ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সৃজনশীল চিন্তা ও উদ্ভাবনী মেধায় তারা দেশ-বিদেশে অবদান রাখতে পারেন

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীর ভূমিকা দিন দিন বেড়ে চলেছে

প্রকাশিত: ১১:০৫, ২০ নভেম্বর ২০১৯

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীর ভূমিকা দিন দিন বেড়ে চলেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর অবদান উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তারা তৈরি পোশাক শিল্পে শতকরা ৩৪ ভাগের বেশি অবদান রাখছেন। তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও তাদের ভূমিকা দিন দিন বেড়েই চলেছে। উদ্যোক্তা তৈরি বিশেষ করে নারীরা তাদের সৃজনশীল চিন্তা ও উদ্ভাবনী মেধা বিকাশের মাধ্যমে যেন দেশে-বিদেশে অবদান রাখতে পারে। এ লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন আইডিয়া, নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। মঙ্গলবার আগারগাঁও আইসিটি টাওয়ারে নারী উদ্যোক্তা দিবস উপলক্ষে আইডিয়া প্রকল্পের উদ্যোগে ‘উদ্যোক্তা সংস্কৃতি ও উদ্ভাবনী পরিবেশ তৈরিতে নারীর ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ কথা বলেন। আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক মুজিবুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যের মধ্যে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক, কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতীম দেব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভিশন-২১’ তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার মাধ্যমে নারী পুরুষের সম্মিলিত প্রয়াসে ইনক্লুসিভ উন্নয়নের ঘোষণা দিয়েছেন। বর্তমানে দেশে ৫ হাজার ৮শ’ ৬৫ ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) রয়েছে। প্রতিটি ইউডিসিতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কাজ করছেন। গত কয়েক বছরে ২১ জেলায় প্রায় সাড়ে দশ হাজার নারী উদ্যোক্তা গড়ে তোলা হয়েছে। প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। নারী-পুরুষ সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকার ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ কোম্পানি’ তৈরি করছে। তিনি আইডিয়া প্রকল্পের মাধ্যমে তরুণ নারী উদ্যোক্তাদের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টদের কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। দেশী চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বজয়ের মতো প্রয়োজন দক্ষ নারী উদ্যোক্তা। একইদিন অন্য একটি অনুষ্ঠানে পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বটম-আপ এ্যাপ্রোচ পদ্ধতি অনুসরণ করে তৃণমূল থেকে ডিজিটাইজেশনের নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে। প্রথমে গ্রামের মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য সারাদেশে সাড়ে ৫ হাজারের বেশি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করেছে সরকার। এ অনুষ্ঠানটি ছিল খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে। অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় সরকারী সেবা পৌঁছে দিতে সরকার ইতোমধ্যে ৬শ’ সেবা ডিজিটালাইজ করেছে। এসব সেবা মানুষ অনলাইনে পাচ্ছেন। ’২৩ সালের মধ্যে ২ হাজার আট শ’ সার্ভিস সরকারী সেবা অনলাইনে আনা সম্ভব হবে। ১১ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য ‘রূপকল্প-২১’ ঘোষণা করেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে চারটি স্তম্ভ নির্ধারণ করা হয়। এগুলো হচ্ছে- মানবসম্পদ উন্নয়ন, কানেক্টিভিটি, ই-গবর্নেন্স ও আইটি ইন্ডাস্ট্রি প্রমোশন। এগুলো বাস্তবায়নে কাজ করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। আইডিয়া প্রকল্প, হাইটেকপার্ক প্রকল্পসহ আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য মেন্টরিং, কোচিং, ফান্ডিংসহ সববিষয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। ই-কমার্স, বিপিও সেক্টর, সফটওয়্যার কোম্পানিসহ বিভিন্ন সরকারী সেবা সার্ভিসে মোট ১০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। আগামী চার বছরের মধ্যে আরও ১০ লাখ তরুণ তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন তরুণ-তরুণীরা বিভিন্ন সেক্টরে চাকরি করে দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছেন। আগামীতে এই সেক্টর হবে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।
×