ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মোবাইল চুরির সন্দেহ

নিরীহ যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল পুলিশ কর্মকর্তা

প্রকাশিত: ১১:২৬, ২৩ অক্টোবর ২০১৯

নিরীহ যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল পুলিশ কর্মকর্তা

নিজস্ব সংবাদদাতা, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম, ২২ অক্টোবর ॥ জেলার সীতাকুণ্ডে পুলিশের বোনের মোবাইল চুরি সন্দেহে মোঃ এজাহার মিয়া (২৬) নামে এক নিরীহ যুবককে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে। পুলিশ কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল পারভেজ রায়হান বর্তমানে খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ লাইনের আর.আর.এফ’ তে কর্মরত আছেন। নিহত যুবক এজাহার উপজেলার ভাটিয়ারি ৪নং ওয়ার্ড এলাকার অলি গাজির বাড়ির মফিজুর রহমানের পুত্র। এদিকে পুলিশ হত্যাকা-ে জড়িত উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা রায়হান ও তার ভগ্নিপ্রতি মিজানুর রহমানকে আটক করেছে। গত ১৩ অক্টোবর স্থানীয় শিপ ব্যবসায়ী হারুনের মোবাইল চুরি হলে একই এলাকার জন প্রতিনিধির মাধ্যমে যুবক এজাহারকে ডেকে মোবাইল চুরির বিষয়টি অবগত করেন এবং চুরি করে থাকলে ২/৩ দিনের মধ্যে নিয়ে আসতে বলেন। কিন্ত এমন অবস্থায় ঘটনাস্থলে এসে হাজির হন পুলিশ লাইনে কর্তরত সহকারী উপ-পরিদর্শক মোঃ রায়হান। তিনি দাবি করেন এজাহার আমার বোনের মোবাইলও চুরি করেছে। এরপর থেকে এজাহার ভয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। পরে এজাহারের বউ, শ্বশুর ও শাশুড়িকে পুলিশ রায়হান বাসায় ডেকে নিয়ে তাদের অরিজিনাল ন্যাশনাল আইডি কার্ড নিয়ে ফেলেন এবং বলেন, এজাহারকে হাজির করতে। চাকরির সুবাদে অনেকটা নিরুপায় হয়ে তারা সোমবার রাতে এজাহারকে নিয়ে এক সঙ্গে পুলিশ রায়হানের বাসায় যান। রাতভর রায়হান নিজ বাসায় এজাহারকে পিছ মোড়া বেঁধে পেটাতে থাকে বউ, শ্বশুর ও শাশুড়ির উপস্থিতিতে। মঙ্গলবার ভোরে রায়হান অজ্ঞান এজাহারকে চোর বলে ভাটিয়ারি ইউনিয়ন পরিষদে বুঝিতে দিতে গেলে চৌকিদার তাকে গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। এরপর এজাহারের বউ শাশুড়িরা এসে স্থানীয় বিএসবিএ হাসপাতালে নিতে চাইলে এজাহার মৃত্যুবরণ করে। নিহত এজাহারের শাশুড়ি মরিয়ম বেগম জানান,‘পুলিশ রায়হান আমাদের সবার আইডি কার্ড নিয়েছে এক সপ্তাহ আগে। আমরা সকলে ফ্যাক্টরিতে চাকরি করি। সোমবার আইডি কার্ড আনতে গেলে পুলিশ এজাহারকে নিয়ে এলে পরে আইডি কার্ড ফেরত দিবে বলে জানায়। এই বিশ^াসে আমরা সোমবার রাতে আমার জামাইকে নিয়ে পুলিশ রায়হানের বাসায় যাই আইডি কার্ডের জন্য। এরপর পুলিশ আমার জামাইকে দড়ি দিয়ে পিছমোড়া বেঁধে রাতভর পেটায় আমাদের সামনে। মঙ্গলবার ভোরে অজ্ঞান অবস্থায় চৌকিদারকে বুঝিয়ে দিতে গেলে উনি না নেয়ার পর রাস্তায় ফেলে যায়। পরে আমরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই সে মৃত্যুবরণ করে।’ রাসেল নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘পুলিশ রায়হানের বাড়ি অন্য জেলা হলেও উনি এখানে নিজে বাড়ি করেন এবং ভাটিয়ারিতে উনার নিজের দুটি কার, একটি নোহা ও অন্য একটি গাড়ি রয়েছে। এই পুলিশ কর্মকর্তা দাপটে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। কক্সবাজার চাকরি করার সুবাদে অবৈধ ইয়াবা ব্যবসা করে উনি অনেক টাকার মালিক বনে গেছেন।’
×