ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এডিস কিউলেক্সসহ যে কোন মশা নিয়ন্ত্রণে বছরব্যাপী কার্যক্রম

প্রকাশিত: ১১:১৭, ২৪ অক্টোবর ২০১৯

এডিস কিউলেক্সসহ যে কোন মশা নিয়ন্ত্রণে বছরব্যাপী কার্যক্রম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এডিস কিউলেক্সসহ অন্য যে কোন মশা নিয়ন্ত্রণে বছরব্যাপী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম। একই সঙ্গে কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি এখন থেকেই সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান তিনি। কোন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেলে প্রচলিত আইনের পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব আইনেও ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন। দুর্নীতিতে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। বাড়ি দখল, ফুটপাথ নিয়ে বাণিজ্য বা অন্য যে কোন অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে পরপর তিনটি সাধারণ সভায় অনুপস্থিত থাকায় ডিএনসিসির নয় কাউন্সিলরকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে, বলেন মেয়র। বুধবার গুলশানে ডিএনসিসি কার্যালয়ে মশক নিধনে বছরব্যাপী কার্যক্রমের পরিকল্পনা নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর মনজুর হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। মেয়র বলেন, কোন কাউন্সিলর বা কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলে প্রচলিত আইনের পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশন আইন অনুযায়ী ওই কাউন্সিলরকে বহিষ্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে। মেয়র বলেন, ডিএনসিসির ৯ ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়েছে। এসব কাউন্সিলর পর পর তিনটি বোর্ড সভায় অনুপস্থিত ছিলেন। তারা কেন উপস্থিত হতে পারেননি তার জবাব চেয়ে বুধবার নোটিস দিয়েছি। জবাব সন্তোষজনক না হলে আইনী ব্যবস্থা নেবে ডিএনসিসি। উল্লেখ্য, বর্তমানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান শুদ্ধি অভিযানের মধ্যে সম্প্রতি ধরা পড়েছেন উত্তর ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব। আত্মগোপনে রয়েছেন কয়েক কাউন্সিলর। মিজানের বিরুদ্ধে হত্যা, মাদকের কারবার, চাঁদাবাজি ও রাজিবের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের অভিযোগ থাকার কথা জানিয়েছে র‌্যাব। আতিকুল ইসলাম বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে কিছু কাউন্সিলরের আন্তরিকতার অভাব দেখা গেছে। তাদের উদ্দেশ তিনি বলেন, আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের প্রতি আপনাদের দায়বদ্ধতা আছে। এজন্য তাদের জন্য কাজ করুন। তিনি বলেন, গত ৭ অক্টোবর থেকে কিউলেক্স মশার প্রজননস্থল চিহ্নিত করতে দুই পরামর্শক ও ১০ শিক্ষানবিস কীটতত্ত্ববিদ নিয়োগ করা হয়েছে। চিহ্নিত প্রজননস্থলে তাদের পরামর্শে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ কাজ কতটা সফল হয়েছে তা জানতে ২০ অক্টোবর থেকে আবার মশার প্রজননস্থল চিহ্নিত করতে জরিপ চালানো হচ্ছে। ৩৪২ স্থানে জরিপ চালিয়ে ২১৫ স্থানে অতি ঘনমাত্রায় মশার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এছাড়া ১৭৫ স্থানে উচ্চমাত্রায়, ১৬৭ স্থানে মাঝারি এবং ৭৮ স্থানে কম মাত্রায় মশার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে মেয়র বলেন, যেসব ওয়ার্ডে মশার উপস্থিতি বেশি পাওয়া গেছে সেখানে মশক নিয়ন্ত্রণ ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বাড়াতে এসব ওয়ার্ডে কাউন্সিলরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আতিকুল ইসলাম বলেন, এখন থেকে প্রতি কাউন্সিলর নিজ নিজ ওয়ার্ডের মশক নিয়ন্ত্রণ, পরিছন্নতাসহ যে কোন বিষয়ে দায়ী থাকবেন, কৃতকর্মের জন্য তাকেই জবাবদিহি করতে হবে। তিনি বলেন, সম্প্রতি কোপেনহেগেনে সি ফোরটি মেয়রদের সম্মেলনে ডিএনসিসি ও কোপেনহেগেনের মধ্যে অগ্নিনির্বাপণ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ৩৬ ওয়ার্ডে একটি করে ৩৬ স্যাটেলাইট অগ্নিনির্বাপণ স্টেশন স্থাপন করা হবে। এর ফলে অল্প সময়ের মধ্যে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের পরীক্ষামূলক আসা-যাওয়ার জন্য কয়েকটি স্কুলে বৈদ্যুতিক বাস চালু করা হবে। অনুষ্ঠানে কীটতত্ত্ববিদ ড. জি এম সাইফুর রহমান জানান, সাতটি ওয়ার্ডে কিউলেক্স মশার প্রজননস্থলের ঘনত্ব বেশি পাওয়া গেছে। ওয়ার্ডগুলো হচ্ছে ২০, ২৮, ১১, ৫, ৩১, ৩২ ও ১৭। প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, আজ (বুধবার) থেকে দুই সপ্তাহব্যাপী বিশেষ মশক নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম হবে। ২০ অক্টোবর থেকে ৫৪ ওয়ার্ডে ইতোমধ্যে গৃহীত কার্যক্রমের প্রভাব ও হটস্পট নির্ধারণে আবারও গবেষণা শুরু হবে।
×