ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সেনাবাহিনী সবসময় দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করে ॥ সেনা প্রধান আজিজ

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ১৩ নভেম্বর ২০১৯

সেনাবাহিনী সবসময় দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করে ॥ সেনা প্রধান আজিজ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, দু’দেশের সেনাবাহিনীর সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষে তিনি আগামী মাসে মিয়ানমার সফরে যাবেন। রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য একটি বড় সমস্যা। এ জন্য এ সময় তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়েও সে দেশের সেনাবাহিনীর সাথে কথা বলবেন। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী সবসময় দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করে। কাজ করে সরকারের সহায়ক হিসাবেও। সরকারের যে পলিসি থাকে তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়াও আমাদের কাজ। তাই দু’দেশের সামরিক বাহিনীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ঠ বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও কথা হবে। তিনি বুধবার সকালে যশোর ক্যান্টনমেন্টের সিগন্যাল ট্রেনিং সেন্টার এন্ড স্কুল প্রাইভেট গ্রাউন্ডে ৫টি ইউনিটকে রেজিমেন্টাল কালার প্রদান অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সেনাবাহিনী উন্নয়নের পাশাপাশি দেশ গঠনমূলক কর্মকান্ডে কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স এর অবদান অনস্বীকার্য। পদ্মা বহুমুখী সেতু এবং হাতিরঝিল প্রকল্পসহ জাতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে এই কোরের সদস্যরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিহাসে আজ প্রথমবারের মত কোন সিগন্যাল ইউনিট রেজিমেন্টাল কালার অর্জন করল, যা ১ সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন তথা কোর অব সিগন্যালস এর ইতিহাসে একটি গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা করলো। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্রতিষ্ঠিত প্রথম সিগন্যাল ইউনিট ১ সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন। রেজিমেন্টাল কালার প্রাপ্তি যে কোন ইউনিটের জন্য একটি বিরল সম্মান এবং পবিত্র আমানত। আজ সেই রেজিমেন্টাল কালার প্রাপ্তি এই পাঁচটি ইউনিটের হাতে তুলে দেওয়া হল। এই বিরল সম্মান ও গৌরব অর্জন করায় আমি এই ইউনিটসমূহ কে জানায় আমার আন্তরিক অভিনন্দন। কর্মদক্ষতা, কঠোর পরিশ্রম এবং কর্তব্যনিষ্ঠার স্বীকৃতি হিসেবে যে পতাকা আজ আপনারা অর্জন করলেন, আমি আশা করি তার মর্যাদা রক্ষার জন্য, যে কোন ত্যাগ স্বীকারে আপনারা সবসময় সচেষ্ট থাকবেন। একটি আধুনিক যুগোপযোগী ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো পরিবর্তনের পাশাপাশি আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে তিনটি আর্টিলারি ব্রিগেড, একটি এয়ার ডিফেন্স আর্টিলারি ব্রিগেড, ৫টি ফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্ট, ৩টি এয়ার ডিফেন্স আটিলারি রেজিমেন্ট, একটি ডিভিশন লোকেটিং ব্যাটারি, একটি মর্টার রেজিমেন্ট, এবং ১টি এমএলআরএস রেজিমেন্ট। রেজিমেন্ট অব আর্টিলারির জন্য এক রেজিমেন্ট লং রেঞ্জ এমএলআরএস, দুই রেজিমেন্ট ১৫৫ মি:মি: মর্টার ক্রয় করার বিষয়টি প্রক্রিয়াাধীন রয়েছে। বাংলাদেশ আন্ত:চুক্তির মাধ্যমে মাইন অপসারণের সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ থেকে সেনা সদস্য মোতায়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ১৭ জনবলের দুইটি মাইনিং ব্যাটেলিয়ন এবং বিএমসি সদর দপ্তরের সাথে ১৮ জন জনবল সৌদি আরবে যাবেন এবং সেখানকার নাযরান এলাকায় নিয়োজিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান আধুনিকায়নের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কোর অব সিগন্যাল উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। এরই অংশ হিসেবে জাতীয় নিরাপত্তা এবং কৌশলগত প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থা সমূহের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি নিজস্ব টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এর সাহায্যে এর মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আধুনিকায়নে এবং দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে যোগাযোগ স্থাপনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামের টেলিযোগাযোগের মান উন্নয়নে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন সিস্টেম স্থাপনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রাক্তন সেনাবাহিনী প্রধানগণসহ কোর অব আর্টিলারি, ইঞ্জিনিয়ার্স ও সিগন্যাল এ চাকুরিরত এব অবসরপ্রাপ্ত উর্ধতন সেনাকর্মকর্তাগণ, সেনাসদর ও বিভিন্ন ফরমেশনের উর্ধতন সেনাকর্মকর্তাগণ এবং সামরিক প্রশাসনের আমন্ত্রিত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
×