বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে সুন্দর সময় এখন ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাণিজ্য যুদ্ধের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে সুন্দর সময় এখন পার করছি আমরা। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে এখন সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভার কয়েকটি বৈঠকে অংশগ্রহণ করে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। এর আগে তিনি আইএমএফের দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্ট উয়িং শেফার, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, ভুটানের নির্বাহী পরিচালক অপর্ণা সুভ্রামনি, ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারমন ও আইএমএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মিথসুহিরোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে চলেছি। গত দুই দশকে পৃথিবীতে কয়েকবার অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল। ১৯৯৭ সালে সারা বিশ্বে যে মহা অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল তাতে ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াসহ এশিয়ার বেশ কিছু দেশ চরম অবস্থায় পতিত হয়। আর ২০০৮ সালের বিপর্যয়ে খোদ আমেরিকাসহ অনেক দেশে চরম অবস্থার সষ্টি হয়। কিন্তু তখনও আমাদের অর্থনীতি বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়নি। এখন পৃথিবীতে তৃতীয় চরম অবস্থা বিরাজ করছে আর সেটি হচ্ছে তথাকথিত বাণিজ্য যুদ্ধ। চলমান এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাবে সারাবিশ্বের অর্থনীতিতে নিম্নমুখিতা দেখা দিয়েছে। এতে চীনের প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক চার শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে নেমে গেছে। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, কিন্তু এতসবের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। এটাকে কোন কল্প কাহিনীর মতো মনে হলেও এটাই বাস্তবতা। এতে সবচেয়ে বড় অবদান বাংলাদেশের মানুষের। কেননা আমাদের উৎপাদন আর চাহিদা আমাদের নিজেরাই তৈরি করি। ফলে আমাদের আথিক খাতে এই মুহূর্তে কোন রকম ঝুঁকি নেই। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বাংলাদেশের অর্থনীতির ভূয়সী প্রশংসা করেছে। আমাদের অগ্রগতি দেখে তারা অভিভূত। অন্য দেশগুলোর কাছে আমাদের তারা ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করছে। আইএমএফে তাদের আউটলুকে বলেছে, এ বছর শেষে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। যদিও এটি আমাদের প্রক্ষেপণ থেকে বেশ কম। তথাপিও আইএমএফের ইতিহাসে অন্য যে কোন দেশের তুলনায় এটি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের রয়েছে কর্মদক্ষ ভবিষ্যত যুবশক্তির সম্ভাবনা। আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ ৩ কোটি যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে এবং তখন কারোর কর্মসংস্থানের অভাব থাকবে না। বর্তমানে বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা খুব ভাল অবস্থানে রয়েছে। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থানের প্রশংসা করেছে। প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ বিশ্বসেরা। দুটি দ্বীপ রাষ্ট্র ছাড়া বাংলাদেশের সামনে কেউ নেই। দেশের সার্বিক অগ্রগতির রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জনে সকল পর্যায়ের সকল পেশা ও শ্রেণীর মানুষের অবদান রাখছেন। কৃষি খাতে ২০, শিল্পে ৩০ ও সেবাখাতের অবদান রয়েছে ৫০ শতাংশ। এ সময় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অর্থ বিভাগের সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ, বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ইকোনমিক মিনিস্টার মোঃ সাহাবুদ্দিন পাটোয়ারী প্রমুখ।