ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে কাদের

দুঃসময়ের কর্মী চাই, বসন্তের কোকিল চাই না

প্রকাশিত: ১১:১৪, ১২ নভেম্বর ২০১৯

দুঃসময়ের কর্মী চাই, বসন্তের কোকিল চাই না

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সব সেক্টরে দুর্নীতিবাজ লোকদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে এমন সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে বলেছেন, নিজের ঘর থেকে শেখ হাসিনা শুদ্ধি অভিযানের সূচনা করেছেন। অন্য দলেও অনেকে বড় বড় কথা বলছেন। খোঁজ নেয়া হচ্ছে, দুর্নীতি করে কাদের আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে। খোঁজ নেয়া হবে প্রশাসনে কারা দুর্নীতিবাজ। সব সেক্টরে খারাপ লোকদের খুঁজে বের করা হবে। সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, দশটা ভাল কাজকেও একটা খারাপ কাজ ঢেকে দিতে পারে, ম্লান করে দিতে পারে। শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। তাই বসন্তের কোকিলদের এনে দলে ভেড়ানোর কোন চেষ্টা করবেন না। সৎ সাহস আছে, বঙ্গবন্ধুর কন্যা নিজেদের দল থেকে শুদ্ধি অভিযানের সূচনা করেছেন, কেউ ছাড় পাবে না। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, আওয়ামী লীগের উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক নির্মল রঞ্জন গুহ, সদস্য সচিব গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আরিফুর রহমান টিটু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে জাতীয় পতাকা এবং বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ’আপনারা মাদক ও দুর্নীতিকে না বলুন। সন্ত্রাসকে না বলুন। টেন্ডারবাজিকে না বলুন। চাঁদাবাজিকে না বলুন। ভূমি দখলকে না বলুন। অন্যের বাড়ি দখলকে না বলুন। এটা হচ্ছে পরিষ্কার মেসেজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এই মেসেজ আমি সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মীদের কাছে, নেতাদের কাছে দিয়ে গেলাম।’ তিনি বলেন, চাঁদাবাজ ও মাদক কারবারিরা সাবধান। লুটেরারা সাবধান, সন্ত্রাসীরা সাবধান। দুর্নীতিবাজরা সাবধান। এদের ঠাঁই নেই শেখ হাসিনার আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগে। মনে রাখবেন, ক্ষমতা চিরদিন থাকে না। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না কেউ। বসন্তের কোকিলদের এনে দল ভারি করার চেষ্টা করবেন না। আমরা দুঃসময়ের কর্মী চাই, বসন্তের কোকিল চাই না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের দলে পরিমাণগত ব্যাপকতার কমতি নেই। সংখ্যার আমাদের কর্মীর অভাব নেই। সমর্থকের অভাব নেই। তাই আমাদের পার্টিতে দূষিত রক্ত আমরা আর চাই না। এই দূষিত রক্ত বের করে দিতে হবে। বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে হবে। অশুদ্ধকে শুদ্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, কে কত প্রভাবশালী তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে আমরা চাইব ক্লিন ইমেজের কর্মীদের নেতা বানাতে। খারাপ লোক কোন দরকার নেই। খারাপ লোকেরা দলের দুর্নাম ডেকে আনে। দুঃসময় এলে এই খারাপ লোকেদের হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে সুনাম, অর্জন, পরিশ্রম, তাঁর যে ত্যাগ, বারবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। এখানে তাঁকে বুলেট পেছনে তাড়া করে ফেরে, পিতা বঙ্গবন্ধুর মতো তিনিও আছেন এক ঝুঁকিপূর্ণ পথচলায়। তাই আসুন, শেখ হাসিনার কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকি। সততা নিয়ে, সাহস নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পতাকা হাতে এগিয়ে যাই। তাহলে কোন অপশক্তিই আওয়ামী লীগের অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারবে না। সম্মেলন হলেও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের কোন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। আগামী ১৬ নবেম্বর সংগঠনের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের দিন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে আরও সময় নিতে চাই এবং বিচার বিশ্লেষণ করতে চাই। সেজন্য আমরা চাচ্ছি আগামী ১৬ নবেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে উত্তর ও দক্ষিণ শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হবে।
×