ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে শিশু ধর্ষণের ঘটনায় মসজিদের ইমাম আটক

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ৬ নভেম্বর ২০১৯

মাদারীপুরে শিশু ধর্ষণের ঘটনায় মসজিদের ইমাম আটক

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ মাদারীপুরে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী (১২)কে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনায় মেহেদী হাসান মোল্লা নামে মসজিদের এক ইমামকে আটক করা হয়েছে। আরবি পড়তে গিয়ে ইমাম কর্তৃক ওই ছাত্রী ধর্ষিত হয়েছে। এ ঘটনায় মসজিদের ইমামকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেছে এলাকাবাসী। রাতে ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা করেন। রাতেই ধর্ষিতাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইমাম মেহেদী হাসান বাগেরহাট জেলার রায়েন্দা থানার রাজাপুর গ্রামের আবদুল জব্বার মোল্লার ছেলে। সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের কুমড়াখালির জবানখান জামে মসজিদে ১২ বছর ধরে ইমাম হিসেবে চাকুরী করছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্যাতিতা এলাকার একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। স্কুলে যাওয়ার আগে প্রতিদিন সকালে এলাকার অন্য শিশুদের সঙ্গে সে গ্রামের মসজিদে ইমামের কাছে আরবি পড়তে যায়। গত ১২ অক্টোবর সকালে অন্য শিশুদের সঙ্গে সেও আরবি পড়তে যায়। পড়াশেষে সবাইকে ছুটি দিলেও ইমাম তাকে ছুটি না দিয়ে তার কক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার কথা বলে ইমাম মেহেদী হাসান তার কক্ষে নিয়ে যায়। পরে কক্ষের দরজা বন্ধ করে ইমাম তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। মেয়েটি চিৎকার করতে থাকলে তার মুখে কাপড় চাপা দিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। লোকলজ্জার ভয়ে ওই ছাত্রী বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে চেপে রাখে। এরপর গত ১৫ অক্টোবর একই ভাবে তাকে আবার ধর্ষণ করে। ধর্ষণের কথা কারো কাছে বললে তাকে মেরে ফেলা হবে বলে ওই ইমাম মেয়েটিকে শাসিয়ে দেয়। মঙ্গলবার দুপুরে মেয়েটি তার স্কুলে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। শিক্ষকেরা তার পরিবারের সদস্যদের খবর দিলে তারা স্কুলে গিয়ে মেয়েটিকে বাড়ি নিয়ে যায়। বাড়িতে এসে মেয়েটির কাছে তার পরিবারের লোকজন সব কিছু জানতে চায়। সন্ধ্যার দিকে মেয়েটি তার নানির কাছে সবকিছু খুলে বলে। পরে এ ঘটনার কথা এলাকার লোকজন জানতে পেরে ইমাম মেহেদী হাসান মোল্লাকে আটক করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ইমাম মেহেদী হাসানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। রাতে ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। আজ বুধবার সকালে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মেহেদী হাসানকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। নির্যাতিতার পিতা বলেন, “মসজিদের ইমাম মেহেদী হাসানকে এলাকাবাসী আটক করে চরমুগরিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিলে পুলিশ এসে তার মেয়েসহ ইমামকে থানায় নিয়ে গেছে। আমি মামলা করেছি এবং ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।” চরমুগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম বলেন, “মঙ্গলবার রাত ৯ টার দিকে এলাকাবাসী আমাদের ঘটনাটি জানালে আমরা সেখান থেকে মেহেদী হাসান নামে একজনকে থানায় নিয়ে আসি।” মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. শশাংক চন্দ্র ঘোষ বলেন, “একটি মেয়ে রাতে ধর্ষণের অভিযোগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমরা মেডিকেল চেকআপের জন্য আলামত সংগ্রহ করেছি। বর্তমানে মেয়েটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।” মাদারীপুর সদর থানার ওসি সওগাতুল আলম বলেন, “মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ নিয়ে মামলা করা হয়েছে। মামলার আসামীকে গ্রেফতার দেখিয়ে আজহ বুধবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।”
×