ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে স্বতন্ত্র বই মার্কেট নির্মাণে ঘাপলা

প্রকাশিত: ০১:১৫, ২৯ অক্টোবর ২০১৯

যশোরে স্বতন্ত্র বই মার্কেট নির্মাণে ঘাপলা

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরে স্বতন্ত্র বই মার্কেট নির্মাণের শুরুতেই ঘাপলাবাজির অভিযোগ উঠেছে। বরাদ্দের বাইরের জায়গায়ও ৬টি দোকান ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে ৩টি ঘরের পিলার উঠে গেছে। বাকি ৩টি নির্মাণে সময় ক্ষেপনের কৌশল নেয়া হয়েছে। এ কারণে মুসলিম একাডেমির কিন্ডার গার্ডেন স্কুলটির জানালা ও যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নকশার বাইরে নির্মাণের কারণে দোকান ঘর উঠে আসছে রাস্তার উপরে। সূত্র জানায়, শহরের গরীব শাহ সড়ক থেকে উচ্ছেদকৃত বই ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য মুসলিম একাডেমি স্কুলের সামনের দু’পাশে ও সাবেক বাঁশহাটায় স্বতন্ত্র বই মার্কেট নির্মিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় ও মুসলিম একাডেমি স্কুলের উদ্যোগে এ মার্কেটের নির্মাণ কাজ এখন শেষের পথে। মার্কেটে থাকছে অর্ধশতাধিক বইয়ের দোকান। উচ্ছেদে ক্ষতিগ্রস্থ বই ব্যবসায়ীদের এ মার্কেটে সহজ শর্তে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। নবেম্বর মাস নাগাদ তারা নতুন এ মার্কেটে ব্যবসা শুরু করবে। সূত্র জানায়, মুসলিম একাডেমি স্কুল ও জেলা প্রশাসনের দুটি আলাদা প্লটে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের জন্য মোট ৫৪টি দোকান ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে বিভিন্ন সাইজের দোকান রয়েছে। এসব দোকানের মধ্যে ৪৫টি ১০ বছর মেয়াদি চুক্তিতে ও বাকি ৯টি দোকান দীর্ঘ মেয়াদি চুক্তিতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। চুক্তির শর্তানুযায়ী ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় বড় সাইজের দোকানীদের কাছ থেকে নামমাত্র অগ্রীম নেয়া হয়েছে তিন লাখ টাকা ও ছোট দোকানীদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে দেড় থেকে আড়াই লাখ টাকা। এ টাকা তাদেরকে একসাথে প্রদান করতে হচ্ছে না। মার্কেট নির্মাণের সময় অর্ধেক ও ছয় মাস পরে বাকি অর্ধেক টাকা প্রদান করতে হবে। বরাদ্দকৃত এসব দোকানের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ টাকা স্কয়ার ফুট। আর দোকানের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রতি স্কয়ার ফুট সাড়ে ৬ হাজার টাকা। কিন্তু এ মার্কেটের নির্মাণ কাজ শুরুর পরপরই ঘাপলাবাজির অভিযোগ উঠেছে। নির্মিতব্য এসব দোকান ঘরের সাইজ কেটে ছোট ও সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া নকশার বাইরে আরো ৬টি দোকান ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যারমধ্যে ৩টি ঘরের পিলার উঠে গেছে ও বাকি ৩টি সময় ক্ষেপন করে কৌশলে নির্মাণ করা হবে বলে মুসলিম একাডেমি কর্তৃপক্ষ বুদ্ধি এটেছেন। এটি করা হলে মুসলিম একাডেমি কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের জানালা বন্ধ হয়ে যাবে। শিশুরা খোলামেলা আলো বাতাস থেকে বঞ্চিত হবে বলে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, মুসলিম একাডেমি স্কুল কর্তৃপক্ষ দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ পন্থায় এ কাজটি করেছেন। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আর নকশার বাইরে নতুন করে দোকান ঘর নির্মাণের কারণে এগুলো রাস্তার উপরে উঠে আসছে। ফলে পথচারীর চলাচলে বিঘœ সৃষ্টির আশংকা দেখা দিয়েছে। স্বতন্ত্র বই মার্কেট নির্মাণে তদারককারী ও ব্যবসায়ী সমিতির নেতা আজাদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ৬টি অতিরিক্ত দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়টি তার জানা নেই। তবে এ মার্কেটের প্রথম পরিকল্পনা অনুযায়ী মার্কেটটি নির্মাণ হচ্ছে না। দোকানের মাপ, নকশা ও সংখ্যায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে কী কারণে কারা এটি কীভাবে করেছে সেটি তার জানা নেই। এ ব্যাপারে মুসলিম একাডেমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ জোহর আলী বলেন, বিদ্যালয়ের এ জায়গাটি আগে পড়ে ছিলো। এটি এখন কাজে লাগছে। ৬টি ঘর নতুন করে বরাদ্দ ও নির্মাণের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
×