ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আগামী নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেলে চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখা হবে- সাঈদ খোকন

প্রকাশিত: ০৮:০০, ১৬ নভেম্বর ২০১৯

আগামী নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেলে চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখা হবে- সাঈদ খোকন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আগামী নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেলে চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখার ঘোষনা দিয়েছেন সংস্থাটির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। একইসাথে রাজধানীর পুরাণ ঢাকাবাসীর জন্য খেলাধুলা ও হাটাসহ সকল প্রকার বিনোদনের জন্য ১২ টি বিশ্বমানের আধুনিক খেলার মাঠ তৈরী করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। শনিবার বিকেলে ডিএসসিসির জল সবুজে ঢাকা প্রকল্পের আওতায় ২৬ নং ওয়ার্ডসহ লালবাগ এলাকায় উন্নয়নকৃত শহীদ হাজী আবদুল আলীম খেলার মাঠের উদ্বোধনকালে মেয়র এসব কথা বলেন। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল হাসানাত, সংস্থাটির প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা শাহ ইমদাদুল হক,প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম, স্থপতি রফিক আজমসহ সকল উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিকসহ প্রায় ২৫-৩০ জন কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলরগণসহ গন্যমান্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। মেয়র বলেন, আগামী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমি দলীয় মনোনয়ন পেলে যেসব উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করেছি তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করবো। আমরা ঢাকাকে একটি নতুন আধুনিক ও মানসম্মত বাসযোগ্য করতে যা প্রয়োজন তাই করবো। এজন্য তিনি সকল শ্রেনীর নাগরিককের সহায়তা কামনা করেন। তিনি বলেন, একসময় পুরো ঢাকার রাস্তায় কোন বাতি ছিলো না রাস্তাগুলো ছিলো অত্যন্ত ভাঙ্গা। বর্তমানে নগরীর প্রতিটি অলিগলি আজ সাদা আলোয় আলোকিত। প্রতিটি রাস্তায় নতুন করে তৈরী করা হয়েছে। আজিমপুর কবরস্থানে এক সময় জানাযা সম্পন্ন করা যেতো না এখন নির্বিঘেœ তা করা সম্ভব হয়েছে। রসুলবাগে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে ডুবে যেতো বর্তমানে তা পানি অভিশাপ নয় তা এলাকার মানুষের জন্য বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এসব প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে। তিনি বলেন, এই দক্ষিণ সিটির সর্বসাকুল্যে আয় মাত্র ৪ শত কোটি টাকা। য্ াদিয়ে কোনমতেই উন্নয়ন করা সম্ভব হয় না। এই দক্ষিণ সিটির উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যখন যা চেয়েিেছ তাই পেয়েছি। এসকল উন্নয়নের মূল কারিগর শেখ হাসিনা। মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, এক সময় এই খেলারমাঠটি একটি ডেবো ছিলো। পরে প্রয়াত মেয়র হানিয়ের সময় এটিকে উন্নত করে মাঠে রুপান্তর করা হলেও তা বেদখল হয়ে নানা অসামাজিক কার্যকলাপ, ভবঘুরে ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের আখড়ায় পরিনত হয়। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর এটিকে বিশ্বমানের আধুনিক মাঠে রুপান্তরের প্রকল্প হাতে নিয়েছি। যার ফল আজকের এই মাঠ। আমরা এ মাঠটিকে অঅন্তর্জাতিকমানের একটি মাঠ হিসেবে উপহার দিতে পেরেছি। এ মাঠে খেলার পাশপাশি হাটার ব্যবস্থা, চা কফি পানের জন্য ক্যাফে, ব্যায়ামের জন্য জিম বা শরীরচর্চার ব্যবস্থা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষনের জন্য রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং পদ্ধতিতে এ মাঠের হাটার রাস্তার নীচে ৫ লক্ষ লিটার পানি জমা করে রাখা হয়েছে। র্ফিটা করার পর এই এলাকার মানুষও এই পানি পান করতে পারবেন। মেয়র বলেন, আমরা ডিএসসিসি এলাকার ৩১ টি পার্ক ও খেলার মাঠকে দখলমুক্ত করে বিশ্বমানের আদলে গড়ে তোলার লক্ষ্যে জল সবুজে ঢাকা প্রকল্প গ্রহণ করি। সে প্রকল্পের অংশ হিসেবেই বিশ্বমানের করে উন্নয়নকৃত এ খেলার মাঠের আজ (শনিবার) উদ্বোধন করা হল। একইসাথে অন্যান্য পার্ক ও খেলার মাঠগুলিও দ্রুত উদ্বোধন করে এলাকাবাসীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। মেয়র বলেন, বর্তমানে ঢাকা উন্নয়নের ¯্রােতে বদলে যাওয়া এক নগরী। ঢাকা বদলেছে তাই এ প্রিয় ঢাকাকে আধুনিক নগরীতেদ পরিণত করতে আরো নতুন শহর হিসেবে সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেলে অসমাপ্ত উন্নয়ন কর্মকান্ডগুলোকে শেষ করতে চাই। এদিকে খেলার মাঠ উদ্বোধনের নামফলকে নিজের নাম না থাকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিকের গায়ে হাত তুলেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজি সেলিম এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে এসে নামফলকে নিজের নাম না দেখতে পেয়ে রেগে যান হাজি সেলিম।অনুষ্ঠান শুরুর আগেই এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে হাজী সেলিমের সমর্থকগণ ও কাউন্সিলর মানিকের সমর্থিত লোকদের মধ্যে ব্যাপক হট্টগোলেল সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে কাউন্সিলর মানিক সাংবাদিকদের বলেন, আমি কোনো অনুষ্ঠানে এমপিদের নাম দেই না। আমার অভিভাবক হিসেবে মেয়রের নাম থাকে, বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম থাকে। আমার যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে উনি আমাকে ডেকে বলতে পারতেন। কিন্তু,তা না করে অনেক মানুষের সামনে আমার গায়ে হাত তুলেছেন। আমি তো এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা জানান, শহীদ হাজি আব্দুল আলিম খেলার মাঠ উদ্বোধনের ফলকে স্থানীয় সংসদ হিসেবে হাজি সেলিম তার নাম দাবি করেন। কিন্তু, নাম না থাকায় হাজি সেলিমের সমর্থক ও কাউন্সিলর মানিকের লোকজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে হাজি সেলিম মানিকের গায়ে হাত তোলেন। তবে হাজী সেলিমের সমর্থকদের ভাষ্যমতে, একজন স্থানীয় এমপির নাম নামফলকে ইচ্ছে করেই কাউন্সিলর দেননি যা তিনি কোনক্রমেই করতে পারেন না। এদিকে কাউন্সিলর মানিককে অনুষ্ঠানস্থলে কাঁদতে দেখা যায়। পরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় মেয়র সাঈদ খোকনের উপস্থিতিতে হাজী সেলিম এমপি নিজে কাউন্সিলর মানিককে জড়িয়ে ধরেন ও উভয়ের মাঝে মেয়র সমঝোতা করে ভুল বুঝাবুঝির অবসান ঘটান। প্রকল্প সুত্র জানায়, ৭৫ কাঠা জায়গা নিয়ে আট কোটির অধিক অর্থ ব্যয় করে এ খেলার মাঠে ফুটবল খেলার মাঠ, ক্রিকেট খেলার নেট প্রাকটিস, সকাল সন্ধ্যা হাঁটার জন্য ওয়াকওয়ে, হাটা ও বসার জন্য উন্মুক্ত জায়গা, শিশুদের খেলার জন্য পৃথক স্থান, জিমনেশিয়াম, ক্যাফেটোরিয়া,কফিশপ, লাইব্রেরী,বিভিন্ন প্রকার ফল ও প্রজাপতি আকৃষ্টকারী ফুলের গাছ,সিসিটিভি ক্যামেরা, ফ্রি ওয়াইফাই, আধুনিক টয়লেট, ওয়াটার ফিল্টার, মেহরাবসহ ঈদের নামাজ আদায়ের স্থান ইত্যাদি সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
×