ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারি

প্রাইমারী স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে স্নাতক হতে হবে

প্রকাশিত: ১১:১২, ১২ নভেম্বর ২০১৯

প্রাইমারী স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে স্নাতক হতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হওয়ার ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। এছাড়া সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য হতে হলেও প্রাথমিক যোগ্যতা হিসেবে তাদের সন্তানকে অবশ্যই ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সুপারিশ অনুসারে সভাপতির ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বাধ্যতামূলক করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির পুরনো নীতিমালা বাতিল করে সংশোধিত নীতিমালায় এই নতুন বিধানটি সংযোজন করা হয়েছে। সোমবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা নীতিমালায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির (এসএমসি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রাথমিক যোগ্যতা হিসেবে সভাপতি প্রার্থীর সন্তানকে অবশ্যই ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে হবে। এছাড়া বিদ্যোৎসাহী সদস্যদেরও সন্তান বিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রী হতে হবে এবং তাদেরও শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম এসএসসি হতে হবে। কমিটির সভাপতিকে অবশ্যই স্নাতক ডিগ্রীধারী হতে হবে। ১১ সদস্যের কমিটিতে সদস্য-সচিব থাকবেন প্রধান শিক্ষক। জানা গেছে, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হতে এতদিন শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন বালাই ছিল না। কর্মকর্তারা বলেছেন, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতেই প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাই সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম ডিগ্রী পাস করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছিল। অধিদফতর থেকে প্রস্তাব আসার পর এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি হলো। কর্মকর্তারা জানান, সারাদেশে ৬৫ হাজার ৫৯০টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১১ জনের পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে। তাদের মধ্যে প্রধান শিক্ষক সদস্য সচিব, একজন শিক্ষক প্রতিনিধি, নিকটবর্তী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক প্রতিনিধি, জমিদাতার একজন প্রতিনিধি, কাউন্সিলর বা ইউপি সদস্য, শিক্ষানুরাগী দুজন, অভিভাবক প্রতিনিধি চারজনসহ মোট ১১ জন সদস্য নির্বাচন করা হয়। তাদের মধ্যে একজনকে সভাপতি ও একজনকে সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচন করা হয়। অনেক বিদ্যালয়ে কমিটির সভাপতি হিসেবে নিরক্ষর ব্যক্তিকে নির্বাচন করায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় বলে বলছে মন্ত্রণালয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও শিক্ষার মান বাড়াতে তারা কোন ধরনের সহায়তা ও দিকনির্দেশনা দিতে পারেন না, বরং বিদ্যালয়ের উন্নয়নসহ বিভিন্ন অর্থ হাতিয়ে নিতে ব্যস্ত থাকেন। নানা সময়ে শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। সভাপতিরা স্থানীয় ব্যক্তি ও ক্ষমতাবান হওয়ায় নানা ধরনের অনিয়ম করলেও শিক্ষকরা ভয়ে তাদের বাধা দেন না। এ ধরনের বিভিন্ন অভিযোগ মন্ত্রণালয়ে আসায় যোগ্য ব্যক্তিদের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সভাপতি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এর আগে সম্প্রতি বেসরকারী উচ্চ বিদ্যালয়-কলেজ ও মাদ্রাসায় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও সদস্য নির্বাচনে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে বিতর্ক হয়েছে। কমিটির অনেকেই চান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা উচিত। তবে আবার কেউ কেউ চান যেখানে একজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে শিক্ষা যোগ্যতা লাগে না সেখানে পর্ষদের সভাপতি ও সদস্যদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণের প্রয়োজন নেই। কমিটির এক সদস্য এম এ মতিন বলেছেন, কমিটিতে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সাহেব বিষয়টি উপস্থাপন করেছিলেন। আমি এর সমর্থনে ছিলাম। কোন চূড়ান্ত সুপারিশ আসেনি। নীতিমালা একটা হওয়া দরকার। সেটার জন্য সবার মতামতও নেয়া হবে। অংশীজনদের সঙ্গেও আলোচনা করতে হবে। শুধু আমরা আলোচনা করলে হবে না।
×