স্টাফ রিপোর্টার ॥ জীবন চলার পথে আবির্ভূত হয় নানা ঘটনাপ্রবাহ। চলতি পথের তেমন কিছু ঘটনা দাগ কেটে যায় মনে। আর জীবন চলার পথে মননে আঁচড় কাটা কিছু দৃশ্যকল্প জায়গা করে নিয়েছে চিত্রকরের চিত্রপটে। স্ফিত রেখার টানে উচ্চকীত রঙের ¯্রােতধারায় চিত্রিত জীবনাশ্রয়ী ছবিগুলো এঁকেছেন মহিউদ্দীন আহমেদ। আধা-বিমূর্ত রীতিতে আঁকা সেসব ছবি নিয়ে সাজানো হয়েছে প্রদর্শনী। ধানম-ির আঁলিয়স ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার গ্যালারিতে চলমান প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘পারিপার্শ্বের প্রভাব’ বা ‘ইমপ্রেশন অব সারাউন্ডিংস’।
চিত্রকলা সৃজনের ক্ষেত্রে শিল্পী মহিউদ্দীন আহমেদ তার পারিপার্শ্ব দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হন এবং শেষ পর্যন্ত তা তার শিল্পীত ব্যঞ্জনায় উদ্ভাসিত হয়ে প্রকাশিত হয়। এ প্রসঙ্গে মহিউদ্দীন আহমেদের ভাষ্য, আমি আমার চারপাশের জগৎ দ্বারা প্রভাবিত এবং এই দৃশ্যমান পৃথিবীর তরঙ্গাভিঘাত প্রভাবিত বিক্ষুব্ধ আমার চেতনা, সে সঙ্গে অবচেতন মনও। সময়ের পরিক্রমায় ও অনুধ্যানে, এক উদ্ভাসন, যাকে আমি কিছুতেই দমিয়ে রাখতে পারি না, বরং সেটা আমাকে ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে। এই প্রদর্শনীর চিত্রগুলো তাই আমার চলমান জীবনের চারপাশের প্রতিফলন। সবাই বলে যে জীবন পুষ্পশয্যা নয়; কিন্তু আমার মতে, কাগজের এই ঢেউ খেলানো ত্বকের মতোই, জীবনেরও রয়েছে উত্থান ও পতন, তার মোহন সুন্দর কিছু মুহূর্ত আর অবশ্যই তার চোরাগুপ্তা এবড়োখেবড়ো গহ্বর যা অতর্কিতে জীবনকেই দুমড়েমুচড়ে দিতে পারে, জ্বালিয়ে নিঃশেষ করে দিতে পারে। সেই সূক্ষ্ম মানবীয় মুহূর্তগুলোই আমি তুলে ধরতে চেষ্টা করি আমার ছবিতে। আমার ছবিগুলো সকল দর্শকের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে চিৎকার করে কোন চিরাচরিত বহুচর্চিত বার্তা বলতে চায় না। প্রতিটি দর্শক জীবন সম্পর্কে তার স্বকীয় চেতনা ও আদর্শের মাপকাঠিতে আমার চিত্রগুলোর ব্যাখ্যা নিজের নিয়মেই দাঁড় করানÑ সবকিছুকে ছাপিয়ে যাবার এমনই বৈশিষ্ট্য বিমূর্ত চিত্রকর্মের। এই প্রদর্শনীতে আমরা দেখতে পাই শিল্পীর আবেগের তীব্রতায় ক্ষিপ্ত তুলির আঁচড়ের বহিঃ প্রকাশ।