ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

‘লোন উলফ’ হামলার পরিকল্পনা ॥ ৬ জঙ্গী আটক

প্রকাশিত: ১১:২৬, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

‘লোন উলফ’ হামলার পরিকল্পনা ॥ ৬ জঙ্গী আটক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জঙ্গীবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে র‌্যাবের হাতে ঢাকা, গাজীপুর ও সাতক্ষীরা থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলামের ছয় সদস্য গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা বড় ধরনের হামলা চালাতে একত্রিত হওয়ার চেষ্টা করছিল। এছাড়া একাধিক হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। প্রশিক্ষিত জঙ্গীদের দিয়ে লোন উলফ (একাকী) হামলার পরিকল্পনা ছিল তাদের। সুনিশ্চিতভাবে কাউকে বা কোন অনুষ্ঠানে বহু মানুষকে হত্যা করতে এ ধরনের পদ্ধতিতে হামলা হয়ে থাকে। এ ধরনের হামলা মূলত আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আইএসের প্রশিক্ষিত জঙ্গীরা করে থাকে। আনসার আল ইসলাম আইএসকে অনুসরণ করে থাকে। এজন্য আইএসের আদলে তাদের হামলার পরিকল্পনা ছিল। শনিবার দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ মোজাম্মেল হক। তিনি আরও জানান, শুক্রবার রাতে রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুর ও সাতক্ষীরার শ্যামনগর এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে আনসার আল ইসলামের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৪। তাদের কাছ থেকে বিপুল উগ্রবাদী বই, মোবাইল, ল্যাপটপ ও জঙ্গীবাদী ট্রেনিংসহ বিভিন্ন কনটেন্ট জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে শফিকুল ইসলাম ওরফে সাগর ওরফে সালমান মুক্তাদির (২১), ইলিয়াস হাওলদার ওরফে ছাত্তার (৩২), ইকরামুল ইসলাম ওরফে আমীর হামজা (২১), আমীর হোসাইন ওরফে তাওহীদি জনতার আর্তনাদ (২৬), শিপন মীর ওরফে আবদুর রব (৩৩) ও ওয়ালিউল্লাহ ওরফে আবদুর রহমান (২৫)। র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক আরও জানান, একাকী হামলার ‘লোন উলফ’ পরিকল্পনা মোতাবেক রাজধানীর উত্তরা এলাকায় আনসার-আল ইসলামের কয়েকজন একসঙ্গে মিলিত হয়। তবে বাস্তবায়নের আগেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায় র‌্যাবের অভিযানে। জঙ্গীরা গোপন এ্যাপস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে। সে বিষয়টি র‌্যাব জানতে পারে ও মনিটরিং করতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় অভিযান চালিয়ে ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়। জঙ্গী সংগঠনটির সদস্যরা সাধারণত বড় ধরনের কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া কখনও একত্রিত হয় না। নিজেদের মধ্যে পরিচিত না হয়েই তারা কাট আউট পদ্ধতিতে চলাচল করে। সাংগঠনিক কার্যক্রমও চালায় এ্যাপস ব্যবহার করে। গ্রেফতারকৃতরা সবাই দুই থেকে পাঁচ বছর ধরে জঙ্গী সংগঠনটির সঙ্গে জড়িত। তারা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বিপক্ষে। তারা যে কোন মূল্যে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বলে তারা মনে করে, তাদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করে তারা। অতীতের ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আনসার আল ইসলামের সদস্যরা টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় না। তারা এক্ষেত্রে সাধারণত চাপাতি ব্যবহার করে থাকে। আনসার আল ইসলাম বর্তমানে মূলত দুই ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রথমত, মোটিভেশনাল কার্যক্রমের মাধ্যমে সদস্য বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দ্বিতীয়ত, তারা মনে করে যারা তাদের জন্য বাধা তাদের সবাইকে হত্যা করলে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। তবে যারা সরাসরি ইসলামী রাজনীতির বিরোধিতা করে, নাস্তিক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় সংগঠনের সদস্যরা।
×