ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বলিভিয়ায় কোকা চাষী-নিরাপত্তা বাহিনী দাঙ্গায় নিহত ৯

প্রকাশিত: ০১:১৩, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

বলিভিয়ায় কোকা চাষী-নিরাপত্তা বাহিনী দাঙ্গায় নিহত ৯

অনলাইন ডেস্ক ॥ বলিভিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসের সমর্থক কোকা চাষীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে নয় জন নিহত হয়েছেন। সহিংসতা বাড়তে থাকায় বলিভিয়ার পরিস্থিতি ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে’ বলে শনিবার সতর্ক করেছে জাতিসংঘ, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ২০ অক্টোবরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কারচুপির অভিযোগ আসার পর সামরিক বাহিনী ও পুলিশের চাপের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন বামপন্থি প্রেসিডেন্ট মোরালেস। পদত্যাগের দুই দিন পর রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে মোক্সিকোতে চলে যান তিনি। যাওয়ার আগে ‘ডানপন্থিদের ক্যুয়ের শিকার হয়েছেন’ বলে অভিযোগ করে ‘অন্ধকারের শক্তিকে’ প্রতিহত করার জন্য নিজের সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানান ক্যারিশমাটিক নেতা ও সাবেক কোকা চাষী মোরালেস। বলিভিয়ায় নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধির খবর পাওয়ার পর এক টুইটে তিনি বলেন, “গণতন্ত্র দাবি করায় ক্যুয়ের নেতারা আদিবাসী ও নিরীহ লোকদের নির্বিচারে হত্যা করছে।” এদিকে বিদেশে বসে দেশে সহিংসতা উস্কে দেওয়ার জন্য মোরালেসের নিন্দা করেছেন বলিভিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রক্ষণশীল সিনেটর জিনাইন আনেজ। তার সরকার নির্বাচন আয়োজনে আগ্রহী এবং প্রতিবাদ থামাতে বিরোধীদলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছে বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু সহিংসতা বাড়তে থাকলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল বাচেলেত। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “কর্তৃপক্ষ মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা নিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে না পারলে বলিভিয়ার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে উদ্বেগ জানাচ্ছি আমি।” বলিভিয়ার কোচাবামবা নগরের ন্যায়পাল নেলসন কক্স জানিয়েছেন, কোকা চাষের অঞ্চলের হাসপাতালগুলোর রেকর্ডে দেখা গেছে শুক্রবার যারা হতাহত হয়েছেন তাদের অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। “ময়নাতদন্ত করার জন্য ও হতাহতের ঘটনার বিচার চাইতে জাতীয় ন্যায়পালের দপ্তরের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি আমরা,” রয়টার্সকে বলেছেন তিনি। দাঙ্গার ঘটনাগুলোতে আরও শতাধিক লোক আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। কয়েকটি প্রতিবাদের ঘটনায় কোকা চাষীদের কাছেও অস্ত্র ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের কাছে পিস্তল, বাক্স ভর্তি গ্রেনেড ও ঘরে তৈরি পাইপগান ছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ। জাতিসংঘের দূত জ্যঁ আহনু জানিয়েছেন, সহিংসতা বন্ধ ও ‘অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন’ নিয়ে চাপ সৃষ্টি করতে রাজনীতিবিদ ও সামাজিক গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে রবিবার বৈঠক করবে জাতিসংঘের একটি দল। দক্ষিণ আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশে চলা অস্থিরতার সঙ্গে এবার বলিভিয়ার অস্থিরতাও যোগ হয়েছে। বলিভিয়ার প্রতিবেশী চিলিতে অসাম্যের বিরুদ্ধে কয়েক মাস ধরে চলা অস্থিরতায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। ইকুয়াদোর, ভেনেজুয়েলা ও আর্জেন্টিনায়ও কয়েক মাস ধরে ব্যাপক ধর্মঘট, প্রতিবাদ ও দাঙ্গা হয়েছে।
×