ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অংশ নেবেন ছয় দেশের দুই শ’ শিল্পী

আন্তর্জাতিক লোকসঙ্গীত উৎসব শুরু কাল থেকে

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ১৩ নভেম্বর ২০১৯

আন্তর্জাতিক লোকসঙ্গীত উৎসব শুরু কাল থেকে

মনোয়ার হোসেন ॥ নবেম্বর মানেই শহরজুড়ে উৎসবের ঘনঘটা। এই তো তিন দিন আগে শেষ হলো আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসব ঢাকা লিট ফেস্ট। দেশ-বিদেশের শিল্পী-সাহিত্যিকদের গল্প-কবিতাসহ বিবিধ বিষয়ে আলোচনায় আগ্রহভরে অংশ নিয়েছেন সাহিত্যানুরাগী নগরবাসী। সেই উৎসবের রেশটি না কাটতেই শহরবাসীর সামনে হাজির হচ্ছে আরেকটি আন্তর্জাতিক মানের উৎসব। হৃদয় উচাটন করা লোকগানের সুর ¯িœগ্ধতা ছড়াবে যান ও জনজটের শহর ঢাকায়। সহজিয়া সুরের আশ্রয়ে উঠে আসবে জীবনের গভীর দর্শন থেকে শুরু আধ্যাত্মিকতা, প্রেম আর মাটির ঘ্রাণ। সেই মৃত্তিকাসংলগ্ন গানের বাণী আর সুরে জাগবে এই শহর। বিশ্ব দরবারে বাংলা লোকসঙ্গীতের সুর-সুধা ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে তিনদিনের ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্ট। প্রতিদিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১২টা অবধি শেকড়সন্ধানী সুরের খেয়ায় ভাসবেন সুর রসিকরা। শুনবেন দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত লোকসঙ্গীত শিল্পীদের গান। আন্তর্জাতিক এই লোকসঙ্গীত উৎসবে অংশ নেবেন বাংলাদেশসহ ছয় দেশের দুই শতাধিক শিল্পী। ইতোমধ্যেই নিবন্ধনের মাধ্যমে উৎসবে শামিল হওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করেছেন আগ্রহী শ্রোতারা। বিগত চার বছরের ধারাবাহিকতায় পঞ্চমবারের মতো উৎসবটির আয়োজক সান ফাউন্ডেশন। এবারের আসরে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬ দেশ থেকে ২০০ জনের বেশি লোকশিল্পী ও কলাকুশলী জড়ো হচ্ছেন একই মঞ্চে। দেশের উল্লেখযোগ্য শিল্পীদের মধ্যে গান শোনাবেন শাহ্ আলম সরকার, মালেক কাওয়াল, কাজল দেওয়ান, ফকির শাহাবুদ্দিন, চন্দনা মজুমদার, বাউলিয়ানার কামরুজ্জামান রাব্বি ও শফিকুল ইসলাম, প্রেমা ও ভাবনা নৃত্য দল। ভারতের লোকসুর নিয়ে হাজির হবেন দালের মেহেন্দি। পাকিস্তানের লোকসঙ্গীতে মঞ্চ মাতাবে ব্যান্ডদল জুনুন ও হিনা নাসরুল্লাহ। উপস্থাপিত হবে রাশিয়ার সাত্তুমা, জর্জিয়ার শেভেনেবুরেবি এবং মালি থেকে আসা হাবিব কইটে এ্যান্ড বামাদা লোকগান। বৃহস্পতিবার সূচনা হওয়া উৎসবের প্রথমদিনে শোনা যাবে বাংলাদেশের বাউলশিল্পী শাহ আলম সরকার, ভারতের দালের মেহেন্দি ও জর্জিয়ার শেভেনেবুরেবির লোকগান। লোকজ আঙ্গিকের নৃৃত্য পরিবেশন করবে প্রেমা এবং নৃত্যদল ভাবনা। শুক্রবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনে শোনা যাবে দেশের শিল্পী মালেক কাওয়াল, ফকির শাহাবুদ্দিন, ম্যাজিক বাউলিয়ানার কামরুজ্জামান রাব্বি ও শফিকুল ইসলামের গান। উপস্থাপিত হবে পাকিস্তানের হিনা নাসরুল্লাহ ও মালির হাবিব কইটে এ্যান্ড বামাদার পরিবেশনা। সমাপনী দিন শনিবার বাংলাদেশের কাজল দেওয়ান ও চন্দনা মজুমদারের সঙ্গে শ্রোতার হৃদয় রাঙ্গাবে পাকিস্তানের ব্যান্ডদল জুনুন এবং রাশিয়ার সাত্তুমা। এবারকার আয়োজনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিল্পী ভারতের দালের মেহেন্দি। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি পাঞ্জাবি ভাঙড়া গান গেয়ে ভারতজুড়ে আলোড়ন তোলেন এই শিল্পী। ১৯৯৫ সালে তার প্রথম এ্যালবাম ‘বোলো তা রা রা রা’ প্রায় ২০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়। তিন দশকের ক্যারিয়ারে শ্রোতাদের উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। বলিউডে প্লেব্যাক করেও অর্জন করেছেন সুনাম। দালের মেহেন্দির কণ্ঠে ভাঙড়া গান ভারতের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এবারের উৎসবের আরেক আকর্ষণ পাকিস্তানের ব্যান্ডদল জুনুন। সুফি ঘরানার গান গেয়ে দুই যুগের বেশি সময় ধরে শ্রোতাতাদের মোহাবিষ্ট করে রেখেছে দলটি। ১৯৯৭ সালে নিজেদের চতুর্থ এ্যালবাম ‘আজাদি’ দিয়ে উপমহাদেশজুড়ে ঝড় তোলে জুনুন। জুনুনের এ্যালবামটি ৩০ মিলিয়নের বেশি বিক্রি হয়।
×