ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মেডিকেলে চাকুরী পেলেন সেই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান; এসিল্যান্ড প্রত্যাহার

প্রকাশিত: ০৩:১৪, ২৮ অক্টোবর ২০১৯

মেডিকেলে চাকুরী পেলেন সেই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান; এসিল্যান্ড প্রত্যাহার

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ রাষ্ট্রীয় সম্মান ছাড়া মুক্তিযোদ্ধার দাফন ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে চাকুরীচ্যুতির ঘটনায় দিনাজপুরের এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার ভুমি) মোঃ আরিফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ড্রাইভার পদে চাকুরী দিয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার ও জাতীয় সংসদের হুইপ মরহুম মুক্তিযোদ্ধার কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। আজ সোমবার বেলা ১১টায় মরহুম মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের বাড়ী দিনাজপুর সদর উপজেলার ৬নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের জুগিবাড়ী গ্রামে যান রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কে এম তারিকুল ইসলাম ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি। সেখানে তারা মরহুমের কবর জিয়ারত ও পরিবারের লোকজনদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এসময় জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি মরহুম মুক্তিযোদ্ধার ছোট ছেলে নুর ইসলামকে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ড্রাইভার পদে চাকুরীর দেন। আগামী ১ নভেম্বর থেকে নুর ইসলাম চাকুরীতে যোগদান করবেন। কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ শেষে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কে এম তারিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, রাষ্ট্রীয় সম্মান ছাড়া মুক্তিযোদ্ধার দাফন ও মুক্তিযোদ্ধা সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। দিনাজপুর সদর সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে। তাই তাকে প্রত্যাহার করে নেয়া হলো। সেই সাথে তাকে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভুমি অফিসে পদায়ন করা হয়েছে। এব্যাপারে বিভাগীয় পর্যায়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির একক সদস্য অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ জাকির হোসেন তদন্ত করছেন। তদন্তে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসময় জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার। সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সব কিছু করে যাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধার প্রতি এ ধরনের ন্যাক্কার জনক ঘটনা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সরকার মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানের চাকুরীর ব্যাপারে সব জায়গায় অগ্রাধিকার দিয়ে যাচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে যে দোষী প্রমাণিত হবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরদিকে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহারের দাবীতে আজ (২৮ অক্টোবর) সোমবার দুপুর ১২টায় দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে মুক্তিযোদ্ধারা। এসময় মুক্তিযোদ্ধা বলেন, দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ মাহমুদুল আলম জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করছেন, অথচ তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। বর্তমান বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার থাকলে জেলা প্রশাসক কোন খুটির জোড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কাজ করছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। অবিলম্বে জেলা প্রশাসককে দিনাজপুর থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। নইলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। মানববন্ধনে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা লীগ দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি সহদেব চন্দ্র রায় বলেন, দিনাজপুরের ডিসি শুধু মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সাথে অন্যায় করেনি, দিনাজপুরের এক মুক্তিযোদ্ধার মেয়েকে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে যৌন নির্যাতনও করেছে। সেই খবর ইতিপূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ধরনের জেলা প্রশাসকের প্রয়োজন নেই আমাদের। এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বিক্ষোভ মিছিল দিনাজপুর শহর প্রদক্ষিণ করে দিনাজপুর প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
×