ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পুতিনের বিশেষ দূতের তেহরান সফর

প্রকাশিত: ০২:১১, ১৮ অক্টোবর ২০১৯

পুতিনের বিশেষ দূতের তেহরান সফর

অনলাইন ডেস্ক ॥ রুশ প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত আলেক্সান্ডার ল্যাভারান্তিভ তেহরানে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী শামখানির সঙ্গে বৈঠকে সিরিয়ার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেছেন। এ সাক্ষাতে আলী শামখানি সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুর্কি সেনাবাহিনীর আগ্রাসনের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, "ওই এলাকায় নিরাপত্তাহীনতা ও সংকট সৃষ্টি করতে পারে এমন যে কোনো কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা উচিত।" সিরিয়ায় সংকট সমাধানের জন্য ২০১৪ সাল থেকে ইরান ও তুরস্কের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা ও যোগাযোগ বজায় রয়েছে। এরপর সিরিয়া ইস্যুতে কাজাখস্তানে দু'দেশের মধ্যে বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ততগুলো সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সিরিয়া বিষয়ে ইরান, রাশিয়া ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং শীর্ষ নেতা পর্যায়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। সর্বশেষ তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় ত্রিদেশীয় বৈঠক হয়। বৈঠকে এই তিন দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা সিরিয়ার, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রতি সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজাখস্তানে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো ছিল আমেরিকার ইচ্ছার পরিপন্থী। তুরস্ক, রাশিয়া ও ইরানের ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ফলে সিরিয়ায় সন্ত্রাসীদের পরাজয় ঘটেছে। এ থেকে এটাও প্রমাণিত হয় একতরফা পদক্ষেপের মাধ্যমে সিরিয়া সংকটের অবসান ঘটানো যাবে না। সীমান্তে নিরাপত্তা নিয়ে তুরস্ক সিরিয়ার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে এবং দু'দেশই সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে। কিন্তু এটাও ঠিক যে একতরফা কোনো পদক্ষেপের মাধ্যমে এ সংকটের সমাধান হবে না বরং দু'দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত 'আদানা' চুক্তি অনুযায়ী চলমান উত্তেজনার অবসান ঘটাতে হবে। ইরানের পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক গবেষক ফতেউল্লাহ তাওয়াস্সুলি মনে করেন, তুরস্ক দু'টি কারণে চিন্তিত। প্রথমত, কুর্দি সংকট এবং দ্বিতীয়ত, সিরিয়া ও তুরস্ক সীমান্তে সন্ত্রাসীদের অবাধ যাতায়াত। তুরস্কের এ উদ্বেগ সম্পর্কে তিনি বলেন, "এ উদ্বেগ দূর করার জন্য আগেই তুরস্ক ও সিরিয়ার মধ্যে 'আদানা' চুক্তি সই হয়েছে যাতে দুই দেশ সম্মিলিতভাবে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।" পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তুরস্ক সরকারের একতরফা সিদ্ধান্ত ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না বরং এতে সংকট বাড়বে এবং এ অঞ্চলের সব দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মধ্যপ্রাচ্যে তৎপর সন্ত্রাসীরা এ অঞ্চলের সব দেশের জন্যই হুমকি এবং সব দেশেরই উচিত সিরিয়া সরকারকে সহযোগিতা করা যাতে সন্ত্রাসীদেরকে প্রতিহত করা যায়। সিরিয়া একটি স্বাধীন দেশ এবং নিজ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষার অধিকার তাদের রয়েছে। তুরস্ক সরকারের উচিত নিরাপত্তাগত দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করা এবং ওই দেশটির সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান দেখানো। এ অবস্থায় রুশ প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূতের তেহরান সফর গুরুত্বপূর্ণ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।#
×