ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নতুন সড়ক পরিবহন আইন : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সহ ১১ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট

প্রকাশিত: ০৭:৪২, ১৮ নভেম্বর ২০১৯

নতুন সড়ক পরিবহন আইন : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সহ ১১ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাস্তবায়নের প্রতিবাদে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলা সহ মোট ১১ জেলায় পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। যদিও পরিবহন মালিক সমিতি বা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে পরিবহন ধর্মঘটের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচী ঘোষণা হয়নি। মূলত জেলা পর্যায়ের শ্রমিক নেতাদের সিদ্ধান্তে পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। গত বছর ঢাকায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে সারাদেশে নজিরবিহীন আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে আগের আইন কঠোর করে নতুন আইন করা হয়। ২০১৮ সালে পাশ হওয়া এ আইন এক নবেম্বর থেকে কার্যকর করার ঘোষণা আসে। বিভিন্ন পক্ষের অনুরোধে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ১৫দিন পর থেকে আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত দেন। যা গত রবিবার থেকে কার্যকর শুরু হয়েছে। প্রথম দিন থেকেই আইনের বিরোধীতা করে বিভিন্ন জেলায় পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়। যা সোমবারও অব্যাহত ছিল। তবে আইনটি প্রণয়নের পর থেকেই এর প্রবল বিরোধিতা করে আসছে পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। এরি ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন জেলায় শ্রমিকরা ‘স্বেচ্ছায়’ এই কর্মবিরতি শুরু করে। যদিও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী সোমবার বলেছেন, কোন চাপের মুখে সরকার আইন বাস্তবায়ন থেকে পিছু হটবে না। সড়কের নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলার স্বার্থে সংশ্লিষ্টদের আইন মেনে চলার জন্য অনুরোধ করে তিনি বলেন, কোনো প্রকার ধর্মঘট-বনধ এসব থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আইন প্রয়োগের সময় অযথা যেন বাড়াবাড়ি না হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরিবহন ধর্মঘটের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমি সেটা জানি, তাদের সাথে আমাদের সচিব আলোচনা করেছেন, আমিও কথা বলেছি, দেখেন না কি হয়। তাই বলে আইন প্রয়োগ না করে সরে যাব এটি কি আপনারা চান? আপনারাও আমাকে সহযোগিতা করুন, তারা তো চাপ দেবেই। সকালে মন্ত্রী ধর্মঘটীদের সঙ্গে সচিবের আলোচনার কথা জানালেও রাত আটটা পর্যন্ত বিভিন্ন জেলায় পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত ছিল। গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমে বাস বন্ধ স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস থেকে জানান, গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের প্রতিবাদে যশোর থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয় রবিবার থেকে। সোমবার তা ছড়িয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। বাংলাদেশ পরিবহন সংস্থা শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোর্তজা হোসেন জানান, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দশ জেলায় পরিবহন শ্রমিকরা স্বেচ্ছায় বাস চালাচ্ছেন না। জেলাগুলো হলো, যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, মাগুরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা। শ্রমিকরা কাউকে ইচ্ছা করে হত্যা করে না জানিয়ে মোর্তজা বলেন, অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনার জন্য নতুন সড়ক আইনে তাদেরকে ‘ঘাতক’ বলা হচ্ছে। তাদের জন্য এমন আইন করা হয়েছে যা সন্ত্রাসীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। নতুন আইনের অনেক ধারার ব্যাপারে শ্রমিকদের আপত্তি রয়েছে। সরকার সমাধানের কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় শ্রমিকরা রবিবার দুপুর থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। পরিবহন সংস্থা শ্রমিক সমিতি যশোরের সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ ফুলু জানান, ১৪ নবেম্বর যশোরে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে সড়ক আইন ২০১৮ সংশোধনের দাবি করা হয়। এরপর রবিবার সকাল থেকে যশোরের ১৮ রুটের শ্রমিকরা স্বেচ্ছায় কর্মবিরতি শুরু করেছেন। তবে যশোর-বেনাপোল ও যশোর-সাতক্ষীরার অভ্যন্তরীণ রুটে কোনো যাত্রীবাহী বাস চলাচল না করলেও কার, মাইক্রোবাস, ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, নসিমন-করিমন জাতীয় ছোট যানবাহন এবং অযান্ত্রিক গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ঈগল পরিবহনের বেনাপোল অফিসের ব্যবস্থাপক এম আর রহমান বলেন, ঢাকা-কলকাতা ও বেনাপোল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও দেশের অন্যান্য স্থানে দূরপাল্লার সব বাস চলাচল করছে। ট্রেন চলছে। তবে অভ্যন্তরীণ রুটে কোনো বাস চলাচল করছে না। যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ছাত্রী আফসানা আফরিন পাঁপড়ি কলেজে যাওয়ার জন্য সোমবার সকালে বেনাপোল বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান করছিলেন। পাঁপড়ি বলেন, ‘যশোর যাওয়ার জন্য বেনাপোলে এসে শুনি বাস চলছে না। অসুস্থ, তারপরেও জরুরি কাজে কলেজে যেতে হবে কিন্তু এখন আর যেতে পারছি না।’ এদিকে, পরিবহন শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করায় সোমবার সকাল থেকে ঝিনাইদহ-যশোর, ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ -মাগুরা, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ-হাটফাজিলপুর ও ঝিনাইদহ হরিণাকুন্ডু রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস ও কার চালকরাও কর্মবিরতি পালন করছেন। বাস না পেয়ে অনেকে ইজিবাইক ও মহাসড়কে নিষিদ্ধ তিন চাকার যানবাহনে চলাচল করছে। স্থানীয় সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও ঢাকাসহ দূরপল্লার বাস ও ট্রাকসহ অন্যান্য পরিবহন চলাচল করতে দেখা গেছে। খুলনা থেকে সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে সোমবার পরিবহণ শ্রমিকেরা খুলনা হতে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। আইন সংস্কারের দাবি জানিয়ে শ্রমিকেরা বলেরছেন তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত গাড়ী চালাবেননা। এদিকে আকস্মিক এ পরিবহন ধর্মঘটের ফলে বিভিন্ন রুটের হাজার হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগের শিকার হন। ধর্মঘটী পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলছেন, দুর্ঘটনার মামলায় জামিনযোগ্যসহ সড়ক আইনের কয়েকটি ধারায় সংশোধন চান চালকরা। তাদের দাবি, আইন সংশোধনের পরই এটি কার্যকর করা হোক। না করা পর্যন্ত শ্রমিকদের এ কর্মসূচী চলবে। তারা বলেন, সরকারের বিভিন্ন দফতরে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও আইনটি সংশোধন ছাড়াই বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়া হয়। এতে শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে খুলনা থেকে সকল রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ২১ ও ২২ নবেম্বর শ্রমিক ফেডারেশন বর্ধিত সভা ডেকেছে। ওই সভার এজেন্ডাগুলোর মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে সড়ক পরিবহন আইন সম্পর্কে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ। খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ নুরুল ইসলাম বেবী বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চালাচ্ছেন না। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন। তিনি বলেন, নতুন পরিবহন আইনে কোন কারনে দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে নতুন আইনে চালকদের মৃত্যুদন্ড এবং আহত হলে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। এমন দন্ড মাথায় নিয়ে শ্রমিকেরা বাস চালাতে চাননা। যে কারণেই নতুন পরিবহন আইন সংস্কারের দাবিতে বাস চালানো বন্ধ রেখেছে। তিনি বলেন, সড়কে অবৈধ নসিমন-করিমন চলাচলের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটে। এসব যানবাহন বন্ধ ও চালকদের জরিমানা করা হয় না। সব জেল-জরিমানা হয় বাস চালকদের। খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন সোনা সাংবাদিকদের বলেন, শ্রমিকরা ফাঁসি ও যাবজ্জীবন দন্ডের ভয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিয়েছে। মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা না করেই তারা এ কর্মসূচী পালন করছে। এদিকে ভোরে ঈগল পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি পরিবহনের বাস নগরীর রয়্যাল মোড় এলাকার কাউন্টার থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেলেও সকাল ৯টার পর থেকে সব বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে। মেহেরপুরের সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ সংবাদদাতা, মেহেরপুর থেকে জানান ॥ মেহেরপুরে আন্তঃজেলার সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় চালকরা। ফলে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর-কুষ্টিয়া, মেহেরপুর মুজিবনগর সড়কে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে হঠাৎ করে বাস চলাচল না করায় দূর্ভোগের শিকার হয়েছে সাধারণ যাত্রীরা। কেননা তার আগে থেকে জানতেন না বাস চলাচল বন্ধের খবর। মেহেরপুর মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান জানান, বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চালকরা। তারা সড়ক পরিবহন আইনের বেশ কিছু ধারা সংশোধন চান। এটা ইউনিয়নের কোন সিদ্ধান্ত নয়। আগামী ২১ তারিখ দক্ষিন-পশ্চিসাঞ্চলের নেতারা বৈঠকে বসবেন। সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচী নেয়া হবে। নড়াইলের কর্মবিরতি নিজস্ব সংবাদদাতা,নড়াইল থেকে জানান ॥ সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর জেল জরিমানা সংশোধনসহ ১১ দফা দাবিতে নড়াইলের আভ্যন্তরীন ৬টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। পূর্ব কোনো ঘোষণা ছাড়াই সেচ্ছায় বাস চলাচল বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। এদিকে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই নড়াইল-যশোর, নড়াইল-লোহাগড়া, নড়াইল-মাগুরা, নড়াইল-নওয়াপাড়া ও নড়াইল-কালিয়া সড়কে রবিবার সন্ধ্যা থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও নড়াইল জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক সাদেক খান জানান, বাস বন্ধ রাখার ব্যাপারে সংগঠনের কোন সিদ্ধান্ত নেয় হয়নি। কিন্তু আমাদের সাথে আলাপ না করে বাস চালক-শ্রমিকরা নতুন পরিবহন আইনের ভয়ে সেচ্ছায় অভ্যন্তরীন ৬টি রুটে বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছে। তবে বিক্ষিপ্তভাবে কোনো কোনো রুটে দু’একটি বাস চলছে বলে জানান। এর আগে রবিবার বেলা ১১ টায় নড়াইল প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর জেল জরিমানা সংশোধনসহ ১১ দফা দাবীতে নড়াইলে পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ মানববন্ধন এবং জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। মানববন্ধনে বক্তারা প্রতিটি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০৪/খ ধারায় মামলা রুজু করা, মটরযান ও চালকেদের ওপর অধিক অর্থদন্ড ও জেল জরিমানা সংশোধনের দাবি ছাড়াও ১১দফা দাবি জানান। এর ৭ ঘন্টা পর কোনো ঘোষণা ছাড়াই শ্রমিকরা নড়াইল-যশোর, নড়াইল-লোহাগড়া, নড়াইল-মাগুরা, নড়াইল-নওয়াপাড়া ও নড়াইল-কালিয়া সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। শেরপুরে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর থেকে জানান ॥ শেরপুর থেকে সব ধরনের দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সোমবার সকাল থেকে শহরের বাগরাকসা ও নবীনগর এলাকাস্থ দু’টি বাস টার্মিনাল থেকেই ঢাকা-শেরপুরসহ সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে অভ্যন্তরিণ ও দূরপাল্লার সকল বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীসাধারণ। বেলা দেড়টার দিকে শহরের বাগরাকসাস্থ সোনার বাংলা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, কাউন্টারের সামনে যাত্রীরা টিকেটের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। কাউন্টারে টিকেট মাস্টারও রয়েছেন। তবে কোন বাসের চালক গাড়ি চালাতে রাজি না হওয়ায় টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে জেলা বাস-কোচ মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সুজিত ঘোষ বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইনের কারণে চালক-শ্রমিকরা গাড়ি বের করছেন না। চালকরা কখন কোন মামলায় পড়েন সেই ভয়ে তারা রাস্তায় গাড়ি নামাতে চাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, আমরা কোন ধর্মঘট ডাকিনি বা বাস বন্ধেরও নির্দেশনা দেইনি। আমাদের টিকেট কাউন্টার খোলা ও লোকজনও রয়েছে। তবে কোন চালক যদি জরিমানার ভয়ে বাস চালাতে না চায়, তাহলে আমরা কি করতে পারি। মাগুরা বাস বন্ধ নিজস্ব সংবাদদাতা , মাগুরা থেকে জানান ॥ সোমবার সকাল থেকে নতুন সড়ক আইনের প্রতিবাদে মাগুরার আভ্যন্তরীন রুটে বাসচলাচল বন্ধ রয়েছে। চালক ও শ্রমিকরা মাগুরা-যশোর ভায়া আড়পাড়া সড়ক এবং মাগুরা -ঝিনাইদহ সড়কে আভ্যন্তরীন রুটে বাসচলাচল বন্ধ রেখেছে। ফলে যাত্রীদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যাত্রীরা ইজিবাইক ও মহেন্দ্রতে করে যাতায়াত করছে। ফলে সময়ের পাশাপাশি যাত্রীদের সময় ও অর্থ বেশী খরচ হচ্ছে।তবে দুরপাল্লার বাস ও ট্রক চলাচল করছে। শ্রমিক ও চালকরা বলেন , নতুন সড়ক আইন সংশোধন করা হোক । সাতক্ষীরায় ধর্মঘটে যাত্রী ভোগান্তি স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা থেকে জানান ॥ সাতক্ষীরার সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকরা। সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারন যাত্রীরা। পরিবহন শ্রমিক নেতাদের দাবি, আইন সংশোধনের পর এটি বাস্তবায়ন করা হোক। এটা না করা পর্যন্ত আমাদের এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। এদিকে হঠ্যাৎ করেই সাতক্ষীরার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় হাজার হাজার যাত্রী দুর্ভোগে পড়েছেন। তারা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে নছিমন, করিমন ও ইজিবাইক যোগে গন্তব্য স্থলে পৌছানোর চেষ্টা করছেন। বাসচালকসহ মটর শ্রমিক নেতারা জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে নতুন আইনে চালকদের মৃত্যুদন্ড এবং আহত হলে ৫ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। আমাদের এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই। তারা আরো জানান, একজন চালকের পক্ষে ৫ লাখ টাকা জরিমানা দেয়া আদৌ সম্ভব নয়। কারণ একজন চালকের বেতন সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। এ কারণেই নতুন পরিবহন আইন সংশোধনের পর এটি বাস্তবায়নের জন্য তারা জোর দাবী জানান। আর তা না হলে তারা বাস চালাবেন না বলে জানান।
×