ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিমানের অত্যাধুনিক দুই ড্রিমলাইনার আসছে ২০ ও ২২ ডিসেম্বর

প্রকাশিত: ১১:১৩, ১২ নভেম্বর ২০১৯

বিমানের অত্যাধুনিক দুই ড্রিমলাইনার আসছে ২০ ও ২২ ডিসেম্বর

আজাদ সুলায়মান ॥ সিয়াটলে বাহারি রঙে সাজছে বিমানের কেনা দুটো অত্যাধুনিক ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই খুব দ্রুততার সঙ্গে এ দুটোকে ঢাকায় আনার বিষয়টি পাকাপোক্ত করা হয়েছে। এখন চলছে ড্রিমলাইনার দুটোর ব্র্যান্ডিং, লোগো ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ। একটি আসছে আগামী ২০ ডিসেম্বর, অপরটি দুদিন পর ২২ ডিসেম্বর। যদিও এখনও পর্যন্ত এ দুটোর নামকরণ করা হয়নি। ইতোমধ্যে চল্লিশটি নামের একটি তালিকা এখন প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক বলেছেন, নামের ফাইলটি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই নাম দুটো বাছাই করে দেবেন। নামকরণ ছাড়া ড্রিমলাইনার দুটো দেশে আনার সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। এখন অপেক্ষা শুধু সেই মাহেন্দ্রক্ষণের। জানা গেছে, বিমানের এ দুটো ড্রিমলাইনার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ঘটা করে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর চতুর্থ ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮ ‘রাজহংস’ উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুটি বোয়িং কেনার আগ্রহ দেখান। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে রাজহংসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয় সিয়াটলের বোয়িং কারখানায় চীনের অর্ডার দেয়া কয়েকটি অত্যাধুনিক সিরিজের ড্রিমলাইনার পড়ে রয়েছে অবিক্রীত অবস্থায়। মার্কিন মুল্লুকের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের দরুন চীন এগুলো অর্ডার দেয়ার পরও আর কিনবে না। এমন সংবাদে প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন অন্তত আরও দুটো ড্রিমলাইনার সংগ্রহ করে বিমানের বহরকে শক্তিশালী করতে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরদিন থেকেই বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ও সচিব মহিবুল হক জোর তৎপরতা শুরু করেন। তারা দুজনের সার্বিক তদারকিতে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই বোয়িংয়ের টিম ঢাকায় আসে। তারা ড্রিমলাইনারের দরদাম নিয়ে একাধিক বৈঠক করেন। এবং অক্টোবরেই দুটোর দরদামও চূড়ান্ত করা হয়। এ সম্পর্কে সচিব মহিবুল হক বলেন, বর্তমান বাজার দরের অর্ধেক দামেই দুটো ড্রিমলাইনার কেনা হয়েছে। এতে বিমানই লাভবান হয়েছে। জানা গেছে, বিমান বহরে যোগ হতে যাওয়া এ দুটি ড্রিমলাইনার আকৃতিতে ৭৮৭-৮ সিরিজের চেয়ে বেশ বড়। আসন সংখ্যাও বেশি। এতে ৩০১টি আসন রয়েছে। প্রতিটি ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার বর্তমান বাজারমূল্যের অর্ধেক দামে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কমে কেনা হয়েছে। ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজের দৈর্ঘ্য ২০৬ ফুট। এটি টানা প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার উড়তে পারে। এতে রয়েছে ওয়াইফাই সুবিধা। বিমানের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালক মোকাব্বির হোসেন জানিয়েছেন, সব ধরনের পরিদর্শন ও যাচাই-বাছাই প্রায় শেষ। প্রকৌশলীদের একটি শক্তিশালী টিম সিয়াটল গিয়ে সরজমিনে ড্রিমলাইনার দুটো খুঁটিনাটি সব পরিদর্শন করে এসেছেন। এবার দেশে আসার অপেক্ষায় রয়েছে ড্রিমলাইনার বোয়িং ৭৮৭-৯। জানা গেছে, সিয়াটলে বোয়িং কোম্পানির ফ্যাক্টরিতে ড্রিমলাইনার দুটো বিমানের কাছে হস্তান্তরের আগে আনুষঙ্গিক কাজ চলছে। অত্যাধুনিক সাজে রাঙানো হচ্ছে। কোম্পানির প্রকৌশলীর কাছ থেকে বিমানের দুটি ড্রিমলাইনারের বেশ কিছু ছবি পাওয়া গেছে। চলতি নবেম্বর মাসের প্রথম দিকে তোলা এসব ছবিতে দেখা গেছে, একটি ড্রিমলাইনারের রং এখন ধবধবে সাদা। আরেকটি উড়োজাহাজ বোয়িংয়ের প্রতীক যুক্ত করে নীল-গোলাপি রঙে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। দুটি ড্রিমলাইনারের মধ্যে একটি যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল থেকে বাংলাদেশের পথে রওনা দেবে ১৯ ডিসেম্বর। দ্বিতীয়টি সেখান থেকে উড়বে ২১ ডিসেম্বর।
×