ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খাদ্য অধিদফতরসহ সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি কমেছে ॥ খাদ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১:২৯, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

খাদ্য অধিদফতরসহ সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি কমেছে ॥ খাদ্যমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, খাদ্য অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতি অনেকাংশে কমে এসেছে। এটিকে আরও কমিয়ে আনতে হবে। আমি এই সেক্টরকে সম্পূর্ণ দুর্নীতি মুক্ত দেখতে চাই। এ ব্যাপারে আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। তিনি বলেন, সকলে মনে রাখবেন, এখন থেকে কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পেলে বিধি মোতাবেক তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে। শনিবার সকালে ঢাকার কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে খাদ্য অধিদফতর কর্তৃক আয়োজিত খাদ্য অধিদফতরের মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীর সঙ্গে ‘‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়ন’ সম্পর্কিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। আত্মশুদ্ধি করে নিজকে তৈরি করব, নিজেরা দুর্নীতিমুক্ত হব, অন্যকে দুর্নীতিমুক্ত করব এবং এই খাদ্য অধিদফতরকে দুর্নীতিমুক্ত একটি আলোকিত অধিদফতরে পরিণত করব অঙ্গীকার ব্যক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সরকারের শুদ্ধাচার অভিযানে এই প্রথম কোন মন্ত্রণালয় তাদের মাঠ প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাকে নিয়ে এই বিষয়ে আলোচনা করল। দেশের সকল খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি), জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি ফুড), আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি ফুড) ও খাদ্য অধিদফতরের সকল কর্মকর্তাকে নিয়ে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এই খাদ্য অধিদফতর ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে মানুষের মধ্যে বিরূপ ধারণা আছে। ইতোমধ্যে তা পাল্টাতে শুরু করেছে। আমি নিজে দেশের বিভিন্ন খাদ্যগুদাম পর্যবেক্ষণে যাচ্ছি। খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসিএলএসডি) উদ্দেশে তিনি বলেন, খাদ্যগুদামগুলো নিয়ে মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। আপনারা সতর্ক হয়ে যান। কোথাও কোন অনিয়মের প্রমাণ পেলে ছাড় পাবেন না। বিধি মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে। আগে যা করেছেন তা করেছেন, এখন আর তা করতে যাবেন না। অনিয়ম, দুর্নীতি করলে ধরা পড়বেন। আর ধরা পড়লে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিয়ম মেনে চাকরি করবেন। ভাল থাকবেন। কে কোন্ রাজনীতি করেন সেটি বিবেচ্য বিষয় নয়। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশ আছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অপরাধীর একটাই পরিচয়, সে অপরাধী। এই বিষয়টি সকলে মনে রাখবেন। মন্ত্রী বলেন, যিনি লোভ-লালসার উর্ধে উঠে নীতি-নৈতিকতা এবং সততার সঙ্গে তার কাজ চালিয়ে যান তিনিই প্রকৃত সুখে আছেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দুর্নীতিকে কোনভাবেই প্রশ্রয় দেবেন না। দুর্নীতির বিষয়ে বর্তমান সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও সকলকে শুদ্ধাচারী কর্মচারী হিসেবে দেখতে চান। এই শুদ্ধাচার কৌশলের মধ্যে সকল শ্রেণীর মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে কাক্সিক্ষত সফলতা অর্জন করা আরও সহজ হবে। সভায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরার প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছি। বর্তমানে যে সকল মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা, ওসিএলএসডি, খাদ্য পরিদর্শক ভাল কাজ করবেন তাদের দেশে এবং বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সামনে আমন সংগ্রহের মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সকলের সহযোগিতা পেলে আমরা নির্বিঘেœ এই আমন সংগ্রহ সফলভাবে সমাপ্ত করতে পারব। এখন থেকে শপথ নেন আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ করে, পরিবর্তন করে, এই খাদ্য অধিদফতরকে দুর্নীতিমুক্ত, আলোকিত একটি অধিদফতরে পরিণত করার। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, কিছু ভুলভ্রান্তি এবং সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বর্তমান সরকারের সময়ে বিশেষ করে বর্তমান খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর খাদ্য বিভাগে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ভবিষ্যতেও এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে নিজেকে এই শুদ্ধাচারের মাধ্যমে পরিবর্তন করে। সভায় উপস্থিত জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমদ বলেন, সর্বপ্রথম নিজেকে শুদ্ধাচারী হতে হবে। দায়িত্বটি পালন করার ক্ষেত্রে নিজেকে সৎ হতে হবে, নীতিবান হতে হবে। তিনি বলেন, আপনি আপনার কর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন। করুন, তাহলে আপনার উর্ধতন কর্তৃপক্ষও আপনাকে সঠিক মূল্যায়ন করবে। খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ওমর ফারুক, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং খাদ্য অধিদফতরের মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
×