ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নাটোরে ১০ বছর ধরে শিকল বন্দী ব্যক্তিকে মুক্ত করলেন ইউএনও

প্রকাশিত: ০২:৩১, ১৭ অক্টোবর ২০১৯

নাটোরে ১০ বছর ধরে শিকল বন্দী ব্যক্তিকে  মুক্ত করলেন ইউএনও

নিজস্ব সংবাদদাদা, নাটোর ॥ মানসিক ভারসাম্যহীন আমির আলী টয়লেটে ১০ বছর শিকল বন্দী ছিলেন। চিকিৎসা না করিয়ে নিজ বাড়ীর একটি টয়লেটে শিকল বন্দী করে রাখে তারই স্ত্রী সন্তানরা। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীর মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত হয়ে তরুণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তমাল হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে আমিরকে শিকল বন্দীদশা থেকে মুক্ত করেন এবং তার বাড়ীতেই থাকার সুব্যবস্থা করেন। বুধবার দিবাগত রাতে নাটোরের গুরুদাসপুরে নাজিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর ওয়াবদা বাজারে এই ঘটনা ঘটে। আমির স্থানীয় ওয়াবদা বাজারের আমির আলী সুপার মার্কেটের মালিক। শিকল বন্দী আমিরের এক ছেলে দুই মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে সংসার। গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তমাল হোসেন জানায়, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে আমির আলীকে তার পরিবারের লোকজন একটি কুড়ে ঘরে তাকে শিকল বন্দী করে রেখেছিলো। সামান্য বৃষ্টি হলেই হাটু পানি জমতো ওই ঘরে। শুধু তাই নয় যে ঘরে আমির আলী কে বন্দী করে রাখা হয়েছিলো, সেই ঘরেই তার শোয়ার জায়গা এবং টয়লেট স্থাপন করা হয়েছিলো। ভাঙ্গা কুড়ে ঘরে টয়লেট, গোসল, খাবারসহ পোকা মাকড়ের কামড় খেয়েই কাটিয়েছে দশটি বছর। বিষযটি জানার পরেই ঘটনাস্থলে গিয়ে আমির আলীকে উদ্ধার করে তার বাড়িতেই ভাল একটি ঘরে তার থাকার জায়গার ব্যবস্থা করে দেই। পরবর্তীতে আমির আলীর প্রতি এমন অমানবিক আচরণ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। আমির আলির ভাগনে রহিম জানায়, দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ তার মামা আমির আলীকে কোন চিকিৎসা না করিয়েই নোংরা স্থানে বন্দী করে রেখেছিলো তার ছেলে মেয়েরা এবং স্ত্রী। আমির আলীর ছেলে মঞ্জু আলী এবং স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, আমির আলী ভারসাম্যহীন হওয়ায় তাকে এমন ভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে। ১৪ বছর আগে তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছিলো। তারপর আর কোন চিকিৎসা করা হয়নি। আমির আলীকে নোংরা স্থানে তাকে বন্দী রাখার ব্যাপারে ভুল স্বীকার করেছেন তারা। পরবর্তীতে আর তাকে এমন ভাবে রাখা হবেনা বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তমাল হোসেন ও এলাকাবাসীর কাছে প্রতিজ্ঞা করেন তারা।
×