ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সোনাদিয়ায় শিল্পকারখানা স্থাপন নয় ॥ নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ২১ অক্টোবর ২০১৯

 সোনাদিয়ায় শিল্পকারখানা স্থাপন নয় ॥ নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোনাদিয়ায় কোন ধরনের শিল্প কারখানা স্থাপন না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা প্রদান করে বলেছেন, কক্সবাজারের এই দ্বীপটিতে শুধু ইকো ট্যুরিজম উন্নত করা হবে। -খবর বাসসর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার বিকেলে তার কার্যালয়ে (পিএমও) ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর’ এর ওপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা উপভোগকালে সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশনা প্রদান করেন। বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষ (বেজা) এই শিল্প নগরের বিভিন্ন আঙ্গিকগত দিক তুলে ধরে এই পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনটি উপস্থাপন করেন। প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী গভীর মনযোগের সঙ্গে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন প্রত্যক্ষ করেন এবং এই বিষয়ে কিছু নির্দেশ প্রদান করেন। শেখ হাসিনা বেজা কর্তৃপক্ষকে শ্রমিকদের আবাসন এবং একইসঙ্গে শিল্প এবং আইটি ক্ষেত্রের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশের বিষয়ে লক্ষ্য রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি একসঙ্গে এই শিল্প নগরকে জলোচ্ছ্বাস এবং সাইক্লোনসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প এবং বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। শিল্প, কর্মসংস্থান, উৎপাদন ও রফতানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বৈচিত্র আনয়নের মাধ্যমে দ্রুত অর্থনৈতিক বিকাশকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বেজা দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর (বিএসএমএসএন)’ এর বিকাশ সাধন করছে। চট্টগ্রাম এবং ফেনী জেলার তিনটি উপজেলা-মীরেরসরাই, সীতাকুন্ড এবং সোনাগাজীর প্রায় ৩০ হাজার একর জমির ওপর বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেলের তীরবর্তী ২৫ কিমি এলাকা নিয়ে এই শিল্প নগর প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। ভিয়েতনামের সঙ্গে বাণিজ্য জোরদারের আহ্বান ॥ এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক সুবিধার স্বার্থে বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনামের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বিশাল জনসংখ্যা রয়েছে এবং এই অবস্থাকে কাজে লাগিয়ে আমরা আমদের ব্যবসা-বাণিজ্যকে বৃদ্ধি করতে পারি।’ ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ত্রাণ ভ্যান খোয়া রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) তাঁর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতকালে শেখ হাসিনা একথা বলেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ভিয়েতনাম বাংলাদেশীদের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান দখল করে রয়েছে এবং দুটি রাষ্ট্রই তাদের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ সবসময় ভিয়েতনামের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতার হস্তকে প্রসারিত করেছে। স্বাধীনের পর বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দলের ভিয়েতনাম সফরের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার বড় ছেলে শেখ কামালও ওই দলে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর শুভেচ্ছা প্রেরণ করেন এবং ২০১২ সালে তাঁর ভিয়েতনাম সফরের কথাও স্মরণ করেন। ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সঙ্গে ভিয়েতনামের ব্যবসা, পর্যটন এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা দু’জন দু’জনার কাছ থেকে শিখতে পারি।’ ত্রাণ ভ্যান খোয়া দুই দেশের মধ্যে বাৎসরিক ব্যবসার পরিমাণ ৮শ’ থেকে ৯শ’ মিলিয়ন ডলার উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা একে এক বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চাই।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চমকপ্রদ উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশে তার অবস্থানকালীন তিন বছরে তিনি এই প্রশংসনীয় উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছেন।’ ‘এই উন্নয়নের দরুন বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তাঁর শক্তিশালী অবস্থান করে নিয়েছে, ’যোগ করেন তিনি। দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনাম বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে।’ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রদূত উভয়েই বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনামের মধ্যে আগামীর দিনগুলোতে সম্পর্ক আরও গভীর হবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
×