ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চকরিয়ায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের সম্পদ বেদখল

প্রকাশিত: ০২:৫৬, ১৪ নভেম্বর ২০১৯

চকরিয়ায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের সম্পদ বেদখল

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ চকরিয়া বানিয়ারছড়া স্টেশনে সড়ক ও জনপথ বিভাগের পুরাতন অফিসঘর ও স্টাফ কোর্য়াটার ভবন বেদখলে চলে গেছে। বেশ কিছুদিন ধরে এ দালানটি অস্থায়ী ক্যাম্প হিসেবে অনুমতি সাপেক্ষে ব্যবহার করেছে চিরিঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ। বছরতিনেক আগে হাইওয়ে পুলিশ বানিয়ারছড়া স্টেশনে নিজস্ব জমিতে স্থায়ী ভবনে চলে যায়। ওই ভবনটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়লেও পাশের রাইস মিল মালিক নুরুল আমিন চৌধুরী কৌশলে দখলে নেন। কিছুদিন পর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে পুলিশের ব্যবহৃত ওই পুরাতন ভবনটি। এখন সেখানে অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন তিনি। অনুমতি বিহীন সরকারের ওই পুরাতন দালান ভেঙ্গে বহুতল ভবণ নির্মাণ করার বিষয়কে কেন্দ্র করে কানাঘুষা চলছে চকরিয়ায়। যদিও সওজ বিভাগ চকরিয়ার কর্মকর্তা বলছেন নুরুল আমিন নামে ওই রাইচমিল মালিককে নোটিশ দেয়া হয়েছে। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলছেন সওজ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে কোটি টাকা মূল্যের এ সম্পদ দখলে নেয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের চকরিয়া উপ-বিভাগের উপসহকারি প্রকৌশলী আবু আহসান মোহাম্মদ আজিজুল মোস্তাফা বলেন, অন্তত ২০বছর পূর্বে এটি আমাদের অফিস ও স্টাফ কোয়ার্টার ছিল। সেটিতে থাকত আমাদের স্টাফরা। কর্মকর্তারা সেখানে নিয়মিত অফিস করতেন। পরবর্তীতে আমাদের অফিস কার্যক্রম চকরিয়া সদরে স্থাপিত হলে বানিয়ারছড়া স্টেশনের ওই ভবটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এরপর আমাদের অনুমতি সাপেক্ষে চিরিঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ অস্থায়ী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অফিস থেকে স্টাফ পাঠিয়ে আমাদের ওই জমিতে কোন ধরণের স্থাপনা নির্মাণ না করতে অভিযুক্ত রাইচ মিল মালিক নুরুল আমিন চৌধুরীর লোকজনকে বারণ করা হয়েছে। আমরা প্রথমে অভিযুক্ত দখলবাজ চক্রকে মৌখিকভাবে বারণ করেছি। তারপরও নির্মাণ কাজ চলতে থাকলে কক্সবাজারস্থ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিষয়টি জানানো হবে। তার নির্দেশনার আলোকে পরবর্তী আইনী প্রদক্ষেপ নেয়া হবে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দখলে নেয়া সরকারের ওই জমিতে ইট বালু কংক্রিট মজুদ করে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দখলবাজ চক্রটি। স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন, সড়ক ও জনপদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে বানিয়ারছড়া স্টেশনের পুরাতন সওজ অফিসের জায়গা ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে দিনদিন বেহাত হচ্ছে বহু সরকারি সম্পদ। কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু কুমার চাকমা বলেন, সড়ক বিভাগের জায়গা জবরদখলে জড়িতরা যতবড় প্রভাবশালী হোক কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। একইভাবে বানিয়ারছড়া স্টেশনের আমাদের অফিসঘরের জায়গাটিও অবশ্যই দখলমুক্ত করা হবে। বিষয়টির আলোকে চকরিয়া উপজেলা ও থানা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় আইনী প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত রাইচমিল মালিক নুরুল আমিন চৌধুরী মুঠোফোনে দাবি করেন, যে জায়গাটি সড়ক বিভাগের বলা হচ্ছে, সেটি তাঁর নিজস্ব ও ভোগদখলীয় জায়গা। জায়গার বিপরীতে আমার সবধরণের কাগজপত্র আছে। তিনি ওই জায়গাটি অফিসঘরসহ এতদিন হাইওয়ে পুলিশকে মাসিক ৬ হাজার টাকা হিসেবে ভাড়া দিয়েছিলেন বলে তার দাবি। কয়েকবছর আগে হাইওয়ে পুলিশ স্থায়ী ভবনে চলে গেলে অফিসঘরটি খালী হয়ে পড়ে। সেই কারণে আমি ভেঙ্গে ফেলেছি। জায়গাটি সমতল করার জন্য বালু ফেলে কিছু সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন, চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন ও সড়ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের রহস্যজনক ভুমিকার সুযোগে আমাদের চোঁখের সামনে সরকারি কোটি টাকা দামের জায়গাটি দখল হয়ে যাচ্ছে। আবার সেখানে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল বাণিজ্যিক মার্কেট।
×