ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিশুহত্যা ও নির্যাতন বন্ধে

প্রকাশিত: ১২:০৯, ২৪ অক্টোবর ২০১৯

শিশুহত্যা ও নির্যাতন বন্ধে

যারা শিশুদের ওপর এ ধরনের নির্যাতন চালাচ্ছে তাদের মাঝে একটা ধারণা হয়ে গেছে যে, তাদের এই অপরাধের কোন বিচার হবে না। কেননা বাংলাদেশে শিশু নির্যাতনের মামলায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির তেমন নজির নেই। আর এ ধারণাই অপরাধীদের শিশুদের ওপর পাশবিক আচরণের অভয় দেয়। এ পর্যন্ত শিশু নির্যাতনের ১ লাখ ৮০ হাজার মামলা হয়েছে। এ মামলাগুলোর অধিকাংশই এখনও বিচারাধীন। এছাড়া যেসব মামলার রায় হয়েছে সেগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এ ধরনের নির্যাতনের মামলাগুলোর মাত্র ১.৩৬ শতাংশ মামলায় আসামির সাজা হয়েছে বাকি ৯৮.৬৪ শতাংশ মামলায় আসামি আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বিভিন্নভাবে বেরিয়ে গেছে। শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন আমাদের এমন তথ্যই দেয়। এছাড়া বিচার কার্যের দীর্ঘসূত্রতা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ঢিলেমি, আইনের ব্যত্যয়, সামাজিক অসচেতনতা, মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ইত্যাদি কারণে শিশু নির্যাতন ও হত্যা বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনসচেতনতা, সামাজিক প্রতিরোধ, আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ, দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণ এবং প্রকৃত দোষীরা যাতে বিচার থেকে রেহাই পেতে না পারে সে ব্যবস্থা করা গেলে শিশুদের অনেকাংশে সুরক্ষা দেয়া সম্ভব। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল রিসার্চ ট্রাস্টের একজন গবেষণা কর্মকর্তা ‘শহরাঞ্চলে পাশাপাশি ফ্ল্যাটগুলো থাকে অনেকটা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং সীমিত প্রবেশাধিকারসম্পন্ন। তাই দীর্ঘদিন পর্যন্ত কোন শিশু গৃহকর্মী নির্যাতিত হতে থাকলেও হস্তক্ষেপ করার কেউ থাকে না।’ শিশুদের ছোটখাটো অপরাধের কারণে সালিশি বিচারের নামে তাদের সঙ্গে সহিংস আচরণ করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে একাধিক অপরাধের ভুক্তভোগী জনতার ক্ষোভ কোন একটি শিশুচোর বা পকেটমারের ওপর পড়ছে। সাধারণ মানুষ এরূপ কোন সহিংস ঘটনা ঘটতে দেখলেও হস্তক্ষেপ না করে ঝামেলামুক্ত থাকতে চায়। অপরদিকে বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা, দোষীদের দ্রুত জামিন, সাজার হার কম ইত্যাদি ঘটনায় মানুষের মনে সহিংস কাজের প্রতি ভীতি কাজ করছে না। শিশুর প্রতি সহিংসতা কমানোর জন্য যেসব পদক্ষেপ নেয়া দরকার সেগুলো হলো- ১. নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কখনও শিশুদের একাকী না রাখা। ২. স্বামী-স্ত্রী উভয়ই কর্মজীবী হলে শিশুসন্তানকে দিবাযতœ কেন্দ্রে বা বিকল্প ব্যবস্থায় রাখা। ৩. গৃহকর্মীকে নিয়মিতভাবে সরকারী বা বেসরকারী সংস্থার মাসিক পরিদর্শনে রাখা। ৪. সম্ভাব্য অপরাধী ও ঝুঁকিপূর্ণ ভিকটিমকেন্দ্রিক প্রচারণা চালানো। ৫. অপরাধীর দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×