ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে জীর্ণশীর্ণ মসজিদ ॥ লাখ লাখ টাকা আত্মসাত

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ১৬ নভেম্বর ২০১৯

 কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে  জীর্ণশীর্ণ মসজিদ ॥  লাখ লাখ টাকা  আত্মসাত

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম, ১৫ নবেম্বর ॥ বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় ছনুয়া ইউনিয়নে অবস্থিত প্রায় ২শ’ বছরের প্রাচীনতম কাতেবী মসজিদ। এই মসজিদের নামে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকার অনুদান ও বিপুল সম্পদ থাকলেও মসজিদটি পড়ে আছে অযতœ অবহেলায়। প্রায় ৫০ বছর পূর্বের সংস্কার করা দেয়াল ও ছাদের আস্তর খসে পড়ে জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়েছে মসজিদটি। স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধভাবে পরিচালনা কমিটি দেখিয়ে জনৈক কলিম উল্লাহ ও তার সহযোগীরা মসজিদের দান বাক্সের টাকা লুটসহ লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করে চলছে। গত মঙ্গলবার রাতে মসজিদের দানবাক্সের টাকা লুট করতে গিয়ে জনগণের সঙ্গে কলিম উল্লাহ ও তার সহযোগীদের ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বর্তমানে মসজিদের দখল বেদখল নিয়ে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় জনগণ অবিলম্বে মসজিদের অর্থ সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও মসজিদটি সংস্কার করতে দাবি জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সরজমিনে ছনুয়া কাতেবী মসজিদ পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, সংস্কারহীনতার ফলে মসজিদের বাইরের দেয়ালের আস্তর খসে পড়ছে। ভেতরের অবস্থা আরও নাজুক। ছাদের আস্তরণগুলো ঝরে পড়তে শুরু করেছে। এছাড়াও অনেকাংশে দেখা দিয়েছে ফাটল। মসজিদের একমাত্র পুকুর ঘাটটিও বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ২শ’ বছর পূর্বে আবদুল করিম কাতেব শাহ নামে জনৈক এক ব্যক্তি এই মসজিদ মাটি দিয়ে নির্মাণ করেছিলেন। মসজিদের মূলফটকে লেখা আছে স্থাপিত সন ১২২৪ বাংলা; যা ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দের সঙ্গে মিলে যায়। পরবর্তীতে ১৩৭৬ বাংলা অর্থাৎ ১৯৬৯ সালে এলাকাবাসী মসজিদটি পুনঃসংস্কার করে পাকাকরণ করেন। সেই থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত মসজিদটির কোন সংস্কার কাজ না হওয়ায় মসজিদটি বিভিন্ন অংশ জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে আছে। অভিযোগ রয়েছে, একটি সিন্ডিকেটের সদস্যরা অবৈধভাবে কমিটি গঠন করে এই অনুদানের অর্থ হাতিয়ে নিলেও এই পর্যন্ত মসজিদটি সংস্কারের জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি তারা। এই নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও ওই কমিটির মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব শুরু হয়। এদিকে গত মঙ্গলবার রাতে মসজিদের যাওয়ার সড়কের পাশে স্থিত ওই মসজিদটির দানবাক্স থেকে সন্ত্রাসী কায়দায় অনুদানের টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা আবদুল করিম কাতেবীর বংশোধর আজিজ কাতেবী ও নাজিম উদ্দিন কাতেবী জানান, স্থানীয় এলাকাবাসী ও আমাদের বাদ দিয়ে মসজিদের নামে একটি অবৈধ কমিটি গঠন করেছে এলাকার বাইরের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। তারা প্রতিনিয়ত মসজিদের নামে ভক্তদের দেয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিলেও মসজিদ সংস্কারের জন্য কিছু করে না। আমরা ওই অবৈধ কমিটির জিম্মিদশা থেকে মসজিদটির পরিত্রাণ চাই এবং মসজিদটির সংস্কার কামনা করি। স্থানীয় ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, মসজিদের দানবাক্স থেকে টাকা লুটের অভিযোগ ও মসজিদের দখলদারিত্ব নিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ করেছেন।
×