পর্যায়ে এই সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য, তারা ঢাকার সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ পরিবর্তনের দাবিতে গত ১৭ নবেম্বর সকাল থেকে শ্রমিক ধর্মঘট শুরু হয়। এর ফলে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি পণ্য পরিবহন ও বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ২০১২ সাল থেকে নতুন করে সড়ক পরিবহন আইনের প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। গত বছর আইনটি সংসদে পাস হয়। দেড় বছর পর এক নবেম্বর থেকে তা কার্যকর করার ঘোষণা আসে। কিন্তু প্রস্তুতি ছাড়াই আইন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মালিক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে আপত্তি ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় দুদফায় ১৫ দিন সময় বাড়ানো হয় আইন প্রয়োগে। গত রবিবার থেকে আইন কার্যকর করার ঘোষণা দেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী। এরপর থেকেই বাস চলাচল বন্ধ হতে থাকে। যা শুক্রবার রাত পর্যন্ত সারাদেশে স্বাভাবিক হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরাও। তাছাড়া কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়াই সড়ক নিরাপত্তার স্বার্থে কঠোর আইন কার্যকর করা নিয়েও আছে বিস্তর সমালোচনা। যার প্রেক্ষিতে পুরোপুরিভাবে আইনের সব ধারা প্রয়োগ নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। অনেক বিষয়ে মালিক-শ্রমিকদের সময় দেয়া হচ্ছে। সহনীয় পর্যায়ে আইন প্রয়োগে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকেও। ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নয় দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে। এসব দাবি দাওয়া সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে। কিছু দাবি দাওয়া তাৎক্ষণিক মেনে নেয়ারও সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমিক নেতাদের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। তবু কেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না। এ নিয়ে আছে বিস্তর আলোচনা। কোন দিকে যাচ্ছে পরিস্থিতি ॥ নতুন সড়ক আইনের বিরোধিতা করে গত কয়েকদিন রাজধানী ঢাকা শহরে গণপরিবহন চলাচল ছিল সীমিত। দূরপাল্লার বাসও চলেছে অল্প পরিসরে। হঠাৎ এমন কর্মসূচীতে ঘর থেকে বের হয়ে বিপাকে পড়তে হয় অনেককে। এরই মধ্যে শুক্রবার কিছুটা স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল; যদিও সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় এ দিন সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যা স্বাভাবিক কর্মদিবসের তুলনায় কমই থাকে। বুধবার গভীর রাতে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিকরা সারাদেশে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও বৃহস্পতিবার ঢাকার সড়কগুলোতে গণপরিবহনের কমতি তো ছিলও, দূরপাল্লার বাসও স্বাভাবিকভাবে চলেনি। শুক্রবারেও সবকিছু শতভাগ ঠিক না হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে আসলে কোন দিকে যাচ্ছে পরিস্থিতি। একদিকে আইন বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জের মুখে সরকার। অন্যদিকে মালিক-শ্রমিকরা মুখে মুখে বলছেন সব ঠিক। কিন্তু ভেতরে নাড়ছেন কলকাঠি। তাতে দুর্ভোগ বাড়ছে। সমালোচনার ডালপালা গজাচ্ছে। কিন্তু কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ছুটির দিনে যানবাহন চলাচল ও যানজট না থাকলেও আজ একটু ভিন্নচিত্র। দূরপাল্লার বাস চলছে। তুলনায় কম হলেও চলছে আন্তঃজেলা ও রাজধানীতে চলাচলকারী বিভিন্ন রুটের গণপরিবহন। বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের দাবি-দাওয়া মেনে নেয়ায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। শ্রমিকরা কর্মে ফিরেছে। সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস-মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম জানান, সায়েদাবাদ থেকে সব রুটে পরিবহন ছেড়ে যাচ্ছে। কোথাও কোন সমস্যা নেই। মহাখালী বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, নওগাঁ ও চুয়াডাঙ্গায় আন্তঃজেলা ও অভ্যন্তরীণ রুটে যানচলাচল বন্ধ রেখেছে স্থানীয়রা পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। তাছাড়া আর কোথাও কোন সমস্যা নেই। ডিএমপির ট্রাফিক উত্তরের উপ-কমিশনার (ডিসি) প্রবীর কুমার দাস বলেন, সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে যানবাহনের সংখ্যা কম থাকলেও আজ বেশি মনে হচ্ছে। মিরপুর টেকনিক্যাল এলাকার ট্রাফিক সার্জেন্ট মাসরেকুল জানান, এ এলাকায় যানজট নেই, যান চলাচলও স্বাভাবিক। ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের রমনা এলাকার সহকারী কমিশনার রেফাতুল ইসলাম জানান, ছুটির দিনে অফিস আদালত বন্ধ থাকে। যান চলাচল স্বভাবত কমে যায়। তবে আজ শুক্রবার হলেও চিত্র ভিন্ন। যানচলাচল অন্যদিনের মতো। সাত কলেজের পরীক্ষা ও চাকরির পরীক্ষার কারণে এমনটা হতে পারে। তবে সাধারণ শ্রমিক ও পথচারীদের বক্তব্য, স্বাভাবিকের তুলনায় গণপরিবহন অর্থাৎ বাস চলাচল ছুটির দিনেও কম ছিল। যা সহজেই চোখে পড়ার মতো। মোটর শ্রমিক ফেডারেশনের সংবাদ সম্মেলন গাবতলীতে জাতীয় সড়ক পরিবহন মোটর শ্রমিক ফেডারেশন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান পরিবহন শ্রমিকদের অঘোষিত কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, পরিবহন শ্রমিকরাও সড়ক পরিবহন আইনের বাস্তবায়ন চান। তবে নতুন সড়ক পরিবহন আইনে পরিবহন শ্রমিকদের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। আইনের ১৪টি অধ্যায়ের ১২৫টি ধারার মধ্যে ৫২টি ধারাই শাস্তির বিধান সম্পর্কিত। কিন্তু চালকরা ছাড়াও পথচারী, সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরসহ বিভিন্ন পক্ষ সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নামে পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হচ্ছে। চাঁদাবাজির সুযোগ রাখতেই এটা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নামে তারা ২০০৩ সাল থেকে ব্যাপক চাঁদাবাজি করছে। এসব নেতা সরকারের ভেতরে থেকে পরিবহন ধর্মঘটের নামে বিশৃঙ্খলা করে অবৈধ চাঁদাবাজি বহাল রাখতে চায়। সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন করতে হলে দুর্নীতিবাজ এসব নেতাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের বৈঠক সড়ক পরিবহন আইন আনুষ্ঠানিক কার্যকর শুরুর পর প্রথমে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে আপত্তি আসে। তারা বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। যদিও পণ্যবাহী শ্রমিকদের নয় দফা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তারা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে। এর পরও সারাদেশে বাস চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে না। শুক্রবারও রাজধানীসহ গোটা দেশে স্বল্প পরিসরে বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। এদিকে সড়ক পরিবহন আইনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শুক্রবার সেগুনবাগিচায় স্বাধীনতা হলে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা। ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে দেশের বিভিন্ন জেলার পরিবহন শ্রমিক নেতারা এ সভায় অংশ নেন। বৃহস্পতিবারও বৈঠক করেছিলেন শ্রমিক নেতারা। তবে বৈঠকের বিষয়ে গণমাধ্যমে কোন কথা বলেননি তারা। শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার সভায় সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে জামিন অযোগ্য ধারা বাতিল, জরিমানা ও শাস্তির পরিমাণ কমানোসহ নয়টি বিষয়ে আপত্তি জানানোর বিষয়ে কথা হয়েছে তাদের। দুইদিনব্যাপী রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে গণমাধ্যম কর্মীদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। তবে আগেই জানানো হয়েছিল, বৈঠক শেষে সার সংক্ষেপ গণমাধ্যমে তুলে ধরবেন শাজাহান খান ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী। আর সকল সুপারিশ পাঠানো হবে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে। বিভিন্ন জেলার চিত্র এদিকে নতুন সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে দিনাজপুরে বেশিরভাগ যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে চালকরা। তবে এটি কোন সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নয় বলে জানিয়েছেন পরিবহন নেতারা। চালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন যে আইন হয়েছে তাতে শুধু চালকদেরই দোষারোপ করা হচ্ছে। কিন্তু চালকরা তো ইচ্ছা করে দুর্ঘটনা ঘটায় না। দুর্ঘটনা কমাতে হলে চালকদের পাশাপাশি যাত্রীসহ সবাইকে সচেতন করতে হবে। জেলা মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি বলেন, এটি সংগঠনের সিদ্ধান্ত না। কিছু চালক নিজেরাই বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এটি নিয়ে বৈঠক করা হচ্ছে। এদিকে দিনাজপুরের হিলি থেকে হিলি-দিনাজপুর, হিলি-বগুড়া পথে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন চালকরা। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে চালকরা গাড়ি বন্ধ রেখে এই কর্মসূচী পালন শুরু হয়। শুক্রবারও বাস চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে ভারত থেকে দেশে ফেরা যাত্রীরা বেশি বিড়ম্বনায় পড়ছেন। টানা পাঁচ দিন ধর্মঘটের পর নওগাঁ থেকে ঢাকা রুটে বাস চলাচল শুরু হলেও অভ্যন্তরীণ রুটে বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি এখনও বন্ধ রয়েছে ট্রাক-ট্যাংকলরি ও কাভার্ডভ্যান চলাচল। নওগাঁ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, দেশের অনেক জেলায় বাস চলাচল শুরু হয়েছে। কিন্তু নওগাঁয় এখনও শুরু হয়নি। এখন শ্রমিকরা যদি বাস না চালায়, তাহলে আমরা তো তাদের জোর করতে পারি না। টাঙ্গাইলে তৃতীয় দিনের মতো পরিবহন চালক ও শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলছে। শুক্রবার সকালে থেকে কোন দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। টাঙ্গাইল বাস-মিনিবাস শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চিত্ত রঞ্জন সরকার বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় শ্রমিক ফেডারেশনের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বাস চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। টাঙ্গাইল জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন বলেন, ‘বাস চলাচল আজও বন্ধ রয়েছে। তবে বিকেলের দিকে বাস চলাচলের সম্ভাবনা রয়েছে। পঞ্চম দিনের মতো পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে যশোরের বেনাপোলে। ফলে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল বন্দরে। বন্দরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পাশাপাশি সরকারী রাজস্ব আদায়েও বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বেনাপোল বন্দরের ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ আজিম উদ্দীন গাজী বলেন, ভারত থেকে আমদানি করা পণ্য বন্দরে আটকা পড়েছে। ফলে আমরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, দেশের স্থলপথে আমদানি হওয়া পণ্যের ৭০-৮০ শতাংশ আসে বেনাপোল দিয়ে। এসব পণ্যের মধ্যে শিল্পকারখানার প্রয়োজনীয় কাঁচামালসহ ওষুধ শিল্পের কাঁচামালও রয়েছে। লাগাতার ধর্মঘটে পণ্য পরিবহন করতে না পারায় লোকসান হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে শিল্প-কারখানার উৎপাদনও। রাজস্ব আহরণকারী সোনালী ব্যাংকের বেনাপোল শাখার ম্যানেজার রাকিবুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক ধর্মঘট যদি দীর্ঘায়িত হয় তবে রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দেবে। এই কয়দিনে, বেনাপোল কাস্টমস প্রায় ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
×