ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মিডিয়া ট্রায়ালে আমার বিচার হয়ে গেছে ॥ ওমর ফারুক

প্রকাশিত: ১২:৫১, ২২ অক্টোবর ২০১৯

মিডিয়া ট্রায়ালে আমার বিচার হয়ে গেছে ॥ ওমর ফারুক

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে ৭১ বছর বয়সী ওমর ফারুক চৌধুরীকে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের শুরুর দিকে ‘পুলিশ কি এতদিন বসে বসে আঙ্গুল চুষেছে?’, ‘বিপদে পড়লে বউ ছাড়া কেউ থাকবে না’- এমন মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন দাপুটে এ নেতা। একপর্যায়ে দৃশ্যপট থেকে আড়ালে চলে যান তিনি। রবিবার রাতে তাকে ছাড়াই গণভবনে সংগঠনটির সভাপতিম-লীর সভা অনুষ্ঠিত হয়। যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করেন। বৈঠকে ওমর ফারুককে সংগঠনের শীর্ষ পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। আমি তো শাস্তি পেয়েছি-ই। কয়েক দিন ধরে গৃহবাস এবং কাল (সোমবার) দল থেকে গেট আউট। কষ্ট যা পাওয়ার পেয়েছি। সর্বোচ্চ কষ্ট পেয়েছি। এখন তো আর রাজনীতি করতে পারব না, নতুন যাত্রা শুরু করতে হবে দীর্ঘ সাত বছর ধরে সংগঠনটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা ওমর ফারুক ২৫ দিন ধরে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না। আওয়ামী লীগ বা যুবলীগের কার্যালয় কিংবা দীর্ঘদিনের প্রিয়স্থান যুব গবেষণা কেন্দ্রেও পাওয়া যাচ্ছে না তাকে। এমনকি যুবলীগের নেতাকর্মীরাও যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাচ্ছেন না। গত শুক্রবার যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের বৈঠকেও অনুপস্থিত ছিলেন ওমর ফারুক চৌধুরী। উত্থাপিত নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এবং পদ হারানোর বিষয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে সোমবার ফোনে কথা হয় ওমর ফারুক চৌধুরীর। অভিযোগ ও পদ হারানোর বিষয়ে তিনি তার নিজস্ব মতামত ও অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। জাগো নিউজ : বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে, ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট আপনাকে চাঁদার ভাগ দিতেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী? ওমর ফারুক : সম্রাট রিমান্ডে কী বলেছেন তা আপনি নিজে দেখেছেন বা শুনেছেন কী? উনি (সম্রাট) যা খুশি বলতে পারেন। এসব তথ্য আমলে নিয়ে বিচারপ্রক্রিয়া কেমন হয় তা দেখার অপেক্ষায় আছি। নানা বিষয়ে আমার নামে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। তবে সব কিছুরই একটা প্রক্রিয়া আছে। সেই প্রক্রিয়া অনুযায়ী আমার ব্যাংক এ্যাকাউন্ট তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদি তাদের মনে হয় ক্যাসিনোর টাকা আমার ব্যাংকে ঢুকেছে তাহলে তারা আমাকে নোটিস দেবে, এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড), দুদকে (দুর্নীতি দমন কমিশন) পাঠাবেন। তারা তদন্তে প্রমাণ পেলে উচ্চ আদালতে জানাবেন। আমি সেখানে যাব। জাগো নিউজ : অভিযোগ ওঠায় তো আপনাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়া হলো। অভিযোগ না থাকলে... ওমর ফারুক : এখন পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে যা হয়েছে তা মিডিয়া ট্রায়ালের কারণে হয়েছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম স্বাধীন। বাংলাদেশের গণমাধ্যম ৩০-৩৫ দিন ধরে বলছে যে, ক্যাসিনোকা-সহ নানা অপরাধে চেয়ারম্যান (যুবলীগ) অর্থাৎ আমি ওমর ফারুক জড়িত। মিডিয়া ট্রায়ালে আমার বিচার হয়ে গেছে। ‘আপনারা (সাংবাদিক) লেখনির মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, আমি আর দল করতে পারব না, রাজনীতি করতে পারব না। মিডিয়া ট্রায়াল শেষ। আমাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এর মানে ‘ইউ আর নো মোর’। এখন আমি যতই সত্য কথা বলি, তা মিথ্যা ফিকশন হয়ে যাবে। তাই আর কিছু বলতে চাই না।’ জাগো নিউজ : অনেক দিন হলো আপনাকে দলীয় কার্যালয়ে দেখা যাচ্ছে না। নেতাকর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন না বলে শোনা যাচ্ছে... ওমর ফারুক : মিডিয়া আমার বিষয়ে যা লিখছে, যা দেখাচ্ছে পাবলিক তাই খাচ্ছে। আমার এখন উচিত ঘরে বসে থাকা। করণীয় কিছু নেই। এজন্য অবশ্য আমি মিডিয়াকে কোন দোষ দিতে চাই না। কারণ বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম স্বাধীন। আমি তো শাস্তি পেয়েছিই। কয়েক দিন ধরে গৃহবাস এবং কাল (সোমবার) দল থেকে গেট আউট। কষ্ট যা পাওয়ার পেয়েছি। সর্বোচ্চ কষ্ট পেয়েছি। এখন তো আর রাজনীতি করতে পারব না, নতুন যাত্রা শুরু করতে হবে। এখন ব্যবসা করব।
×