ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নীলফামারীতে ধর্ষিত বিধবার আত্মহত্যা, পালিয়েছে ধর্ষক মেম্বার

প্রকাশিত: ১১:১৫, ২০ অক্টোবর ২০১৯

নীলফামারীতে ধর্ষিত বিধবার আত্মহত্যা, পালিয়েছে ধর্ষক মেম্বার

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ ইউপি সদস্য কর্তৃক এক বিধবা নারী ধর্ষণের শিকার হয়ে মামলা করতে না পারায় আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকার বেশ কিছু প্রভাবশালী ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের ৯৯৯ কল সেন্টারে মোবাইল করে এলাকাবাসী অভিযোগ জানালে শনিবার বিকেলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছচাঁপানী ইউনিয়নের তিস্তা নদীর পূর্বছাতুনামা চর গ্রাম হতে ওই বিধবার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে ধর্ষক ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম (৪৮)। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগে জানা যায়, ওই গ্রামের আব্দুল জলিল দেড় বছর আগে অসুখে ভুগে মারা যায়। তার বিধবা স্ত্রী জাহানারা বেগম (৪৫) এক ছেলে নিয়ে ওই চর গ্রামে বসবাস করত। ছেলেটি কাজের সন্ধানে পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট যায়। বাড়িতে একাই ছিলেন বিধবা। ওই বিধবার দুই ছোট বোন চর গ্রামের অর্ধ কিলোমিটার অদূরে স্বামীর বাড়িতে থাকেন। ওই দুই বোন নাসিমা ও নাজমাসহ এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, ১৬ অক্টোবর রাতে উক্ত ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বিধবা ভাতার কার্ড করে দেবার নামে ওই বিধবার বাড়িতে যায়। এক পর্যায়ে ইউপি সদস্য ওই বিধবাকে ধর্ষণ করতে থাকলে তার চিৎকারে লোকজন ছুটে এসে ইউপি সদস্যকে হাতেনাতে আটক করে। এরপর ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামের পক্ষ নিয়ে কিছু প্রভাবশালী তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ওই বিধবা ঘটনার পর দিন থানায় মামলা করার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে থানায় যেতে চাইলে পথে প্রভাবশালীরা তাকে বাধা দিয়ে ফিরিয়ে দেয়। পাশাপাশি মামলা না করার জন্য হুমকি দিতে থাকে। শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে চর গ্রামের লোকজন ওই বিধবার খবর নিতে গেলে দেখা যায় তার মৃতদেহ গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঘরে ঝুলছে। নিমিষে ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে প্রভাবশালীরা পুলিশকে খবর না দেয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ওই বিধবার দুই ছোট বোন এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পুলিশের ৯৯৯ কল সেন্টারে মোবাইল করে বিস্তারিত জানায়। এরপর সেখানে ডিমলা থানা পুলিশ ছুটে এলে প্রভাবশালীরাসহ ধর্ষক ইউপি সদস্য পালিয়ে যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ ওই বিধবা ধর্ষণের মামলা করতে ব্যর্থ হওয়ায় আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। ডিমলা থানার ওসি মফিজ উদ্দিন শেখ জানান, ঘটনাটি মর্মান্তিক। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় বিধবার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। রবিবার জেলার মর্গে লাশের ময়না তদন্ত করা হবে ।
×