ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীতে স্কুলছাত্রকে কুপিয়ে হত্যার নেপথ্যে প্রেমে বাধা

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ১৬ নভেম্বর ২০১৯

 রাজশাহীতে স্কুলছাত্রকে কুপিয়ে হত্যার নেপথ্যে প্রেমে বাধা

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীতে কলেজছাত্র আব্দুল্লাহ আল ফাহিম (১৯) হত্যাকান্ডের নেপথ্যে প্রেমের চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। প্রেমিকার সঙ্গে বসে গল্প করার সময় বিরক্ত করায় ছুরি দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। বুধবার রাজশাহী নগরীর পবা নতুনপাড়া এলাকায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় দুই প্রেমিককে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন ফাহিমের বাবা। এ মামলায় দুই প্রেমিককে আসামি করা হয়েছে আর সাক্ষী করা হয়েছে তাদের দুই প্রেমিকাকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথমে ফেসবুকে পরিচয়। তারপর দুই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে জমে ওঠে দুই বখাটের প্রেম। সেদিন (বুধবার) প্রেমিকরা তাদের প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ছুরি নিয়ে। বসে গল্প করার সময় ‘বিরক্ত’ করায় ছুরি মেরে খুন করা হয় কলেজছাত্র ফাহিমকে। পুলিশ জানায়, বুধবার বিকেলে রাজশাহী মহানগরীর পবা নতুনপাড়া এলাকায় এই খুনের ঘটনা ঘটে। নিহত কলেজছাত্রের নাম আব্দুল্লাহ আল ফাহিম। সে ওই এলাকার গোলাম হাসানের ছেলে। ফাহিম রাজশাহীর শহীদ বুদ্ধিজীবী সরকারী কলেজে একাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনা করত। ছেলে খুনের ঘটনায় গোলাম হাসান মামলা করেছেন। মামলায় দুই প্রেমিককে আসামি করা হয়েছে। তারা হলো- রাজশাহী মহানগরীর ভাটাপাড়া এলাকার বাসিন্দা বশির আলমের ছেলে আজমীর হাসান (২২) এবং আবুল হোসেনের ছেলে রাকিব হাসান ওরফে আবির (১৯)। এদের মধ্যে আবিরের বাবা রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) সদর দফতরে কর্মরত একজন অফিস সহকারী। আবিরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পরের দিন বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারেও পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আবির ও আজমীর বুধবার বিকেলে পবা নতুনপাড়া এলাকায় তাদের নিজ নিজ প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যান। তারা প্রেমিকাদের সঙ্গে বসে ছিলেন। তখন এলাকার ছেলে ফাহিম, যুবরাজ ও সৈকত গিয়ে তাদের বলেন, এই এলাকায় এভাবে বসে থাকা যাবে না। এতে ‘বিরক্ত’ হয়ে আজমীর ও আবির তাদের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে ছুরি বের করে আক্রমণ করা হয়। এতে ফাহিম ও যুবরাজ আহত হন। প্রাণভয়ে পালিয়ে যান সৈকত। এরপর প্রেমিকাদের নিয়ে পালিয়ে যায় আজমীর ও আবির। পরে স্থানীয় লোকজন ছুরিকাঘাতে আহত দুইজনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাহিমের মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে শনাক্ত করা হয় অভিযুক্তদেরও। এ ঘটনায় জড়িত আবিরকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শাহ মখদুম থানায় আনা হয় দুই প্রেমিকাকেও। এরা দুজন পরস্পরের বান্ধবী। দুজনেই পড়াশোনা করে নবম শ্রেণীতে। তাদের বাড়ি নগরীর নওদাপাড়া এলাকায়। থানায় এ দুই স্কুলছাত্রী জানায়, একমাস আগে আবিরের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের একজনের পরিচয় হয়। তারপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা দুজন দেখা করে। তখন মেয়েটির ওই বান্ধবীও সঙ্গে যায়। আবিরের সঙ্গেও আসেন আজমীর। এদের দুজনেরও সম্পর্ক তৈরি হয়। তারপর থেকেই তারা চারজন মাঝে মাঝে নগরীর বিভিন্ন স্থানে দেখা করত। পুলিশ জানিয়েছে, আজমীর এবং আবির নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে বাদ দিয়েছেন। তারা বখাটে। আজমীর বিবাহিত।
×