ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বোয়ালমারীতে আ’লীগের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা বাড়িঘর ভাংচুর: আটক ৬

প্রকাশিত: ০৯:৫৩, ১৬ নভেম্বর ২০১৯

বোয়ালমারীতে আ’লীগের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা বাড়িঘর ভাংচুর: আটক ৬

সংবাদদাতা, বোয়ালমারী, ফরিদপুর ॥ ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের বনচাকী গ্রামে দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পাল্টাপল্টি হামলায় কমপক্ষে ৩০ টি বাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১৫.১১.১৯) বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দফায় দফায় হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই পক্ষকে ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৬জনকে আটক করা হয়। এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চতুল ইউনিয়নের বনচাকী গ্রামের ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ও উপজেলা আ’লীগের সদস্য মো. জালাল সিকদার ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান শেখের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ৭/৮দিন আগে বনচাকী মাদ্রাসার শিক্ষক নুর আলমকে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে রহমান মৃধার লোকজন মারধর করে। এ ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার ইউপি সদস্য জালাল সিকদারের সমর্থক বনচাকী গ্রামের শাকিল মিয়া (২০), সাদ্দাম সিকদার (২৬), মিজানুর রহমান (২৬), নুরু মোল্যা (৪০), শহিদুল (২৪) আব্দুর রহমান শেখের সমর্থক ওই গ্রামের শাকিল (১৮), শহিদুল (২৫) ও রাসেল বিশ্বাসকে (২৬) বড়গা বাজার থেকে ফেরার সময় রামদা নিয়ে ধাওয়া করে। এরই রেশ ধরে শুক্রবার দুপুরে ইউপি সদস্য জালাল সিকদারের সমর্থকরা রহমান শেখের সমর্থক সফর মৃধা ও মিলন মৃধাকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। বর্তমানে তারা বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয় গ্রুপের মধ্যে রাত ৯টা পর্যন্ত ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। এতে দুই পক্ষের প্রায় ৩০টি বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ চতুল গ্রামের মিজানুর রহমান (২০), বাইখির গ্রামের হামিদুল খান (২১), মনোয়ার (২০), হাসমতউল্লাহ (৩৮), বনচাকী গ্রামের জিন্নাত শেখ (৪৯) ও সাকি মিয়াকে (২৪) আটক করে। এ ঘটনায় জালাল সিকদারের সমর্থক বনচাকী গ্রামের সহিদুল সিকদারের স্ত্রী শাহরন বেগম বাদি হয়ে শুক্রবার রাতেই চতুল ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের একাংশের আহবায়ক শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটুকে (৪৫) প্রধান আসামিসহ ৯জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। মামলা নম্বর ১০। তারিখ ১৫.১১.১৯ ইং। এ ব্যাপারে আব্দুর রহমান শেখ বলেন, জালাল সিকদারের লোকজন আমার দুই সমর্থককে কুপিয়ে জখম করে। এখবর ছড়িয়ে পড়লে উভয় গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আমি ঢাকায় থাকলেও এ ঘটনায় আমাকে মিথ্যা আসামি করা হয়েছে। জালাল সিকদার মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। চতুল ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের একাংশের আহবায়ক শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটু বলেন, ওই এলাকার হামলার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমি হামলার খবর পেয়ে রহমান শেখ ও জালাল সিকদারকে বারবার ফোন করে মারামারি করতে নিষেধ করেছি। প্রশাসনের সাথে অনেকবার যোগাযোগ করেছি যাতে কোন রকম হামলা বা সংঘর্ষ না হয়। আমাকে রাজনৈতিক ভাবে ষড়যন্ত্র করে আসামি করা হয়েছে। থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আমিনুর রহমান বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। রাত থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে ওই এলাকায়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আটকৃতদের শনিবার ফরিদপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
×