ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উলিপুরে সেতু আছে সড়ক নেই ॥ জনদুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৮:৩৫, ১৯ অক্টোবর ২০১৯

উলিপুরে সেতু আছে সড়ক নেই ॥ জনদুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ উলিপুরে দীর্ঘদিন একটি ব্রিজের অভাবে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হচ্ছেন দুই গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। ব্রিজ আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক নেই। দীর্ঘদিনেও সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট না করায় এলাকাবাসী চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছেন বলে এলাকাবাসীদের অভিযোগ। ফলে ব্রিজ নির্মাণ হলেও ভোগান্তি কমেনি দুই ইউনিয়নের ২০ হাজার মানুষের। জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণী ইউনিয়নের পূর্ব কাশিয়াগাড়ি গ্রাম ও হাতিয়া ইউনিয়নের বালাচর গ্রামের মানুষজন ব্রিজের অভাবে দীর্ঘদিন খুঁটির ওপর ঝুলন্ত বাঁশ দিয়ে চলাচল উপযোগী একটি সাঁকো তৈরি করে চলছেন। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে কলার গাছের ভেলা বানিয়ে সে রাস্তা পারাপার করতে হতো। এ পরিস্থিতিতে গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বন্যা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের আওতায় পূর্ব কাশিয়াগাড়ি গামী সড়কের খালের ওপর ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৬ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। চলতি বছরের বন্যার পানির তীব্র স্র্রোতের তোড়ে ব্রিজের সংযোগ সড়কের মাটি সরে যায়। বন্যা চলে যাওয়ার প্রায় আড়াইমাস অতিবাহিত হলেও তা ভরাট করার উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন এখানকার স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাগামী ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষকসহ দুই গ্রামের অন্তত : ২০ হাজার মানুষ। এমতাবস্থায় বর্তমানে এলাকাবাসীরা নিজে চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে কোনমতে ঝুঁকি নিয়েই এ পার থেকে ওপারে চলাচল করছেন। ধামশ্রেণি এলাকার তাওয়াবুল হক জানান, আমাদের জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে না আসলে এটা ভাল করবে কে? একই গ্রামের জিয়াউল ইসলাম, খতিব উদ্দিন ও মিলি বেগম জানান, আমরা এখন নিরুপায়। এতো ভাঙ্গা ব্রিজে একপাশেও রাস্তা নেই। বন্যায় ভেঙ্গে চৌচির হয়েছে। দেখার মনে হয় কেউ নেই। স্কুল ছাত্রী মর্জিনা খাতুন ও সায়েদুল জানায়, ব্রিজটি নির্মাণের অনেকদিন পর সংযোগ সড়কের মাটি ভরাট করা হলেও বন্যার পানির তোড়ে তা আবারও ভেসে যায়। আমরা স্কুলে যাই অনেক কষ্টে। স্যাররা স্কুল না গেলে রাগ করে। আমাদের বাবা মা ও চাচারা সবাই মিলে নিজেরাই বাঁশের সাঁকো তৈরি করে দিয়েছেন। যাতে আমরা সবাই চলাচল করতে পারি। উলিপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজদ্দৌলা বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কেউ বলেননি। তবে এখন জানার পর কোন প্রকল্প নেয়া যায় কিনা তা দেখা হবে। কিছুদিনের মধ্যে মানুষের চলাচলের জন্য সংযোগ সড়কে মাটি ভরাটের ব্যবস্থা করা হবে বলেও তিনি জানান। নওগাঁয় তিন বছর কাজ বন্ধ নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, রাণীনগর উপজেলার সর্বরামপুর গ্রামে তিন বছর যাবত সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে আছে। এই সেতুটি নির্মাণ না হওয়ার কারণে কয়েক গ্রামের মানুষ পড়েছে চরম দুর্ভোগে। এলাকার সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের চলাচলের সুবিধার্থে সেতু নির্মাণের প্রাথমিক কাজ হিসেবে খালের দুই পাড়ে শুধু দুটি খাম্বা (পিলার) তৈরির পর রহস্যজনক কারণে এই নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে ও উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতর এই সেতুটির তত্ত্বাবধানে ছিল। দীর্ঘদিন ধরে এই সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় ওই এলাকার দুইটি ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রামে বসবাসরত সাধারণ মানুষসহ স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীদের রতনডারি খাল পার হতে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। তবে শুষ্ক মৌসুমে হেঁটে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো ও নৌকাই একমাত্র ভরসা এলাকাবাসীর। রতনডারি খালের দুই পাশে অবস্থিত কাশিমপুর ও গোনা ইউনিয়ন পরিষদ। কিন্তু রতনডারি খালের সর্বরামপুর ও ভবানীপুর চৌতাপাড়া নামকস্থানে স্থানীয়রা বছরের পর বছর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করে আসছে। এই সাঁকো দিয়ে সর্বরামপুর, কাশিমপুর, ডাঙ্গাপাড়া, এনায়েতপুর, ভবানীপুর, দুর্গাপুর, গ্রামসহ দুইটি ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রামের জনসাধারণ চলাচল করে থাকে। জানা গেছে, রানীনগর উপজেলা পরিষদের রাজস্ব উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রায় ১৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরে কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বরামপুর-ভবানীপুর গ্রাম সংলগ্ন রতনডারি খালের ওপর ফুট ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয় বিগত ২০১৬ সালে। কাজটির ঠিকাদারি দায়িত্ব পান নওগাঁ সদরের গোলাম কিবরিয়া। দরপত্র অনুসারে শুষ্ক মৌসুমে ওই খালের দুই পাড়ে দু’টি খাম্বা (পিলার) নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু পরে রহস্যজনক কারণে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তিন বছর অতিবাহিত হলেও নির্মাণ কাজ আর চোখে পড়েনি।
×