ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভার্জিনিয়ায় দু’দশক পর ডেমোক্র্যাটদের জয়

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ৯ নভেম্বর ২০১৯

ভার্জিনিয়ায় দু’দশক পর ডেমোক্র্যাটদের জয়

মার্কিন অঙ্গরাজ্য ভার্জিনিয়ার ডেমোক্র্যাটরা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলেই বিজয়ী হয়েছেন এবং দু’দশকেরও বেশি সময় পর অঙ্গরাজ্যটির পুরো নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে নিয়ে নিলেন। শহরতলীর অধিকাংশ ভোটার মঙ্গলবার ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের পক্ষে ভোট প্রদান করায় ভার্জিনিয়ায় ডেমোক্র্যাটরা অঙ্গরাজ্যটিতে আধিপত্য পেল। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এটিই তৃতীয় নির্বাচন, যেটি ডেমোক্র্যাটদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। রিচমন্ডে হাজার হাজার সমর্থকদের উদ্দেশে ডেমোক্র্যাট গবর্নর রালফ নরথাম বলেন, ‘আজ আমি এখানে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করছি যে, ভার্জিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ আজ থেকে ডেমোক্র্যাটদের হাতে।’ এপি ও রয়টার্স। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের চারটি অঙ্গরাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও ভার্জিনিয়ার নির্বাচনেই ডেমোক্র্যাটরা শুধু বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে অঙ্গরাজ্যটির নিয়ন্ত্রণভার নিলেন। এদিকে রিপাবলিকান প্রার্থীরা অঙ্গরাজ্য ও সিনেটে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থনপুষ্ট রিপাবলিকান গবর্নরকে পরাজিত করে কেন্টুকিতে বিজয় উল্লাসে মত্ত রয়েছে মার্কিন ডেমোক্র্যাটরা। আর এর মাধ্যমে অঙ্গরাজ্যটিতে ট্রাম্পবিরোধীদের নবজাগরণে প্রেসিডেন্ট প্রশাসন কিছুটা হলেও বিব্রত। মিসিসিপি ও নিউজার্সিসহ চারটি রাজ্যের নির্বাচনের ফলই বলে দেবে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরবর্তী চার বছরের জন্য ট্রাম্প আবারও ক্ষমতায় আসতে পারবেন কি না। কেন্টাকির ডেমোক্র্যাট এ্যাটর্নি জেনারেল এন্ডি বেশারের পিতা স্টেভ ওই রাজ্যে সর্বশেষ ডেমোক্র্যাট গবর্নর ছিলেন। অন্যদিকে আগামী ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভার্জিনিয়ায় সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জোবাইডেন ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের মতো মানুষদের আনোগোনা শুরু হয়ে গেছে। তারা তাদের পক্ষে সমর্থন আদায়ে এখনই ভোটারদের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিন বছর আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ভার্জিনিয়ার রিপাবলিকানদের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনে, বিশেষ করে অঙ্গরাজ্যটির শহরতলীর এলাকাগুলোতে। ডেমোক্র্যাটরা প্রতিটি প্রতিযোগিতায়ই জয় ছিনিয়ে নেন এবং অতিরিক্ত তিনটি আসনও ছিনিয়ে নেন। ১৯৯৪ সালের পর দলটি প্রথমরারের মতো রাজ্য কংগ্রেস ও এক্সিকিউটিভ ম্যানসন নিজেদের দখলে নিল। ডেমোক্র্যাটরা নির্বাচিত হয়ে খুবই উল্লসিত এজন্য যে, রিপাবলিকানরা বছরের পর বছর ধরে অস্ত্র আইনসহ বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে যে ঝামেলা পাকাচ্ছে তার একটি বিহিত করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা। এই নির্বাচনেও ডেমোক্র্যাটরা অস্ত্র আইন বিষয়ে নির্বাচনী অঙ্গীকার প্রকাশ করেন। চলতি বছর ভার্জিনিয়া সৈকতে বন্দুকধারীদের গোলাগুলির ঘটনার পর নতুন সীমাবদ্ধতা পাস করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেও রিপাবলিকানদের জবাবদিহি করা হতে পারে বলে মনে করছেন ডেমোক্র্যাটরা। কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যের পরাজয় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্যও বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত সোমবার রাতেও কেন্টাকিতে বেভিনের এক প্রচার সভায় অংশ নেন ট্রাম্প। সেখানে হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশে তিনি বলেন, বেভিনের পরাজয় হলে সমালোচকরা একে বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম বড় পরাজয় হিসেবে চিত্রিত করবে। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কেন্টাকিতে জয় পেয়েছিলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, এই অঙ্গরাজ্যের গবর্নর হিসেবে ডেমোক্র্যাটরা চরম বিপজ্জনক হবেন। কেন্টাকির গবর্নর নির্বাচনে পরাজিত হলেও অঙ্গরাজ্যের আরও পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদে জয় পেয়েছে রিপাবলিকানরা। এর মধ্যে এ্যাটর্নি জেনারেলের পদও রয়েছে। এদিকে ভার্জিনিয়ায় রিপাবলিকানদের আধিপত্য গুঁড়িয়ে দিয়ে অঙ্গরাজ্যের আইনসভার দুই কক্ষের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে ডেমোক্র্যাটরা। সেখানকার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন ট্রান্সজেন্ডার ড্যানিকা রোয়েম। আর সিনেটে প্রথমবারের মতো মুসলিম নারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন গাজালা হাশমি। এই নির্বাচনের প্রচারে প্রার্থীদের সঙ্গে অংশ নেন আগামী বছরের সম্ভাব্য ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন। এদিকে মিসিসিপির গবর্নর নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট জিম হুডকে হারিয়ে রিপাবলিকানদের ক্ষমতা ধরে রেখেছেন টেট রিভস। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এই অঙ্গরাজ্যের গবর্নরের কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে রিপাবলিকানদের হাতে। এসব নির্বাচনের ফলের প্রতিক্রিয়ায় এক টুইট বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কেন্টাকি ও মিসিসিপিতে রিপাবলিকানদের ফলের প্রশংসা করেন। মিসিসিপির নতুন গবর্নর টেট রিভসকে অভিনন্দন জানান তিনি। আর বেভিনের পরাজয়ের বিষয়ে ট্রাম্পের ২০২০ সালে প্রচার ব্যবস্থাপক বলেছেন, প্রেসিডেন্ট তার নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছেন বলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে সমর্থ হয়েছেন তিনি।
×