ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সৈয়দ কায়সারের আপীল শুনানি শেষ পর্যায়ে

প্রকাশিত: ১১:১৯, ১০ নভেম্বর ২০১৯

সৈয়দ কায়সারের আপীল শুনানি শেষ পর্যায়ে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের আপীল শুনানি শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আসামিপক্ষের শুনানির পর আগামী ১৮ নবেম্বর এ আপীলের ওপর রাষ্ট্রপক্ষের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। এদিকে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, শীঘ্রই মামলাটির শুনানি শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি। অন্যদিকে ৩১ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আপীল বিভাগে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও আলবদর কমান্ডার এটিএম আজাহারুল ইসলামের মৃত্যুদ- বহাল রেখেছে আপীল বিভাগ। এখন পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের অপেক্ষা। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলেই আসামি পক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করবে বলে জানা গেছে। সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মামলা থেকে জানা যায় , ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নিজের নামে ‘কায়সার বাহিনী’ গঠন করে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনকারী হবিগঞ্জের রাজাকার কমান্ডার ও শান্তি কমিটির সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারকে সর্বোচ্চ সাজাসহ ২২ বছরের কারাদ-াদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। মুক্তিযুদ্ধকালে ১৫২ জনকে হত্যা, ২ নারীকে ধর্ষণ, ৫ জনকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়, দুই শতাধিক বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন এবং ষড়যন্ত্রের ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে ১৪টিই প্রমাণিত হয়েছে তার বিরুদ্ধে। যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে প্রথমবারের মতো অন্য অপরাধের পাশাপাশি ধর্ষণের দায়ে ফাঁসির দ-াদেশ পায় কায়সার। সাঁওতাল নারী হীরামনি ও অপর নারী মাজেদাকে ধর্ষণের দুটি অপরাধ প্রমাণিত হয় তার বিরুদ্ধে। ওই দুই নারীকে ধর্ষণের ফলে এক বীরাঙ্গনার গর্ভে জন্ম নেয়া যুদ্ধশিশু শামসুন্নাহার প্রথমবারের মতো ট্রাইব্যুনালে এসে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন। সে সময় সাক্ষ্য দেয়ায় যুদ্ধশিশু শামসুন্নাহারকে সাহসিকতার জন্য এবং সব নির্যাতিত নারী ও বীরাঙ্গনাকে স্যালুট জানায় ট্রাইব্যুনাল। ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ফাঁসির সাজা বাতিল ও বেকসুর খালাসের আরজি জানিয়ে আপীল করেন কায়সার। ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিলের পক্ষে মোট ৫৬টি যুক্তি দেখান তিনি। আপীল বিভাগ এ পর্যন্ত আটটি মামলা নিষ্পত্তি করেছে। এর আগে আপীল বিভাগে সাতটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এই সাতটি মামলার মধ্যে ৬ জনের মৃত্যুদ- বহাল রাখা হয়। যার মধ্যে রয়েছেন জামায়াতের দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী, জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী ও জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাশেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আপীল বিভাগের আরেক রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদ- দেয়া হয়েছে। শুনানি চলার মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াত আমির গোলাম আযম ও বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের মৃত্যু হওয়ায় তাদের আপীলের নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।
×