স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডবের পাঁচদিন অতিবাহিত হলেও আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত জেলার অধিকাংশ উপজেলার গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতিক লাইন সচল করতে পারেনি পল্লী বিদ্যুত। ফলে কয়েক লাখ বিদ্যুত গ্রাহকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা সাধারণ গ্রাহকদের সাথে প্রতারনা করে আগে রাজনৈতিক নেতাদের বাসা বাড়ির বৈদ্যুতিক লাইনের সংযোগ দিতে দিনরাত কাজ করছেন। পাশাপাশি পূর্বের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ বৈদ্যুতিক লাইন মেরামতের জন্য বাহির থেকে অতিরিক্ত মজুরি ভিত্তিক শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা হলেও এবার আর তা না করে চরম উদাসিনতার মাধ্যমে নিজস্ব জনবল দিয়েই কাজ করছেন বিদ্যুত অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। ফলে গত পাঁচ দিনেও গ্রামাঞ্চলের বৈদ্যুতিক লাইন সচল করতে পারেনি পল্লী বিদ্যুত। অপরদিকে ঝড়ে বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর কতিপয় ব্যক্তি দ্রুত বিদ্যুত লাইনের সংযোগ এনে দেয়ার কথা বলে প্রতারনার মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সাধারণ গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, বর্তমান ডিজিটাল যুগে টানা পাঁচদিন বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ থাকায় তারা চরম দুর্ভোগে পরেছেন। মোবাইল ফোনে চার্জ দিতে না পারায় স্বজনদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। তাই তারা উপজেলার বিভিন্ন হাট ও বাজারে প্রতি ঘন্টা বিশ টাকা মূল্যে জেনারেটরের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে চার্জ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে বিদ্যুত সংযোগ না থাকায় অধিকাংশ এলাকার বিভিন্ন কোম্পানীর মোবাইল ফোনের নেটওর্য়াক বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুতচালিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চরম ধ্বস নেমেছে। বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল ব্যাটারীচালিত অটোরিকসা, ইজিবাইক ও অটোভ্যানগুলো অধিকমূল্যে জেনারেটরের মাধ্যমে চার্জ দেয়ার প্রভাব পরেছে যাত্রীদের ওপর। পূর্বের চেয়ে তিন থেকে চারগুন বেশি ভাড়া দিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।
সাধারণ গ্রাহকরা জরুরি ভিত্তিতে বাহির থেকে অতিরিক্ত মজুরি ভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগের মাধ্যমে বুলবুলের তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার বৈদ্যুতিক সংযোগ সচল করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সাধারণ গ্রাহকদের চরম উদাসিনতার অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বরিশাল পল্লী বিদ্যুত সমিতি-২ এর গৌরনদী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী জায়েদা খানম বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডবে গৌরনদীর বিভিন্ন এলাকায় কমপক্ষে অর্ধশতাধিক বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে পরেছে। এছাড়া গাছ উপরে পরে কয়েক হাজার মিটার ভেঙ্গে গেছে। ফলে টানা পাঁচদিন গ্রামাঞ্চলের গ্রাহকরা বিদ্যুত না পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এ অভিযোগ করছেন। তিনি আরও বলেন, বিদ্যুত বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা দিনরাত সমানতালে কাজ করে ইতোমধ্যে উপজেলা ও পৌরসদরসহ সাবস্টেশনগুলোতে বিদ্যুত পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। আশাকরি আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পুরো এলাকায় বিদ্যুত সংযোগ সচল করা সম্ভব হবে। বিদ্যুত সংযোগ দ্রুত সচল করার নামে কেউ টাকা চাইলে তাকে বেঁধে রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোর্পদ করার জন্য তিনি গ্রাহকদের প্রতি আহবান করেছেন।
