ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশের অভিধান থেকে মঙ্গা বা দুর্ভিক্ষ শব্দটি বিলুপ্তপ্রায় : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

বাংলাদেশের অভিধান থেকে মঙ্গা বা দুর্ভিক্ষ শব্দটি বিলুপ্তপ্রায় : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সফলভাবে এমডিজি অর্জনের পাশাপাশি বাংলাদেশ এখন এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ অর্জনের দিকে সঠিক পথেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি। তিনি বলেন,বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশের অভিধান থেকে মঙ্গা বা দুর্ভিক্ষ শব্দটি বিলুপ্তপ্রায়। না খেয়ে মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে আর ঘটে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেবল মাথাপিছু আয় বেড়েছে তা নয়, অথৈর্নতিক ও সামাজিক সূচকে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিক হয়েছে। অজর্ন করেছে বিস্ময়কর সাফল্য। মঙ্গলবার সকালে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সেবায় লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ অর্জন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষা বর্ধনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নেপালের স্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রী উপেন্দ্র কুমার যাদব, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের আঞ্চলিক প্রতিনিধি ড. পুনম ক্ষেত্রপাল,বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদসহ অন্যান্য দেশ থেকে আগত স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক, বিভিন্ন সংস্থা প্রধান, বিভিন্ন দেশের সরকারি ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ। জাহিদ মালেক বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে আপন মহিমায় নিজস্বতা নিয়ে। স্বাধীনতা লাভের ৪৭ বছর পর উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার যোগ্যতার স্বীকৃতি দিল জাতিসংঘ। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বেরিয়ে আসার স্বীকৃতি পেল। বাংলাদেশে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে, মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ১৮৮৮ মার্কিন ডলার, জিডিপিতে বর্তমান প্রবৃদ্ধি ৮.১৩ শতাংশ। এর পাশাপাশি দেশের স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নতি ঘটছে। শিশুমৃত্যু হার, মাতৃমৃত্যু হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক সেবার মাধ্যমে বর্তমানে দেশে ঘরে ঘরে স্বাস্থ্যসেবা চলে গেছে। বর্তমানে দেশের ৮ বিভাগে ৮টি ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ কাজ, লিভার সিরোসিস রোগের জন্য আলাদা হাসপাতাল নির্মাণ কাজের প্রক্রিয়া দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। যেভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাতে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা বাংলাদেশ ২০৩০ সালের বেশ আগেই পৌঁছে যাবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্যখাতে যুগান্তকারী সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য বিষয়ক সহস্রাব্দ অর্জনেও এদেশের বেশ অগ্রগতি হয়েছে। প্রশংসিত হয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে। দেশের সর্বত্র বিস্তার লাভ করেছে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্ক। এমন মজবুত অবকাঠামোর ওপর দাাঁড়িয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাত্রার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, ওষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি, কমিউনিটি ক্লিনিক চালু , স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম ইত্যাদি উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। দেশের ৯৯ ভাগ উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে রয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিসেবার ব্যবস্থা। বর্তমানে প্রতি মাসে ৮০ থেকে ৯০ লাখ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা নেন। বিদ্যমান অবকাঠামোর যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার মান সারাবিশ্বের অনুকরণীয় হতে পারে। পুরোদমে এগিয়ে চলছে স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম। মাঠ পর্যায়ে বিতরণ করা হয়েছে ল্যাপটপ ও ট্যাবলেট কম্পিউটার। গ্রাম এলাকার প্রতিদিনের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের সব পরিসংখ্যান তাৎক্ষণিকভাবে কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করা সম্ভব হচ্ছে। পোলিও , ধনুষ্টংকারমুক্ত দেশ হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সার্টিফিকেট গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্রেও এসেছে ব্যাপক উন্নতি।
×