ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলায় ট্রলারডুবিতে মৃতদের পরিবারে মাতম, এখনও চার জেলে নিখোঁজ

প্রকাশিত: ১১:২৫, ১৩ নভেম্বর ২০১৯

ভোলায় ট্রলারডুবিতে মৃতদের পরিবারে মাতম, এখনও চার জেলে নিখোঁজ

হাসিব রহমান, ভোলা ও এ আর এম মামুন, চরফ্যাশন থেকে ॥ হাসান মোল্লা। মাছ ধরেই চলে তার সংসার। তিনিই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। অসচ্ছলতার মধ্যেও তার তিন ছেলেকে পড়ালেখা শিখিয়ে শিক্ষিত করা তার স¦প্ন। বড় ছেলে জুয়েল (১৭) পড়ে দশম শ্রেণীতে। মেজো সোহেল (১০) মাদ্রাসায়। ছোট ছেলে ইমনের বয়স মাত্র ৩ বছর। গত ৩০ অক্টোবর মা ইলিশ রক্ষার অভিযান শেষে হাসান মোল্লা সাগরে মাছ শিকারে যায়। শনিবার মাছ ধরে চাঁদপুরে বিক্রি করে পরদিন চরফ্যাশনে ফেরার পথে ভোলার ইলিশা মেঘনা নদীতে তার মৃত্যু হয়। তার লাশ মঙ্গলবার চরফ্যাশনের আবদুল্লাহপুর পৌঁছলে এক হৃদয়বিদারক অবস্থার সৃষ্টি হয়। তার স্ত্রী কল্পনা বেগম কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। হাসান মোল্লার বয়স্ক পিতা কয়সার মাঝিও পুত্রের শোকে পাগলের মতো বিলাপ করতে থাকেন। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ভোলার ইলিশায় উত্তাল মেঘনায় ট্রলারডুবির ঘটনায় ৯ জেলের মৃতদেহ উদ্ধারের পর জেলে পরিবারগুলোতে হাসান মোল্লার পরিবারের মতোই চলছে মাতম। মঙ্গলবার ভোরে চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে তাদের বাড়িতে জেলেদের মরদেহ পৌঁছলে স্বজনহারাদের মধ্যে হৃদয়বিদারক অবস্থা সৃষ্টি হয়। স্বজন হারিয়ে অনেকই বার বার মূর্ছা যেতে থাকেন। সকাল ৮টার পর থেকে পৃথক পৃথক স্থানে জানাজা শেষে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ট্রলারডুবির ঘটনায় ১০ মৃতদেহসহ ২০ জন উদ্ধার হলেও এখনও ৪ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। এদিকে ট্রলারডুবির এই ঘটনায় কারও কোন গাফিলতি ছিল কি না, কারা দায়ী তার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আগামী ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। অন্যদিকে ঘরবাড়ি হারিয়ে বিধ্বস্ত অসহায় পরিবারগুলো এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে টিন ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
×