ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাইব্যুনাল না হওয়া পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মাদকের মামলা চলবে

প্রকাশিত: ১০:৩৮, ২১ অক্টোবর ২০১৯

  ট্রাইব্যুনাল না হওয়া পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মাদকের মামলা চলবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮-এর ৪৪(১) ধারা অনুসারে ট্রাইব্যুনাল না হওয়া পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫(২) ধারা অনুযায়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মাদকের মামলা চলবে বলে আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মাদক মামলার আসামি মোঃ মাসুদুল হক মাসুদকে স্থায়ী জামিন দিয়েছে আদালত। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃতির সত্যতা মিলেছে। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ প্রদান করেছে। অন্যদিকে পাসপোর্ট করতে দিয়ে নির্ধারিত সময়ে না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নূর। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পাওনা ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা আদায়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে আপীল করেছে বেসরকারী মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা। গ্রামীণফোনের কাছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) প্রায় ১২ হাজার ৫শ’ ৮০ কোটি টাকা দাবি আদায়ের ওপর হাইকোর্টের দুই মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮-এর ৪৪(১) ধারা অনুসারে ট্রাইব্যুনাল না হওয়া পযন্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫(২) ধারা অনুযায়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মাদকের মামলা চলবে বলে আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আসামি মোঃ মাসুদুল হক মাসুদকে জামিনের বিষয়ে জারি রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জামিন বহাল থাকবে। আদালত বলেছে, আসামি জামিনের অপব্যবহার করলে তার জামিন বাতিল করা হবে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দেন। আদালতে আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আল ফয়সাল সিদ্দিকী। রাষ্ট্রপক্ষে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ সারওয়ার হোসেন বাপ্পী উপস্থিত ছিলেন। আদেশের পর এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, মাদক মামলার বিচারে ট্রাইব্যুনাল হয়নি। আদালত এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলে আইনমন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করি। আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, শীঘ্রই পদক্ষেপ নেয়া হবে। আদালত বলেছে, মাদক আইনের ৪৪(১) ধারা অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল না হওয়া পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫(২) ধারা অনুযায়ী অন্যান্য আইনের বিচারের বিধান অনুযায়ী হবে। এর আগে গত ২৫ আগস্ট রাজধানীর বংশালে মাদক মামলার আসামি মাসুদের জামিন আবেদনের ওপর শুনানিকালে মাদক মামলার নতুন আইন নিয়ে গেজেট প্রকাশ না হওয়ার বিষয়টি আদালতের নজরে আসে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ইয়াবা ও হেরোইনসহ গত বছর ২৭ ডিসেম্বর মাসুদুল হক মাসুদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ বিষয়ে বংশাল থানায় দায়ের করা মামলায় গত ২২ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরপরই নিম্ন আদালতে জামিন চান আসামি। কিন্তু ওই আদালত জামিনের আবেদন খারিজ করেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন মাসুদ। আবেদনের ওপর শুনানিকালে নথি পর্যালোচনা করেন হাইকোর্ট। নথিতে দেখা যায়, মাদক মামলাটি আমলে নিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর তার বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর তৃতীয় যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে পাঠিয়েছেন। আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে মামলাটি বিচারের জন্য তৃতীয় মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানোয় উভয় বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চায় হাইকোর্ট। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিকৃতির সত্যতা মিলেছে ॥ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃতির সত্যতা মিলেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ সত্যতার কথা বলা হলেও সুনির্দিষ্টভাবে কারও নাম বলা হয়নি। রবিবার প্রতিবেদনটি দায়সারা মন্তব্য করে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ। পরে আদালত আগামী ৩ নবেম্বর এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছে। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কে এম সাইফুদ্দিন আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। ২০১৮ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে বঙ্গবন্ধুর এবং ২০১৯ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃত করার অভিযোগ নিয়ে চলতি বছর যশোর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল রিটটি করেন। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়। এর ধারাবাহিকতায় তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনটি পাঠান হাইকোর্টে। যার ওপর শুনানি হয় রবিবার। প্রতিবেদনের মন্তব্যে অংশে বলা হয়, ২০১৮ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির জনকের ছবির ওপরে উপাচার্যের নাম লেখা সমীচীন হয়নি। এজন্য কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারে না। ২০১৯ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডার পুনঃমুদ্রিত। প্রথম প্রিন্ট করা কপিতে জাতির জনকের ছবি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি (ছবির মাথা কেটে) বিকৃত করা হয়েছে, তা প্রথম মুদ্রিত ক্যালেন্ডার থেকে স্পষ্টতই প্রমাণ পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল তা করেননি।
×