স্টাফ রিপোর্টার ॥ নাটক, গান, নাচ, আবৃত্তি, মূকাভিনয়’সহ শিল্পের নানা মাত্রায় দশ দিনব্যাপী গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবের পর্দা নামল রবিবার। সমাপনী সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় আরণ্যক নাট্যদলের নাটক ‘ময়ূর সিংহাসন’, পরীক্ষণ থিয়েটার হলে সময় প্রযোজিত নাটক ‘ভাগের মানুষ’ ও স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় থিয়েটার ৫২ প্রযোজিত নাটক ‘নননপুরের মেলায় একজন কমলাসুন্দরী ও একটি বাঘ আসে’। একই সময়ে নাটক সরণিখ্যাত বেইলি রোডের মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় থিয়েট্রন ঢাকা প্রযোজিত নাটক ‘সিচুয়ানের সুকন্যা’।
নাটক মঞ্চায়নের আগে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চ ও সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে নাচ, গান, আবৃত্তি ও পথনাটক পরিবেশন করে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীরা। উন্মুক্ত মঞ্চে পথনাটক মঞ্চায়ন করে গোল্লাছুট, ‘সাম্প্রতিক ঢাকা’ শিরোনামে আবৃত্তি প্রযোজনায় অংশ নেয় উচ্চারণ একাডেমি, দলীয়সঙ্গীত পরিবেশন করে দৃষ্টির শিল্পীরা, ত্রিরত্ন কলাকেন্দ্র ও বৈচি একাডেমির পরিবেশনায় ছিল দলীয় নৃত্য এবং সপ্তকলির আসরের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘চাঁদ বনিকের পালা’ আবৃত্তি প্রযোজনায় অংশ নেয় কষ্ঠশীলন পরে ‘আমার পরিচয়’ শিরোনামের গীতি আলেখ্য পরিবেশন করে আনন্দন।
বাংলাদেশ ও ভারতের অভিন্ন সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা বিনিময়ে ১২ অক্টোবর থেকে অষ্টমবারের মতো শুরু হয় ‘গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৯’। গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদ আয়োজিত ১০ দিনব্যাপী এ উৎসবে অংশ নেয় ভারতের ৪টি, ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ৩৬টি নাট্যদলসহ আবৃত্তি, সঙ্গীত, নৃত্য, পথনাটকের মোট ১২১টি সংগঠন।
শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ১০ দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য নাট্যজন আসাদুজ্জামান নূর ও ভারতের নাট্যজন মেঘনাদ ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে. এম. খালিদ। এছাড়া উদ্বোধনী পর্বে সম্মানিত অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকী, ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক ড. নিপা চৌধুরী, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি নাট্যজন মান্নান হীরা ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সেক্রেটারি জেনারেল নাট্যজন কামাল বায়েজীদ। সভাপতিত্ব করেন উৎসব পর্ষদের আহ্বায়ক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ।
উৎসব সহযোগিতায় ছিল সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি ও ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন।
উৎসব উদ্যাপন পর্ষদের আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছ বলেন, এ উৎসবের মধ্যদিয়ে যে মেসেজটি আমরা দিতে চেয়েছি তা হচ্ছে সাংস্কৃতিক শক্তি কিন্তু মহিরুহসম। আত্মকেন্দ্রিক একটি সমাজ গড়ে তোলার যে অসম প্রতিযোগিতা চলছে সে মুহূর্তে এই সাংস্কৃতিক উৎসব ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করি। আমরা মনেকরি বাংলাদেশ শুধু নয় সময়ের ব্যবধানে এই ৭ বছরে এই উপমহাদেশে সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক উৎসবটি এখন ‘গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব। তিনি বলেন, শুক্রবার ও শনিবার সবগুলো নাটকের প্রদর্শনীতে আসন পূর্ণ হয়েছিল। শুধু জাতীয় নাট্যশালায় শুক্রবারে ৯৮ হাজার টাকার টিকেট বিক্রি হয়েছিল। এমনকি এদিন সঙ্গীত ও নৃত্যকলা ভবন মিলনায়তনে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ১৪ হাজার টাকার টিকেট বিক্রি হয়েছে। এটি অভাবনীয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: