ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভোলায় মসজিদের দোতালায় উল্লাস করে হামলা চালায়

প্রকাশিত: ০৯:১৫, ২২ অক্টোবর ২০১৯

ভোলায়  মসজিদের দোতালায় উল্লাস করে হামলা চালায়

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা ॥ ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় সংখ্যালঘু যুবক বিপ্লবের ফেসবুকের একটি ম্যাসেজকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ সমাবেশের নামে কি ঘটেছিলো যে ৪ টি প্রাণ হারাতে হলো। এটা কি পরিকল্পিত কোন ঘটনা । না কি কোন মহলের উছকানিতেই তৌহদী জনতার ব্যানারে সাধারন মুসুল্লিদের উত্তেজিত করা হয়। আর এর সাথেই এই বর্বরব তান্ডব চালানো হয়। এতে যোগ দেয় স্থানীয় কিছু সাট, জিন্সের প্যান্ট পড়া যুবক। তারা হাতে লাঠিসোটা নিয়ে মসজিদের দোতালায় উল্লাস করে হামলা চালায়। এমনকি ছাত্রদলের এক নেতাকেও প্রকাশ্যে নেতৃত্ব দিয়ে গুলি করার জন্য উসকানি দিতে দেখা যায়। সভা মঞ্চে জামায়াতের এক নেতা পর্যন্ত ছিলো বলেও বলছে স্থানীয়রা। হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হলেও কিন্তু এখনো কাউকে পুলিশ আটক করতে পারেনি। বোরহানউদ্দিনে তৌহদী জনতার প্রতিবাদের নামে তান্ডব ও পুলিশের এক্যাশনের ঘটনার একটি মোবাইল ভিডিও ফুটেজসহ অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বোরহানউদ্দিন ঈদগা মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশের এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা পুলিশের উপর চড়াও হয়। ওই মাঠের পাশেই মারর্কাস মসজিদ। মসজিদের দোতালার মেঝে অসংখ্য ইট। সিড়ি দিয়ে উৎশৃংখল কিছু লোক যাতে উপরে উঠতে না পারে তার জন্য মুসুল্লিরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে বাধা দিতে। কিন্তু তার পরও সার্ট গেঞ্জি জিন্স প্যান্ট পড়া কিছু অল্প ও মধ্য বয়সী যুবক দোতালায় ডুকে পড়ে। এর পর নিচ থেকে আর এক দল লোক লাঠি সোটা নিয়ে দাড়িয়ে রয়েছে। তারা এক পর্যায়ে লাঠি গুলো উপরে নিক্ষেপ করে হামলা কারীদের কাছে। এসময় কিছু যুবক ওই লাঠি নিয়ে তান্ডব চালায়। জানা যায়, মসজিদের ভিতরের রুমে তখন আটকা ছিলো পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার ও বরিশাল রেঞ্জর অতিরিক্ত ডিআইজি একে এম এহসানউল্লাহসহ পুলিশ সদস্যরা। তারা প্রাণ বাঁচাতে মসজিদের ভিতরে আশ্রয় নেয়। কিন্তু তাদের উপর হামলা চালাতে মসজিদের রুমের দরজা লাঠি দিয়ে ভাঙ্গার চেষ্টা চালানো হয়। প্রায় আধা ঘন্টা ধরে তান্ডব। এসময় কিছু মুসুল্লি উত্তেজিত যুবকদের থামাতে প্রাণ পন চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ দেখা যায় পরিস্থিতি সামালদিতে নিজেদের বাঁচাতে একের পর এক অতর্কিত ভাবে গুলি চালায়। এসময় এক পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়। তাকে স্থানীয়দের সহায়তায় ঘটনা স্থল থেকে উদ্ধার করা হয়। এদিকে ঘটনা শেষে ধেখা যায় নিহত হয় ৪ যুবক। আর গুলি বিদ্ধসহ আহত হয় দুই শতাধিক মানুষ। এদিকে ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিক্ষোভ সমাবেশ শুরুতে সভা চলাকালিন মাঠের ভিতরে এক যুবক ফেসবুকে আল্লাহ ও নবীকে নিয়ে ফেসবুকে ম্যাসেজ দেয়া যুবককে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকে ” ওকে গুলি করে মারে না কা।” বোরহান উদ্দিন পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ওই যুবকের ভিডিও ফুটেজ দেখেছেন। তিনি নিশ্চিত করে বলেন, ওই যুবকের নাম আশ্রাফ আলী সবুজ। সে ছাত্রদলের সভাপতি। এছাড়াও ওই সমাবেশে যুবদলের এক নেতা এবং প্রতিবাদ সভার মঞ্চে বোরহানউদ্দিন উপজেলা জামায়াতের সাবেক এক আমির ছিলেন। তিনি আরো বলেন, যা ঘটেছে তৌহিদী জনতার নামে বিএনপি জামায়াতে চক্রান্ত। এ ব্যাপারে ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরে আলম বোরহানউদ্দিন উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতির নাম আশ্রাফ আলী সবুজ বলে নিশ্চিত করেন। এদিকে বোরহানউদ্দিনে এখনো বিরাজ করছে চরম আতংক। এ ব্যাপারে ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাফিন মাহামুদ জানান, তারা ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ওই যুবকের ”ওকে গুলি করে মারে না কা ” ভিডিও টি নিশ্চিত হতে যাচাই বাছাই করছে। নিশ্চিত হলে বলা যাবে। তদন্ত চলছে। এটা নিয়ে কাজ চলছে। তিনিও ওই যুবকের নাম আশ্রাফ আলী সবুজ শুনেছেন। ওসিকে তদন্তের জন্য বলেছি। এছাড়াও যারা হামলা করেছে তাদের ভিডিও ফুটেজ দেখে আলাদা আলাদা ভাবে নাম পরিচয় বের করার কাজ চলছে। এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
×