নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ১৮ অক্টোবর ॥ পটুয়াখালীর বাউফলে যৌতুকলোভী এক পাষ- স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন রোজিনা বেগম (২৫) নামের এক গৃহবধূ। নির্যাতিত ওই গৃহবধূকে বৃহস্পতিবার রাতে বাউফল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থ গৃহবধূ রোজিনা জানায়, ৪ বছর আগে বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের বাজেমহল গ্রামের আবদুল রাজ্জাক হাওলাদারে ছেলে রুহুল আমিনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। কালিশুরী ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে তার বাবার বাড়ি। বিয়ের সময় আমার বাবা জীবিত ছিল না। বড়ভাই ইউসুফ হাওলাদার বোনের সুখের জন্য দর্জির কাজ করে স্বর্ণালঙ্কার ও আসবাবপত্রসহ প্রায় ২ লাখ টাকার মালামাল দেয় বোন জামাইকে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে স্বামীর অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে রোজিনার জীবন। মাঝে মধ্যে মারধরসহ খেতে না দেয়ার মতো অমানবিক জীবন কাটাতে হতো রোজিনাকে। বিয়ের ৪/৫ মাস পর মোটরসাইকেল কেনার দাবি করেন।
রোজিনার বড়ভাই ইউসুফ হাওলাদার জানান, রুহুল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তার কাছ থেকে যৌতুকের টাকা নেয়। বোনের সুখের কথা চিন্তা করে প্রথমে ৯৫ হাজার পরে ৩৫ হাজার এবং কয়েক মাস আগে ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই রুহুল আমিন বায়না ধরে তাকে ব্যবসা করার জন্য ১ লাখ টাকা দিতে হবে। বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক দেয়ার অক্ষমতার কথা ভেবে রোজিনা দিনের পর দিন স্বামীর অত্যাচার নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করেছেন। কথায় কথায় তাকে মারধর করা হতো। আইরিন (৩) ও জামিলা (৪ মাস) নামের তাদের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। পাষন্ড বুধবার রাতে আবার ১ লাখ টাকার জন্য রোজিনাকে চাপ দেয়। এ সময় অস্বীকার করলে নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে রোজিনার ওপর। শরীরের গোপন অঙ্গে আঘাত করা হয়েছে যাতে কাউকে দেখাতে না পারে। শরীরের স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে জখম করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়। পরের দিন খবর পেয়ে বড়ভাই ইউসুফ স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য লিপি আক্তারের সহায়তায় স্বামীর বাড়ি থেকে রোজিনাকে উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার রাতে বাউফল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় বাউফল থানার ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর বলেন, এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
