ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সারাদেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত ॥ বাজার স্বাভাবিক

দ্রুত গৃহীত ব্যবস্থায় একদিনেই লবণ গুজবের অবসান

প্রকাশিত: ১১:০৪, ২১ নভেম্বর ২০১৯

দ্রুত গৃহীত ব্যবস্থায় একদিনেই লবণ গুজবের অবসান

এম শাহজাহান ॥ সরকারী তৎপরতা দ্রুত হওয়ায় একদিনে লবণ গুজবের অবসান হয়ে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। সারাদেশে আগের মতো প্রতিকেজি প্যাকেটজাত লবণ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। এছাড়া প্রতিকেজি খোলা লবণ ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। দাম বেশি নেয়ার অভিযোগে সারাদেশে লবণ বিক্রেতা ও মজুদকারী ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে। সারাদেশে মাঠে রয়েছে ভ্রাম্যমাণ মোবাইল কোর্ট। এছাড়া ৯৯৯ নম্বরে কল করে লবণের বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিতে পারছেন ভোক্তারা। লবণ গুজব বন্ধে বুধবার জরুরী বৈঠক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া আজ শিল্প মন্ত্রণালয়ে লবণ নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীন জনকণ্ঠকে বলেন, যে কোন পণ্য নিয়ে গুজব ছড়ানো হলেই তাকে ধরা হবে। দেশে লবণের কোন সঙ্কট নেই, চাহিদার তুলনায় পাঁচগুণ মজুদ আছে। জানা গেছে, ‘লবণ নেই’- গুজব ছড়িয়ে মঙ্গলবার সারাদেশের ভোগ্যপণ্যের বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে অসাধু সিন্ডিকেট। সাধারণ ভোক্তাদের বোকা বানিয়ে খোদ রাজধানী থেকে কয়েক কোটি হাতিয়ে নিয়েছে লবণ ব্যবসায়ীরা। এছাড়া সারাদেশে লবণ আতঙ্ক ছড়িয়ে ২৫ টাকার লবণ ৮০-১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ফেসবুকে গুজব ছড়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা। ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে ব্যবসায়ীরা ভাড়া করা লোক দিয়ে বাজার থেকে বেশি পরিমাণে লবণ কেনায়। লবণ ফুরিয়ে যাচ্ছেÑ এ খবর চাউর হলে ভোক্তারা বুঝে না বুঝে শুধু লবণ কিনে নেন মুদি দোকান থেকে। এতে দ্রুত লবণের সঙ্কট তৈরি হয় বাজার থেকে বাজারে। এদিকে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে দেশে সম্প্রতি ক’টি সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করা হয়। গুজবের ভয়াবহ শিকার হয়েছেন নাসিরনগর, ভোলা, রামু, গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। এবার গুজব ছড়ানো হচ্ছে পণ্য নিয়ে। এর খেসারত দিতে হচ্ছে ভোক্তাদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর পেছনে রাজনৈতিক ইন্ধন থাকতে পারে। ইতোপূর্বে যতগুলো গুজব ছড়িয়ে সংঘাত সৃষ্টি করা হয়েছে তার পেছনে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক অপতৎপরতার প্রমাণ পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অপরাজনীতির শিকার হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ইতোমধ্যে এর পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে জানিয়েছেন। ভোগ্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করার পেছনে জামায়াত-শিবির ও বিএনপিপন্থী অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতার অভিযোগ উঠেছে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব আরও জানান, পুরো বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে গোয়েন্দা সংস্থা। খুব শীঘ্রই জড়িতদের খুঁজে বের করা হবে। তবে পেঁয়াজ ও লবণ নিয়ে যা হলো- তাতে মনে হয়েছে এর পেছনে অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে দেশে চাহিদার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ভোজ্যলবণ উৎপাদন করা হচ্ছে। দেশে উৎপাদন ও মজুদ পর্যাপ্ত থাকায় গত কয়েক বছর ধরে লবণ আমদানি বন্ধ রেখেছে সরকার। আমদানি যা হচ্ছে তা সোডিয়াম সালফেট বা শিল্প লবণ। প্রকৃতপক্ষে দেশে ভোজ্যলবণের কোন সঙ্কট নেই। লবণ চাষীরা বরাবরই ন্যায্য দামের আশায় আন্দোলন করে আসছেন। এছাড়া বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা বলছে, এ মুহূর্তে দেশে ভোজ্যলবণের কোন সঙ্কট নেই। বিসিকের বাইরে তাদের কাছেও পর্যাপ্ত লবণ মজুদ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির জনকণ্ঠকে বলেন, লবণ নিয়ে যা হয়েছে তা ¯্রফে গুজব। গুজবে কান না দেয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, আগামী দুই মাস পর্যন্ত চলার মতো ভোজ্যলবণ মিলগুলোতে মজুদ রয়েছে। এছাড়া লবণের উৎপাদন মৌসুম শুরু হয়েছে। ফলে লবণের কোন সঙ্কট বা ঘাটতি নেই দেশে। ভোজ্যলবণ বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অঙ্গীকার দেশে ভোজ্যলবণ বাজারজাতকারী বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মূলত এসব প্রতিষ্ঠান সারাদেশে প্যাকেটজাত ও খোলা লবণ সরবরাহ করে থাকে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির উদ্যোক্তারাও লবণের যোগান দিচ্ছে। বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে লবণ নিয়ে জরুরী বৈঠক করা হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, গোয়েন্দা সংস্থা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ ব্যাংক, ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরগুলোর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। ওই বৈঠকে পূবালী, মেঘনা, এসিআই, মোল্লাসহ নারায়ণগঞ্জ ও বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার অঙ্গীকার করেছেন। লবণ শিল্পের উদ্যোক্তারা জানান, এ ঘটনার জন্য গুজব দায়ী। দেশে লবণের কোন সঙ্কট নেই। মিলগুলোতে পর্যাপ্ত লবণ মজুদ রয়েছে বলে জানানো হয়। এ কারণে গুজব ছড়িয়ে বাজার অস্থিতিশীলের জন্য যারা দায়ী তাদের আইসিটি আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়ার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, মঙ্গলবার থেকে এ ব্যাপারে কাজ শুরু করা হয়েছে। এ বিষয়ে অনেক অগ্রগতি আছে। শীঘ্রই দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। আজ শিল্প মন্ত্রণালয়ে বৈঠক বাজার পরিস্থিতি, লবণের উৎপাদন, গুজব বন্ধ এবং ভোক্তাদের আরও কম দামে লবণ দিতে আজ জরুরী বৈঠক ডেকেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিসিক থেকে লবণ নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, লবণের কোন সঙ্কট নেই। যা হয়েছে তা গুজব ছড়িয়ে। চাহিদার পাঁচগুণ লবণ মজুদ থাকার পরও গুজব ছড়িয়ে যারা বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে তাদের খুঁজে বের করা হবে। বিসিকের তথ্যমতে, এ মুহূর্তে তাদের হাতে ৬ লাখ টন লবণের মজুদ রয়েছে, বিপরীতে প্রতিমাসে প্রয়োজন হয় ১ লাখ টনের। এছাড়া লবণের মৌসুম শুরু হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন লবণ তুলবেন চাষীরা। এছাড়া লবণের উৎপাদন, বাজারে সরবরাহ এবং দাম নিয়ে দেশে লবণ নীতিমালা রয়েছে। কোন সঙ্কট হলে পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করা হবে তা ওই নীতিমালায় বলা হয়েছে। এ কারণে লবণ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই বলে জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এদিকে বিসিকের তথ্যমতে লবণ উৎপাদনে ৬০ হাজার একর জমি ব্যবহার করা হচ্ছে। আর দেশে লবণের চাহিদা ১৪ লাখ টন। এর মধ্যে শিল্প খাতে পৌনে চার লাখ এবং ৮ লাখ ৭২ হাজার টন ভোজ্যলবণের চাহিদা দেশে রয়েছে। তবে সংস্থটির এই তথ্যের সঙ্গে একমত নন বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতি। তাদের মতে, দেশে লবণের চাহিদা আরও বেশি। এদিকে লবণ নিয়ে সারাদেশে মোবাইল কোর্টের অভিযান ও জরিমানার খবর জানিয়েছেন জনকণ্ঠের নিজস্ব সংবাদদাতা ও স্টাফ রিপোর্টারগণ। সাতক্ষীরায় জেল জরিমানা লবণের সঙ্কট ও গুজব সৃষ্টির অভিযোগে সাতক্ষীরায় ৬ ব্যবসায়ীর জেল দেয়া হয়েছে। গ্রেফতার ২৩ এবং ৭ জনের জরিমানা করা হয়। এছাড়া গুজব প্রতিরোধে সভা করা হয়েছে। এছাড়া ২৩ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তালায় এক ডিলারকে ৬ মাসের জেল দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা, সুলতানপুর বড়বাজার, মিলবাজার ও সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর বাজার থেকে তাদের আটক করে এ সাজা প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী ও সদর ভূমি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান। সাজাপ্রাপ্ত ৫ জন হলেন সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর উমরাপাড়া এলাকার ইমাম হোসেন, মেহেদি হাসান, ইয়াছিন মোড়ল, পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার মোস্তাফিজুর রহমান ও মিজানুর রহমান। অন্য ৭ জনকে ২৩ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে পুলিশ একই অভিযোগে মোট ২৩ জনকে আটক করে। জেলা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই আটকের তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে সাতক্ষীরায় চাল, পেঁয়াজ এবং লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির গুজব প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাগমারায় ৬ জনের কারাদ- গুজব ছড়িয়ে লবণের বেশি দাম নেয়ায় রাজশাহীর বাগমারায় ছয় ব্যবসায়ীকে আটকের পর সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় লবণের দাম বেশি নেয়ার অভিযোগে ছয়জনকে এক বছর করে কারাদ- দেয়া হয়। লক্ষ্মীপুরে লবণের কোন ঘাটতি নেই লক্ষ্মীপুরসহ আশপাশের জেলায় লবণের কোন ঘাটতি নেই। প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত লবণ মজুদ রয়েছে। বাজারে বর্তমানে ২৫/৩০ কেজি দরে কেজি দরে লবণ অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিকভাবে বিক্রি হচ্ছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেছেন, পুরো জেলায় আমাদের মনিটরিং সেল কাজ করছে। কোন অসাধু ব্যক্তি এ ব্যাপারে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করলে বা কেউ অতিরিক্ত মূল্যে লবণ বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাদারীপুরে লবণের দাম বৃদ্ধির গুজব ঠেকাতে প্রশাসন মাদারীপুরে লবণের দাম বৃদ্ধির গুজব ঠেকাতে প্রশাসন, পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে বণিক সমিতি। বুধবার সকালে বিভিন্ন হাট-বাজারে হ্যান্ড মাইকিং করছেন তারা। এছাড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাদা আলাদা সভাও করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। গুজবে কান না দিতে ক্রেতা সাধারণের প্রতি আহ্বান জানান ব্যবসায়ী নেতারা। এছাড়া গুজবের কারণে কেউ লবণের বাড়তি দাম নিলে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান পুলিশের কর্তা-ব্যক্তিরা। গোপালগঞ্জে ১২ ব্যবসায়ীকে ৩৮ হাজার টাকা জরিমানা গোপালগঞ্জে গুজবকে পুঁজি করে অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রির দায়ে ১২ দোকান মালিককে ৩৮ টাকা জরিমানা করেছে মোবাইল কোর্ট। লবণের দাম কেজিপ্রতি ২-৩শ’ টাকা হবে এমন গুজবে মঙ্গলবার দুপুরের পর গোপালগঞ্জে সাধারণ মানুষের মধ্যে লবণ কেনার হিড়িক পড়ে। পরে বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট বাজার মনিটরিংয়ে মাঠে নামে এবং অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রেতাদের জরিমানা করে। বোয়ালমারীতে তিন ব্যবসায়ীকে জরিমানা লবণের দাম বেশি নেয়ায় ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে তিন ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সহকারী কমিশনার ভূমির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাকিলা বিনতে মতিন ভ্রাম্যমাণ কোর্ট পরিচালনা করেন। পরে লবণের দাম বেশি না নেয়ার জন্য মাইকিং করা হয়। লালমনিরহাটে ৭ জনের সাজা লালমনিরহাট সদর উপজেলায় লবণের মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়শ্রী রানী রায় ৭ লবণ ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ-াদেশ দিয়েছেন। গতকাল সারাদিন লবণ নিয়ে গুজবের কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে কাজ করে। এই জেলায় লবণের দামবৃদ্ধির হোতা লবণ ব্যবসায়ী গোফরান হাজীকে গভীর রাতে বড়বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি লবণের দাম বৃদ্ধির কারসাজি লালমনিরহাটে ছড়িয়েছেন। তিনি এই জেলার সবচেয়ে লবণের বড় ব্যবসায়ী। গ্রেফতার হওয়ার পর তিনি তার দোষ স্বীকার করে নেয়। ফলে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এক বছরের জেল দেয়। গাজীপুরে মুরগি ছেড়ে লবণ ব্যবসায় নেমে ধরা গাজীপুরে গুজব ছড়িয়ে লবণের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে অধিক মুনাফা করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে মুরগি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম (৩০)। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে অর্থদ- করেছে। এছাড়াও পৃথক ঘটনায় ১১ ব্যবসায়ীকে লক্ষাধিক টাকা অর্থদ- করেছে পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাহীনুর ইসলাম জানান, বিভিন্ন এলাকায় গুজব ছড়িয়ে লবণের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে বেশি মূল্যে বিক্রি করছিল একটি সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা। বরগুনায় চার লবণ বিক্রেতার জরিমানা ৫৬ হাজার টাকা বগুনার বামনা উপজেলার লবণের গুজবের কারণে বেশি দামে ব্যবসায়ীরা লবণ বিক্রয় করেন এমন সংবাদের কারণে তাৎক্ষণিক নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছাবরিনা সুলতানা বামনার সকল বাজার পরিদর্শন করেন এবং মোবাইল কোর্টের আওতায় এনে জয়নগর বাজারে হানিফ দোকানদারকে ১৫ হাজার, রামনা বৈকালিন বাজারে গবিন্দ ও পুলিন চন্দ্র শীলকে ২০ হাজার করে ৪০ হাজার এবং কালাইয়া বাজারের জসিম দোকানদারকে ১ হাজার মোট ৫৬ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ডোমারে ৫ জনকে আটক করে জরিমানা জেলার ডোমার উপজেলায় উচ্চ মূল্য লবণ বিক্রি ও লবণ নিয়ে গুজব ছড়ানোর দায়ে ডোমার থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমানের নেতৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ জন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে হাতেনাতে আটক করেছে। ঈশ্বরদীতে প্রশাসনের মাইকিং লবণের দাম বৃদ্ধি সংক্রান্ত গুজব প্রতিরোধে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈশ্বরদীর নতুন হাট ও দাশুড়িয়া বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে ব্যাপক অভিযান চালানো হয়েছে। বুধবার দিনব্যাপী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব রায়হান ও সহকারী কমিশনার মমতাজ মহল এসব পৃথক অভিযানের নেতৃত্ব দেন। অভিযান চলাকালে কোথাও বেশি দামে লবণ বিক্রি বা লবণ সঙ্কটের কোন প্রকার তথ্য পাওয়া যায়নি। যশোরে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা যশোরে ভ্রাম্যমাণ আদালত দুটি লবণের গুদামে অভিযান পরিচালনা করে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে তা আদায় করেছেন। এনডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী নাজিব হাসান বুধবার দুপুর একটার দিকে শহরের হাটখোলা রোড আটাপট্টিতে এই অভিযান পরিচালনা করেন। এছাড়া কেশবপুর, দাউদকান্দি, ঝালকাঠি, নড়াইল, টঙ্গী, রূপগঞ্জ ও মাগুরায় লবণের দাম বেশি নেয়ায় ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের নজরে রয়েছেন সারাদেশের ব্যবসায়ীরা।
×