ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শীতে ফ্যাশন অনুষঙ্গের প্রস্তুতি এখনই

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ৮ নভেম্বর ২০১৯

 শীতে ফ্যাশন অনুষঙ্গের প্রস্তুতি এখনই

কবিগুরু যথার্থই বলেছিলেন, ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি’। আসলেই কিন্তু তাই। এমন দেশটির মতো আরও একটি দেশ পৃথিবীপৃষ্ঠে খুঁজে বের করা আসলেই অনেক দুষ্কর কাজ। একই বছরে প্রকৃতির ছয় রকমের খেলা একমাত্র বাংলাদেশেই দেখা যায়। তাই তো বাংলাদেশকে বলা হয় ষড়ঋতুর দেশ। শরতের কাশফুলের শুভ্রতা শেষে বাংলাদেশের পালে বইছে এখন হেমন্তের হাওয়া। আমাদের দেশে এক-একটি ঋতু পরিবর্তন মানে এক-একেক ধাঁচের ফ্যাশনের আবির্ভাব। তাই তো ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ফ্যাশনের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন লক্ষ?্য করা যায়। হেমন্তের পরেই শীতের আগমন ঘটবে। শীতের ফ্যাশন বলতে সচরাচর আমরা টুপি, গ্লাভস, মাফলার, সোয়েটার, ব্লেজার প্রভৃতিকেই বুঝে থাকি। কিন্তু হালের পরিবর্তনের সঙ্গে শীতের ফ্যাশনেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। এখন শীত নিবারণের পাশাপাশি ফ্যাশনের দিকেও নজর রাখা হচ্ছে বেশ। আর এই ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হিসেবে যোগ হয়েছে স্কার্ফ, হ্যাট, কোটি, গ্যাভার্ডিনের ব্লেজার, জিন্স জ্যাকেট, সালগ্লাস, লকেট, ব্রেসলেট লিংবা রিস্ট ব্যান্ডের নাম। যা কিনা শীত নিবারণের পোশাকের পাশাপাশি ফ্যাশনকেও করছে সমৃদ্ধ। শীতকালে ফ্যাশনের যে বিপ্লব ঘটে তা বছরের অন্য ঋতুতে তেমন একটা দেখা যায় না। আর এই ফ্যাশনের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকে তরুণ-তরুণীরা। তাই শীতকালকে ফ্যাশনেবল কাল হিসেবে ব্যাখ্যা করলেও খুব একটা মন্দ হয় না... স্কার্ফ : শীতে তরুণ-তরুণীদের ফ্যাশনের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে স্কার্ফ ব্যবহৃত হয়। স্কার্ফ অনেকটা মাফলারের মতো কাজ করে থাকে। যা ঠান্ডা বাতাস থেকে আমাদের গলাকে রক্ষা করে থাকে। ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের জন্যই মার্কেটে স্কার্ফের ভা-ার রয়েছে। চেক, স্ট্রাইপ, এক রঙা অথবা ব্লকের স্কার্ফ পাওয়া যায় মার্কেটগুলোতে। মূলত টিনএজের ছেলে-মেয়েদের রুচির ওপর ভিত্তি করে এই স্কার্ফগুলো তৈরি হয়ে থাকে। এই স্কার্ফগুলো মান ভেদে ২০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। হ্যাট : শীতে ফ্যাশনের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে হ্যাট ব্যবহার করা হচ্ছে। গত কয়েক বছরে হ্যাটের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিপণি বিতানগুলোতে বিভিন্ন রকমের হ্যাটের সমাহার রয়েছে। যার মধ্যে কাউবয় হ্যাট, পার্টি হ্যাট, মখমলের হ্যাট, বেত দিয়ে তৈরি একরকমের হ্যাট প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। হ্যাটগুলোর বাজার দর ৪০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। সানগ্লাস : সানগ্লাস শীতের মৌসুমে অনেকের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। শীতে সানগ্লাসের পাশাপাশি গগলসের ব্যবহারও পরিলক্ষিত হয়। অনেকে আবার হ্যাটের সঙ্গে সানগ্লাস ব্যবহার করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বিভিন্ন ধরনের সানগ্লাসের মধ্যে পাইলট গ্লাস, রাউন্ড সেপ গ্লাস, স্কয়ার সেপ গ্লাস, মার্কারি গ্লাস, স্পোর্টস গ্লাস প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে সানগ্লাসের বাজারে ‘হানি সিং গ্লাস’ বিশেষভাবে জায়গা দখল করে রেখেছে। এই সানগ্লাসগুলো মানভেদে ৩০০ টাকা থেকে ৭০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। গ্যাভার্ডিনের ব্লেজার : একটা সময় ছিল যখন ব্লেজার বলতে আমরা কেবল ফরমাল ব্লেজারকেই বুঝতাম। কিন্তু এখন সময়টা পুরোপুরি পাল্টে গেছে। ফরমালের পাশাপাশি ক্যাজুয়াল ব্লেজারগুলোও ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। আর এসমস্ত ব্লেজারগুলোর মধ্যে গ্যাভার্ডিনের ব্লেজারের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন ডিজাইন এবং রঙের সন্নিবেশে ব্লেজারগুলোর দাম পড়বে ১৫০০ টাকা থেকে ৬০০০ টাকা। কোটি : বর্তমানে হাল্কা শীতে কম-বেশি কোটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। শীতের পাশাপাশি ফ্যাশনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কোটি ব্যববহৃত হচ্ছে। ছেলে এবং মেয়েদের উভয়ের জন্যই রয়েছে ফ্যাশনেবল কোটি। ছেলেদের জন্য গোল গলা এবং ভি-গলার কোটির চাহিদা বেশি। এই কোটিগুলো মূলত চেক, স্ট্রাইপ, এক রঙা প্রভৃতির হয়ে থাকে। মেয়েদের বেলায় কোটির রয়েছে বেশ রকমফের। হাতাকাটা, দৈর্ঘ্যে ছোট, মোটা কাপড়ের ওপর নকশা, সামনের দিকে কাটা কোটিগুলো তাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। কোটিগুলোর মানভেদে দাম পড়বে ১২০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত। বন্ধ জুতো : শীতকালে ফ্যাশনের বৈচিত্র্য দেখা যায় বন্ধ জুতোর ক্ষেত্রেও। বন্ধ জুতো বলতে সাধারণত কেডস, বুট, কনভার্স, স্নিকার প্রভৃতিকে বুঝায়। শীতের সময় বন্ধ জুতোর বাহারি রং এবং ডিজাইনের মিলনমেলা ঘটে শপিং মলগুলোতে। এসব বন্ধ জুতোর বাজার মূল্য হচ্ছে ৯০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকার ভিতর। লকেট/ব্রেসলেট/রিস্টব্যান্ড : লকেট, ব্রেসলেট কিংবা রিস্টব্যান্ড দিয়ে শীত নিবারণ করা না গেলেও এসব দ্বারা শীত নিবারণের পোশাকগুলোকে আরও স্টাইলিশ এবং আরও ফ্যাশনেবল করা সম্ভব হয়। একটি লকেট যখন স্টিলের চেন দিয়ে কোন জিন্সের জ্যাকেট কিংবা গ্যাভার্ডিনের ব্লেজারের সঙ্গে পরিধান করা হয়, সেই কাপড়টির সৌন্দর্য কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে। ঠিক তেমনি কোটির সঙ্গে ব্রেসলেট কিংবা রিস্টব্যান্ডের ব্যবহার সৌন্দর্যের মাত্রাকে ছাপিয়ে যাবে কয়েক গুণ। স্থান ভেদে এ সকল পণ্যের দাম নির্ভর করে। লকেটের মূল্য ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, ব্রেসলেটের মূল্য ৩০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা এবং রিস্টব্যান্ডের মূল্য ৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। কোথায় পাবেন? ঢাকার বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, ইস্টার্ন প্লাজা, রাপা প্লাজা, নিউ মার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, বঙ্গবাজার, গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন শপিং মলে উল্লিখিত পণ্যসমূহ পাওয়া যাবে। মডেল : সাবাব, সিফাত
×