ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীর টিপু রাজাকারের রায় যে কোন দিন

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ১৮ অক্টোবর ২০১৯

রাজশাহীর টিপু রাজাকারের রায় যে কোন দিন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ তথা যুদ্ধাপরাধের মামলায় রাজশাহীর বোয়ালিয়ার মোঃ আব্দুস সাত্তার ওরফে টিপু রাজাকার ওরফে টিপু সুলতানের বিষয়ে যে কোন দিন রায় ঘোষণা করবে ট্রাইব্যুনাল। অর্থাৎ রায় ঘোষণার জন্য মামলাটি সিএভি রাখা হয়েছে। এটি হবে ট্রাইব্যুনালের ৪১তম রায়। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণার এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর ছিলেন মোখলেসুর রহমান বাদল। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম। গত বছরের ২৭ মার্চ এ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এরপর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। পরে একই বছরের ৮ আগস্ট তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। আসামির বিরুদ্ধে মামলায় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজশাহীর বোয়ালিয়ায় দশজনকে হত্যা, দুই জনকে দীর্ঘদিন আটকে রেখে নির্যাতন, ১২ থেকে ১৩ বাড়ির মালপত্র লুট করে আগুন দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রথমদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও গণহত্যা চালিয়েছিল পাক আর্মি ও স্থানীয় রাজাকাররা। সেই সব স্থানীয় রাজাকারদের মধ্যে টিপু সুলতানই বেঁচে আছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ আসামি জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ‘ইসলামী ছাত্র সংঘ’ করতেন। আসামি ’৮৪ সালে নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর ডিগ্রী কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ’১১ সালে অবসরে যান। ’৭৪ সালের ১০ আগস্ট একবার গ্রেফতার হন। পরবর্তীতে তিনি ছাড়া পান। গত বছরের ১ জানুয়ারি বিস্ফোরক আইনের মামলায় মতিহার থানা পুলিশ তাকে ফের গ্রেফতার করে। পরে তাকে যুদ্ধাপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে যে দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে তা হলো একাত্তরের সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুর দেড়টা থেকে পরদিন মধ্যরাত পর্যন্ত আসামি মোঃ আব্দুস সাত্তার ওরফে টিপু সুলতান ওরফে টিপু রাজাকার স্থানীয় অন্যান্য রাজাকার ও পাকসেনা বোয়ালিয়া থানার সাহেববাজারের ১নং গদিতে (বর্তমানে জিরো পয়েন্ট) হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বাবর ম-লকে আটক করে। পরে তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শামসুজ্জোহা হলে স্থাপিত সেনাক্যাম্পে নিয়ে দিনভর নির্যাতন করার পর গুলি করে হত্যা করে তার লাশ মাটিচাপা দেয়। ’৭১ সালের ২ নবেম্বর রাত আনুমানিক দুটায় আসামি, স্থানীয় রাজাকার ও ৪০ থেকে ৫০ পাকসেনা বোয়ালিয়া থানার তালাইমারীতে হামলা চালায়। হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা চাঁদ মিয়া, আজহার আলী শেখসহ ১১ জনকে আটক করে নির্যাতন চালায়। এ সময় তারা তালাইমারী এলাকার ১২ থেকে ১৩ বাড়ি লুট করে। পরে আটক ১১ জনকে রাবির শহীদ শামসুজ্জোহা হলে স্থাপিত অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প ও টর্চার সেলে নিয়ে ৪ নবেম্বর মাঝরাতে নয়জনকে গুলি করে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়।
×