ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সৈয়দপুর বিমানবন্দরটিকে ‘আঞ্চলিক বিমানবন্দর’গড়ে তোলা হবে ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০১:৪৩, ২৩ অক্টোবর ২০১৯

সৈয়দপুর বিমানবন্দরটিকে ‘আঞ্চলিক বিমানবন্দর’গড়ে তোলা হবে ॥ প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের বিনিময়ে সংগৃহীত এই মূল্যবান বিমানের নিরাপদ উড্ডয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে আপনাদের সকলকে বিশেষ যত্নবান হতে হবে। মনে রাখবেন, পেশাগত দক্ষতা ও সততার কোনো বিকল্প নেই। আর দেশের মান-মর্যাদাও এর সঙ্গে জড়তি।” আজ বুধবার সকালে সোনারগাঁও হোটেলে ষষ্ঠ ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট সেফটি সেমিনারের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিমান উড্ডয়ন একটি উচ্চতর কারিগরি পেশা। এখানে পেশাগত দক্ষতার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। এ দক্ষতা একদিকে যেমন আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে, তেমনি সংশ্লিষ্ট সংস্থার জন্যেও বয়ে আনে সুনাম ও মর্যাদা। শেখ হাসিনা বলেন, “বিমান ভ্রমণ আরও নিরাপদ, আরামদায়ক ও সহজতর করতে আমরা বদ্ধপরিকর। এর অংশ হিসাবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। শাহজালালে নতুন টার্মিনাল হওয়ার পর এখনকার চেয়ে প্রায় আড়াইগুণ বেশি অর্থাৎ বছরে প্রায় ১২০ কোটি যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদশেরে ভৌগলিক অবস্থানের কথা মাথায় রেখেই বিমানবন্দরগুলোকে উন্নত করতে চাই। “এছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে অধিকতর যোগাযোগ স্থাপন করার জন্য সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার পরিকল্পনাও আমরা হাতে নিয়েছি।” শেখ হাসিনা বলেন, নেপাল ও ভুটানসহ পাশ্ববর্তী দেশগুলি ও লাগোয়া ভারতের প্রদেশগুলির ব্যবহারের জন্য সৈয়দপুর বিমানবন্দরটিকে ‘আঞ্চলিক বিমানবন্দর’ গড়ে তোলা হবে। “ইতোমধ্যে আমরা তার কার্যক্রম শুরু করেছি। এটা আন্তর্জাতিকমানের একটি বিমানবন্দরে উন্নীত হবে।” বোংলাদেশ বিমানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানি থেকে নতুন ১০টি ৭৭৭, ৭৮৭, ৭৩৭ মডেলের উড়োজাহাজ কেনার কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “অত্যাধুনিক এই উড়োজাহাজগুলো দিয়ে… আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে যে আমরা বিশ্বের সাথে আকাশ পথে যোগাযোগ স্থাপন করতে চাই। আর সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। “আমরা আশা করি, আমরা নিউইর্য়ক, টরেন্টো ও সিডনির মত দূরবর্তী গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারব। এ ব্যাপারে আমরা আগ্রহী। এই লক্ষ্যে সিভিল এভিয়েশন অথরিটিকে ক্যাটাগরি-১ এ উন্নীতকরণের কাজ এগিয়ে চলছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার এভিয়েশন সেক্টরের মান উন্নয়নের জন্য বিশেষ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। দেশের বিমান বাহিনী ও বেসামরিক বিমানের ‘ফ্লাইট সেইফটি’ রেকর্ড অত্যন্ত সন্তোষজনক। “সম্প্রতি আমাদের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইসিএও-এর ফ্লাইট সেফটি সমীক্ষায় ঈর্ষণীয় ৭৫ দশমিক ৪৬ নম্বর অর্জন করেছে, যা এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সম্প্রতি নিরাপদ উড্ডয়নের মানদণ্ডে পাঁচ তারকার আন্তর্জাতিক মান অর্জন করেছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তাছাড়া, আন্তর্জাতিক এভিয়েশন সেইফটি অ্যাসেসমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অথরিটির টেকনিক্যাল রিভিউয়ে ক্যাটাগরি-১ ঘোষণা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।” বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশে বিমানবাহিনী আয়োজিত তিন দিনের এ সেমিনারে চারটি মহাদেশের ১৬টি দেশের বিমান বাহিনীর সদস্য ও আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অথোরিটির (আইসিএও) প্রতিনিধিরা অংশ নেন। ষষ্ঠ ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট সেইফটি সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় প্রধানমন্ত্রীর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন বিমান বাহিনী প্রধান। স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সমন্বিতভাবে কাজ করে নিরাপদ বিমান উড্ডয়ন-চলাচল-অবতরণ নিশ্চিত করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “আমাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলো বিমান ভ্রমণকে আরও সহজতর করবে এবং পৃথিবীর অনেক দেশের সঙ্গে নতুন নতুন রুট সৃষ্টিতে সহায়তা করবে। সেই সঙ্গে আমাদের পর্যটন শিল্পের দ্রুত বিকাশ ঘটবে বলে আমরা আশাবাদী।” বিমানবাহিনীর আধুনিকায়নে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বেসমারিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মো মাহবুব আলী, বিমান বাহিনীর প্রধান মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
×