ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

লালমনিরহাটে রাত জেগে পেঁয়াজ ক্ষেত পাহারা দিচ্ছে কৃষক

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

লালমনিরহাটে রাত জেগে পেঁয়াজ ক্ষেত পাহারা দিচ্ছে কৃষক

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট ॥ তিস্তা পাড়ের গ্রামের মানুষ রাত জেগে পেঁয়াজ ক্ষেত পাহাড়া দিচ্ছে। এখানকার গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে আবাদের পেঁয়াজ মাচাং পদ্দতিতে সারা বছর মজুদ করে রাখে। তাই তাদের পারিবারিক জীবনে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিতে তেমন প্রভাব পড়েনি। বরং অনেকে চড়াদামে পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি করে লাভবান হয়েছে। এসব গ্রামের কৃষক পরিবার গুলো সারাবছর ধরে নিজেদের উৎপাদিত পেঁয়াজ মাচাংয়ে রেখে নিত্যদিনের প্রয়োজন মিটায়। পরে অবশিষ্ট ছোট পিঁয়াজ জমিতে রোপন করে পূনরায় বড় পিঁযাজ উৎপাদন করে। এবার তারা তিস্তা চরের বিস্তৃর্ণ এলাকায় একরের পর একর ছোট পেঁয়াজ হতে পেঁযাজ ক্ষেত রোপন করেছে। ফলনো হয়েছে বাম্পার। ৮/১০ দিনের মধ্যে এই পেঁয়াজ হতে রোপিত পেঁয়াজ বাজারে পাওয়া যাবে। তখন পেঁয়াজের বাজার দাম কিছুটা হলেও কমে আসবে। পিঁয়াজ হতে পিঁয়াজ বাজারের আসলে কিছুটা হলেও আমদানী নির্ভরতা কমে আসবে। পিঁয়াজ হতে পিঁয়াজ উৎপাদনে শেষ হতে হতে পূনরায় বীজ হতে পেঁয়াজ বাজারে পাওয়া যাবে। জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের তিস্তার চরাঞ্চলের কৃষক আতাউর রহামন(৪৩) জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও তিনি চরাঞ্চলে পিঁয়াজ আবাদ করেছেন। এবার একটু বেশি জমিতে প্রায় ৩বিঘা জমিতে পিঁয়াজ করেছেন। দাম বেশি পাওয়অর আশায় পেঁয়াজ করেছেন। গত বছর এক বিঘা জমিতে পিঁয়াজ চাষ করে ছিলেন। গত বছর পেঁয়াজ চাষ করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এবার সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তবে এও আশস্কা করছেন যে, তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজ বাজারের উঠার সময় ভারত হতে পিঁয়াজ আমদানী করলে দাম পাবেন না। তখন উৎপাদন খরচ উঠবেনা। এবছর চরাঞ্চলের জমিতে পলি পড়ায় জমির উবর্রতা বৃদ্ধি পায় আর পিঁয়াজের ফলনও ভাল হয়। এক বিঘা জমিতে পিয়াঁজ চাষে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। প্রতি বিঘায় ৩০ মন থেকে ৩৫ মন পর্যন্ত পেয়াঁজ উৎপাদন হয়ে থাকে। যদি পাতা পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারি তাহলে এক বিঘা জমির পেঁয়াজ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি সম্ভব। তিস্তা চরের অধিকাংশ কৃষক অধিক মুনাফা লাভের আশায় প্রতিবছর পেঁয়াজ চাষ করে থাকেন। আদিতমারী উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এম,এম জামান শাহীন জানান, চরাঞ্চলের জমি পেঁয়াজ চাষের উপযোগী ও ফলনও ভাল হয়ে থাকে। এবছর এখানকার কৃষকরা পিঁয়াজ চাষে লাভবান হবেন। লালমনিরহাট কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক বিধূ ভুষণ রায় জানান, এবছর লালমনিরহাট জেলায় ৫শত হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ থেকে পেঁয়াজ উৎপাদন হবে প্রায় ৪ হাজার ৯শত ৫৩ মেঃটন। এ জেলায় পেঁয়াজ হতে পেঁয়াজ আবাদ হয় শতকরা ৬৫ভাগ। বীজ হতে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় শতকরা ৩৫ ভাগ। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন পাতা পেঁয়াজ বাজারে উঠবে। নতুন পেয়াঁজ বাজারে এলেই দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে বলে তিনি আশা করছেন।
×