ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুরান ঢাকাবাসীর জন্য বিশ্বমানের ১২ মাঠ তৈরি হচ্ছে

প্রকাশিত: ১১:২৭, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

পুরান ঢাকাবাসীর জন্য বিশ্বমানের ১২ মাঠ তৈরি হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আগামী নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেলে চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন সংস্থাটির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। একইসঙ্গে রাজধানীর পুরান ঢাকাবাসীর জন্য খেলাধুলা ও হাঁটাসহ সকল প্রকার বিনোদনের জন্য বিশ্বমানের ১২ আধুনিক খেলার মাঠ তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। শনিবার বিকেলে ডিএসসিসির জল সবুজে ঢাকা প্রকল্পের আওতায় ২৬নং ওয়ার্ডসহ লালবাগ এলাকায় শহীদ হাজী আবদুল আলীম খেলার মাঠ উদ্বোধনকালে মেয়র এসব কথা বলেন। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত, সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ ইমদাদুল হক, প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম, স্থপতি রফিক আজমসহ সকল উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিকসহ প্রায় ২৫-৩০ জন কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলরগণসহ গণ্যমান্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। মেয়র বলেন, আগামী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমি দলীয় মনোনয়ন পেলে যেসব উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনা করেছি তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করব। আমরা ঢাকাকে একটি নতুন আধুনিক ও মানসম্মত বাসযোগ্য করতে যা প্রয়োজন তাই করব। এজন্য তিনি সকল শ্রেণীর নাগরিকের সহায়তা কামনা করেন। তিনি বলেন, এক সময় পুরো ঢাকার রাস্তায় কোন বাতি ছিল না রাস্তাগুলো ছিল অত্যন্ত ভাঙ্গা। বর্তমানে নগরীর প্রতিটি অলিগলি আজ সাদা আলোয় আলোকিত। প্রতিটি রাস্তায় নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। আজিমপুর কবরস্থানে এক সময় জানাজা সম্পন্ন করা যেত না এখন নির্বিঘেœ তা করা সম্ভব হয়েছে। রসুলবাগে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে ডুবে যেত বর্তমানে তা পানি অভিশাপ নয় তা এলাকার মানুষের জন্য বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এসব প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে। তিনি বলেন, এই দক্ষিণ সিটির সর্বসাকুল্যে আয় মাত্র ৪শত কোটি টাকা। যা দিয়ে কোনমতেই উন্নয়ন করা সম্ভব হয় না। এই দক্ষিণ সিটির উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যখন যা চেয়েছি তাই পেয়েছি। এ সকল উন্নয়নের মূল কারিগর শেখ হাসিনা। মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, এক সময় এই খেলার মাঠটি একটি ডোবা ছিল। পরে প্রয়াত মেয়র হানিফের সময় এটিকে উন্নত করে মাঠে রূপান্তর করা হলেও তা বেদখল হয়ে নানা অসামাজিক কার্যকলাপ, ভবঘুরে ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের আখড়ায় পরিণত হয়। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর এটিকে বিশ্বমানের আধুনিক মাঠে রূপান্তরের প্রকল্প হাতে নিয়েছি। যার ফল আজকের এই মাঠ। আমরা এ মাঠটিকে আন্তর্জাতিকমানের একটি মাঠ হিসেবে উপহার দিতে পেরেছি। এ মাঠে খেলার পাশপাশি হাঁটার ব্যবস্থা, চা কফি পানের জন্য ক্যাফে, ব্যায়ামের জন্য জিম বা শরীরচর্চার ব্যবস্থা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং পদ্ধতিতে এ মাঠে হাঁটার রাস্তার নিচে ৫ লাখ লিটার পানি জমা করে রাখা হয়েছে। র্ফিটা করার পর এই এলাকার মানুষও এই পানি পান করতে পারবেন। মেয়র বলেন, আমরা ডিএসসিসি এলাকার ৩১টি পার্ক ও খেলার মাঠকে দখলমুক্ত করে বিশ্বমানের আদলে গড়ে তোলার লক্ষ্যে জল সবুজে ঢাকা প্রকল্প গ্রহণ করি। সে প্রকল্পের অংশ হিসেবেই বিশ্বমানের করে উন্নয়নকৃত এ খেলার মাঠের আজ (শনিবার) উদ্বোধন করা হলো। একইসঙ্গে অন্যান্য পার্ক ও খেলার মাঠগুলোও দ্রুত উদ্বোধন করে এলাকাবাসীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। মেয়র বলেন, বর্তমানে ঢাকা উন্নয়নের স্র্রোতে বদলে যাওয়া এক নগরী। ঢাকা বদলেছে তাই এ প্রিয় ঢাকাকে আধুনিক নগরীতে পরিণত করতে আরও নতুন শহর হিসেবে সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেলে অসমাপ্ত উন্নয়ন কর্মকা-গুলোকে শেষ করতে চাই। এদিকে খেলার মাঠ উদ্বোধনের নামফলকে নিজের নাম না থাকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিকের গায়ে হাত তুলেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিম এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে এসে নামফলকে নিজের নাম না দেখতে পেয়ে রেগে যান হাজী সেলিম। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে হাজী সেলিমের সমর্থকগণ ও কাউন্সিলর মানিকের সমর্থিত লোকদের মধ্যে ব্যাপক হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে কাউন্সিলর মানিক সাংবাদিকদের বলেন, আমি কোনু অনুষ্ঠানে এমপিদের নাম দেই না। আমার অভিভাবক হিসেবে মেয়রের নাম থাকে, বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম থাকে। আমার যদি কোন ভুল হয়ে থাকে উনি আমাকে ডেকে বলতে পারতেন। কিন্তু, তা না করে অনেক মানুষের সামনে আমার গায়ে হাত তুলেছেন। আমি তো এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।
×