ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

পাঁচ দিনব্যাপী আইডিএলসি নাট্যোৎসব শুরু

প্রকাশিত: ১১:০৬, ২০ নভেম্বর ২০১৯

পাঁচ দিনব্যাপী আইডিএলসি নাট্যোৎসব শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবেম্বরে রঙিন রূপে ধরা দিয়েছে রাজধানীর সংস্কৃতি ভুবন। ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে শিল্প-সাহিত্যের দুটি আন্তর্জাতিক আসর ঢাকা লিট ফেস্ট ও ফোক ফেস্ট। সেই রেশ না কাটতেই মঙ্গলবার থেকে শুরু হলো পাঁচ দিনব্যাপী নাটকের আরেকটি উৎসব। ‘তারুণ্যের জয়গানে আসুন আনন্দের মঞ্চে’ স্লোগানে আইডিএলসি নাট্য উৎসবের সূচনা হয়। দশটি নাটকে সজ্জিত এ উৎসবের ভেন্যু শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা। উৎসবে অংশ নিচ্ছে ঢাকা থিয়েটার, আরশিনগর, নাগরিক নাট্যাঙ্গন, তাড়ুয়া, পদাতিক নাট্য সংসদ, শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্র, সময় নাট্যদল, নাট্যচক্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ। দুইটি পৃথক সময়ে নাট্যশালার মূল মিলনায়তন ও এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে প্রতিদিন দুইটি করে নাটকের প্রদর্শনী হবে। মঞ্চনাটক শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং তরুণ মনের নানা রঙে সাজানো সমাজ ও সভ্যতা বিনির্মাণের প্রতিচ্ছবিÑএমন উপলব্ধি মঞ্চনাটকে তরুণদের প্রাণসঞ্চারের লক্ষ্যে দ্বিতীয়বারের উৎসবের আয়োজন করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড। হেমন্ত সন্ধ্যায় শিল্পকলা নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে উৎসব উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সিইও আরিফ খানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। উদ্বোধনী আয়োজনের শুরুতে গৌড়ীয় নৃত্য পরিবেশন করেন নৃত্যশিল্পী র‌্যাচেল প্রিয়াঙ্কা। মঞ্চনাটকের মাধ্যমে শিল্পীর জীবিকা নির্বাহের প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বাংলাদেশে মঞ্চনাটক থেকে আয় করে শিল্পী তথা নাট্যকর্মীর জীবিকা নির্বাহ তুলনামূলকভাবে কঠিন। সেজন্য দেশের ব্যবসায়িক বা আর্থিক কোন প্রতিষ্ঠান নাটকের পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে এলে নাট্যকর্মীদের উচিত, সেই সুযোগ গ্রহণ করা। সেটি নাটকের জন্য ভাল হবে। নাটক এগিয়ে যাবে এবং সমৃদ্ধ হবে। বক্তব্যে যেসব নাট্যকর্মীর জীবন-জীবিকা মূলত নাটকের ওপর নির্ভরশীল তাদের বাছাই করে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বার্ষিক সম্মানীর ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানের উপস্থাপক অভিনেত্রী আফসানা মিমির অনুরোধে নূরলদীনের সারা জীবন কাব্যনাট্যের কিছু অংশ আবৃত্তি করেন। রামেন্দু মজুমদার বলেন, জাতিসত্তার বিকাশে সংস্কৃতি তথা নাটকের কোন বিকল্প নেই। নাটক সমাজের দর্পণ ও সমাজ বিনির্মাণের হাতিয়ার। সমাজের নানা সঙ্গতি-অসঙ্গতিকে তুলে ধরতে হলে তরুণ প্রজন্মকে নাট্যচর্চায় বেশি বেশি মনোনিবেশ করতে হবে। নাটক নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এমন একটি উৎসবের আয়োজন করাতে আইডিএলসি কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আরিফ খান বলেন, দায়িত্ব ও অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইডিএলসি সবসময় দেশের সমৃদ্ধ শিল্প-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের পৃষ্ঠপোষকতায় কাজ করছে। সেই দায়িত্ব থেকেই এবং দেশের প্রতিভাবান শিল্পীদের প্রতি যথাযথ সম্মান জানাতেই দ্বিতীয়বারের মতো আমরা এই উৎসবের আয়োজন করেছি। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগ প্রযোজিত নাটক ‘রসপুরাণ’। রাত সাড়ে আটটায় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় নাট্যচক্রের নাটক ‘ভদ্দরনোক’। আজ বুধবার উৎসবের দ্বিতীয় দিন। এদিন বিকেল ৫টায় এক্সপেরিমেন্টাল হলে পরিবেশিত হবে নাট্যদল তাড়ুয়ার নাটক ‘লেট মি আউট’ এবং সন্ধ্যা ৭টায় নাট্যশালার মূল হলে প্রদর্শিত হবে নাগরিক নাট্যাঙ্গনের প্রযোজনা ‘গহর বাদশা ও বানেছা পরী’। বৃহস্পতিবার উৎসবের তৃতীয় দিন বিকেল ৫টায় এক্সপেরিমেন্টাল হলে ঢাকা পদাতিক নাট্য সংসদের ‘পাইচো চোরের কিচ্ছা’ এবং সন্ধ্যা ৭টায় নাট্যশালার মূল হলে মঞ্চস্থ হবে শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের ‘চম্পাবতী’। চতুর্থ দিন শুক্রবার বিকেল ৫টায় এক্সপেরিমেন্টাল হলে পরিবেশিত হবে সময় নাট্যদলের নাটক ‘ভাগের মানুষ’ এবং সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে মঞ্চস্থ হবে ঢাকা থিয়েটারের ‘ধাবমান’। শনিবার সমাপনী দিনে বিকেল ৫টায় এক্সপেরিমেন্টাল হলে পরিবেশিত হবে আরশীনগরের নাটক ‘রহু চ-ালের হাড়’ এবং রাত ৮টা ৩০ মিনিটে নাট্যশালার মূল হলে পরিবেশিত হবে থিয়েটারের ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। এদিনই নাট্যশালার মূল হলে সন্ধ্যা ৭টায় থাকছে সমাপনী অনুষ্ঠান। এতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে দেয়া হবে ‘কৃতী সম্মাননা’। নাট্যমঞ্চের নেপথ্যে কলাকুশলীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও দীর্ঘমেয়াদী অবদানের জন্য বিশেষ করে আলোকসজ্জা, শব্দ-নিয়ন্ত্রণ, মঞ্চসজ্জা, মেকআপ ও পোশাক পরিকল্পনা বিভাগে এই সম্মাননা প্রদান করা হবে।
×