ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পটিয়া থেকে গাঢাকা দিয়েছে রোহিঙ্গারা

প্রকাশিত: ০১:৩৬, ২০ অক্টোবর ২০১৯

পটিয়া থেকে গাঢাকা দিয়েছে রোহিঙ্গারা

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া ॥ পুলিশের তাড়া খেয়ে চট্টগ্রামের পটিয়ায় রোহিঙ্গা নাগরিকরা গাঢাকা দিয়েছে। উপজেলার ১৭ ইউনিয়ন ও পৌর সদরে এতদিন রোহিঙ্গারা বসতি গড়ে তুলেছেন। তারা কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে পটিয়াতে বসবাস করছে। অবশ্যই এর আগে থেকেই পটিয়ায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা ছিল। অনেকেই ভুয়া চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট, জন্মসনদ নিয়ে বিদেশেও পাড়ি জমিয়েছে। উপজেলার হাইদগাঁও, কেলিশহর, কচুয়াই, শ্রীমাই, বড়লিয়া, পটিয়া পৌরসভার দক্ষিণ গোবিন্দারখীল, উত্তর গোবিন্দারখীলসহ বিভিন্ন এলাকায় রোহিঙ্গাদের থাকার কলোনি রয়েছে। সম্প্রতি চুরি, ছিনতাই, কিশোর গ্যাং এর সঙ্গে রোহিঙ্গা নাগরিকরা জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়ায় পুলিশ অভিযান শুরু করেন। পুলিশের অভিযানে দেড় শতাধিক রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করে ক্যাম্পে ও বিদেশী নাগরিক বাংলাদেশে বসবাস করার অপরাধে থানায় কয়েকটি মামলা হয়েছে। পুলিশের তৎপরতার কারণে বর্তমানে এলাকা ছেড়ে গাঢাকা দিয়েছে রোহিঙ্গারা। স্থানীয়দের অভিযোগ পুলিশ গ্রেফতার করে ক্যাম্পে পাঠালেও তারা কৌশলে পুনরায় সেখান থেকে পালিয়ে আসতে শুরু করেছে। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রাখা দরকার। দৈনিক জনকণ্ঠে গত ২৮ আগস্ট ‘অঘোষিত রোহিঙ্গা ঘাঁটি পটিয়া’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে পুলিশ রোহিঙ্গাদের গ্রেফতারে মাঠে নামেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পটিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রোহিঙ্গা নাগরিকরা বসবাস করে আসছিল। পৌর সদরের বিওসি রোড এলাকার তিতা গাজীর পুলের উত্তর পাশে জাহাঙ্গীরের কলোনি, দক্ষিণ পাশে আবদুল হামিদের কলোনি, ফজৌরপুলের দক্ষিণ পাশে রফিক আহমদের কলোনি, বিওসি রোডের হংসিপাড়া পুলের উত্তর পাশে নাছিরের কলোনি, হাইদগাঁও আহমদ রহমানের কলোনি, পশ্চিম হাইদগাঁও হংসের পাড়া মসজিদের পাশে ফজল হক দারোগার কলোনি, বিওসি রোড নয়া হাটের পাশে আমির হোসেনের কলোনি, বিওসি রোডের বাঙ্গাপুলের উত্তর পাশে আহমদ রহমানের কলোনি, হাইদগাঁও ঝিয়ারপাড়া কেরাং সামশুর কলোনিতে দীর্ঘদিন ধরে কয়েকশ রোহিঙ্গা পরিবার বসবাস করছে। সাম্প্রতিক সময়ে পটিয়ায় গরু চুরি, ছিনতাই, কিশোর গ্যাং বন্ধ করতে পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন রোহিঙ্গা নাগরিকদের টার্গেট করেন। এর আগে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান প্রতিটি ইউনিয়নে মাইকিং করে রোহিঙ্গা নাগরিকদের কক্সবাজার ক্যাম্পে ফিরে যেতে নির্দেশ দেন এবং রোহিঙ্গাদের যারা আশ্রয়প্রশয় দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধেও আইন ব্যবস্থা নিবেন বলে ইউএনও মাইকিং এ জানান। পটিয়া থানা পুলিশ এ পর্যন্ত দেড় শতাধিক রোহিঙ্গা আটক করে ক্যাম্পে পাঠিয়েছে। তবে অনেকে ফিরে আসার কারণে পুলিশ বাদী হয়ে অবৈধ অভিবাসী আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পর অনন্ত ৪-৫শ রোহিঙ্গা পরিবার স্বেচ্ছায় ক্যাম্পে ফিরে গেছেন বলে ওসি বোরহান উদ্দিন জানান। পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানিয়েছেন, কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গারা পটিয়াতে পালিয়ে আসলেও পুলিশের টানা অভিযানের কারণে বর্তমানে তারা গাঢাকা দিয়েছে। এর আগে পুলিশ দেড় শতাধিক নারী-পুরুষকে আটক করে ক্যাম্পে পাঠিয়েছে। কিন্তু তারা পালিয়ে পুনরায় ফিরে আসার কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রাখবেন বলে জানান।
×