ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যানজটের কারণে পণ্যের রফতানি মূল্য বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৯:৪১, ১৪ নভেম্বর ২০১৯

 যানজটের কারণে পণ্যের রফতানি মূল্য বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের সড়কে যানজটের কারণে পণ্যের রফতানি মূল্য বাড়ছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। দেশের অর্থনীতির চাহিদা মেটাতে এবং রফতানি প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বাংলাদেশকে তার পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করার কথাও বলছে সংস্থাটি। বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে এই তথ্য বলা হয়েছে। বুধবার রাজধানীর রেডিসন ব্লুতে ‘মুভিং ফরওয়ার্ড: কানেক্টিভিটি এ্যান্ড লজিস্টিক টু সাসটেইন বাংলাদেশ সাকসেস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান, বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি মার্সি টেম্বন, প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন বিশ্ব ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ম্যাটিয়াস হেরেরা ড্যাপে। সেমিনারে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে ম্যাটিয়াস হেরেরা ড্যাপে বলেন, বর্তমানে কম খরচে এবং কম সময়ে রফতানি পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা রফতানি সক্ষমতার খুবই গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। সড়ক, রেল ও জলপথ এই তিন খাতেই পণ্য পরিবহনে মসৃণ অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় পণ্য পরিবহনের সময় ও ব্যয়- দুটোই বেশি। যেমন একটি ট্রাক ঢাকা থেকে পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে অনেক যানজট পেরিয়ে পৌঁছালেও এতে ব্যয় হচ্ছে অনেক। কারণ এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৩৫ শতাংশ ট্রাককে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকায় আবার খালি ফেরত আসতে হচ্ছে। বন্দর, উদ্যোক্তা ও পরিবহন ব্যবস্থার সমন্বয় না থাকার কারণে এমনটা হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকের এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, পণ্য পরিবহন সহজ করতে রেলপথ ও নৌপথের অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। পণ্য পরিবহনে টেকসই ব্যবস্থা হচ্ছে রেল যোগাযোগ মাধ্যম। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও চট্টগ্রামের সঙ্গে রেল পরিবহনের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় এক্ষেত্রে পণ্য পরিবহন ব্যয় বাড়ছে। এছাড়া পণ্য পরিবহনে সবচেয়ে সাশ্রয়ী ব্যবস্থা হচ্ছে জলপথ। এ পথে কম খরচে ও যথা সময়ে রফতানি পণ্য গন্তব্যে পৌঁছানো যায়। তাই বাংলাদেশ সরকারকে দেশের প্রয়োজনীয় স্থানগুলো যাচাই-বাছাই করে নৌ অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মশিউর রহমান বলেন, সরকার দ্রুত যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে নানামুখী চেষ্টা করছে। রফতানিকে অগ্রাধিকার দিয়ে সংযোগ ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে সরকার কাজ করছে। মশিউর রহমান আরও বলেন, সম্প্রতি ভারতের অসমে পণ্য পরিবহনের জন্য ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা মনে করি, শুধু পর্যটন শিল্প নয় সব ধরনের যোগাযোগ বিশেষ করে রফতানিকে অগ্রাধিকার দিয়ে সংযোগ ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, ভারত সরকার চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের একটি প্রস্তাব দিয়েছে। তবে ওই প্রস্তাব এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এর আগে স্বাগত বক্তব্যে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি মার্সি টেম্বন বলেন, বাংলাদেশের সড়কে যানজটের কারণে পণ্যের রফতানি মূল্য বাড়ছে। রফতানি প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় মসৃণ পরিবহন অবকাঠামো তৈরিতে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। যানজটমুক্ত সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার পাশাপাশি সাশ্রয়ী যোগাযোগ মাধ্যম রেল ও জলপথের অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে রফতানি সক্ষমতাকে পুরোপুরি কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
×