ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রিকেট বিশ্বে ভারতের প্রভাব আরও বাড়াতে চান বিসিসিআই’র নতুন বস সৌরভ

প্রকাশিত: ১২:১৯, ১৬ অক্টোবর ২০১৯

ক্রিকেট বিশ্বে ভারতের প্রভাব আরও বাড়াতে চান বিসিসিআই’র নতুন বস সৌরভ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভারত এমনিতে ক্রিকেট বিশ্বের অঘোষিত মোড়ল। অর্থ-প্রতিপত্তি-ক্ষমতা কোন দিক থেকে তাদের দাপট মোটেই কম নয়। শশাঙ্ক মনোহর বোর্ড (বিসিসিআই) ছেড়ে আইসিসির দায়িত্ব নেয়ার পর সেই প্রভাবে নাকি এখন ভাটা পড়েছে। দেশটির ক্রিকেটমহল সেটাই মনে করে। নতুন বিসিসিআই (বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া) বস্ সৌরভ গাঙ্গুলীও তাদের সঙ্গে একমত। তাই তো ২৩ অক্টোবর বোর্ড প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব বুঝে পাওয়ার পর যে সকল কাজে অগ্রাধিকার দেবেন সেখানে বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতের প্রভাব আরও বাড়ানোর বিষয়টি ওপরের দিকে থাকবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক। ৪৭ বছর বয়সী তারকা আরও যেসব বিষয় সামনে রেখে এগোতে চান সে বিষয়েও ইঙ্গিত দিয়েছেন। যদিও প্রাথমিকভাবে বোর্ড প্রেসিডেন্টের দায়িত্বের মেয়াদ মাত্র দশ মাসের। অল্প সময়ে সর্বোচ্চ কাজের জন্য আন্তরিকতার কোন অভাব নেই কলকাতার দাদাবাবু খ্যাত সৌরভ গাঙ্গুলীর। ‘মুখে যে যাই বলুক ভারতীয় বোর্ড (বিসিসিআই) এখন আইসিসিতে (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) তেমন কোন শক্তি বলে গণ্য হচ্ছে না। আমাদের লক্ষ্য হবে আগের প্রভাব ফিরিয়ে আনা। সেটা খুব প্রয়োজন। আইসিসিতে আমরা এতটুকু দুর্বল থাকব না’ বলেন সৌরভ। তবে একজন তুখোড় ক্রিকেটার আর সাবেক সফল অধিনায়ক হিসেবে ঘরোয়া ক্রিকেট যে তার মাথায় ভালমতো জায়গা করে আছে সেটিও স্পষ্ট, ‘অনেক কাজই রয়েছে। আইসিসিতে ভারতের স্থান ঠিক করা। ঘরোয়া ক্রিকেটকে সাজানো। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটারদের দেখভাল করা। বোর্ডে (বিসিসিআই) সিস্টেম ফেরানো, ইমেজ পুনরুদ্ধার করা। আমার লক্ষ্য হবে স্বাভাবিক বোর্ড পরিচালনার রুটিন ফিরিয়ে আনা। কিন্তু সবার আগে ক্রিকেট পরিচালনার সিস্টেমটা ফেরাতে হবে। আমার মতে ক্রিকেটের দুটো ভাগ। একটা মাঠের মধ্যে। যেটা বিরাট কোহলিদের হাতে। আমাদের ছেলেরা ভাল করছেও। অন্য ভাগটা হচ্ছে পর্দার আড়ালে থাকা ঘরগুলোতে প্রশাসকদের ভূমিকা। এই দ্বিতীয় ভাগটায় আমরা রয়েছি এবং আমাদের কাজ হচ্ছে ক্রিকেট যাতে সঠিক পথে চলে তা নিশ্চিত করা।’ অনেকে বলছেন, নয় মাসে এত জঞ্জাল দূর করা অসম্ভব। তবে খেলোয়াড়ী জীবনে ব্যাটিংয়ে-নেতৃত্বে সামনের বেঞ্চের ছাত্র সৌরভ তা মনে করেন না, ‘আমি একেবারেই তা মনে করি না। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে আবার সঠিক রাস্তায় পরিচালনা করার জন্য এই সময়টা যথেষ্ট। ক্রিকেট পরিচালনা তো চলতেই থাকবে। এখন কাজ হচ্ছে সঠিক পদক্ষেপগুলো নিয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানো এবং ক্রিকেটের উন্নতির জন্য নীতিগুলোকে সাজানো। সেটা নয় মাসে করা যাবে না কেন?’ ২৩ অক্টোবর বিসিসিআই’র নির্বাচন। তার আগে গত সোমবার ছিল আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক খবরে জানানো হয়, মুম্বাইয়ে বিসিসিআই’র হেড কোয়ার্টারে রবিবার মধ্যরাতেই বিজেপির সভাপতি ও বর্তমান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সৌরভের ভাগ্য নিশ্চিত হয়ে যায়। সিকে খান্নার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন বাংলার দাদা। কারণ তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রিজেশ মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন না। সেটিই সত্যি হয়। ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে সৌরভের ভবিষ্যত নিয়ে শুরু হয় নতুন আলোচনা। অনেকের মতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে নাকি সৌরভের একটা দফরফা হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে বিজেপির রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন দাদা। তবে সৌরভ এমন গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন, ‘মোটেও এ ধরনের কোন কথা হয়নি। অমিত শাহজির সঙ্গে আমি দেখা করেছি ঠিকই। কিন্তু বৈঠকে উনি একবারের জন্যও এই প্রসঙ্গ তোলেননি। একদমই তোলেননি।’ সৌরভ প্রাথমিকভাবে দায়িত্ব পাবেন দশ মাসের জন্য। এরপর সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে পরবর্তীতে আরও তিন বছরের জন্য তাকে একই পদে বহাল রাখা হবে। উল্লেখ্য, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সংস্কারে দেশটির সুপ্রীমকোর্ট গঠিত আরএম লোধা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে বিসিসিআই পরিচালিত হচ্ছিল সিওএ (কমিটি অব এ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স) দিয়ে।
×