ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘৭০০’ গোলের এলিট ক্লাবে রোনাল্ডো

প্রকাশিত: ১২:১৮, ১৬ অক্টোবর ২০১৯

‘৭০০’ গোলের এলিট ক্লাবে রোনাল্ডো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্যারিয়ারে একের পর এক স্বর্ণালি সাফল্য পেয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। সাফল্যের এই ধারা এখনও অব্যাহত আছে। সাফল্যের ধারার পাশাপাশি মুড়িমুড়কির মতো রেকর্ডও গড়ে চলেছেন জুভেন্টাসের পর্তুগীজ সুপারস্টার। এবার পেশাদার ক্যারিয়ারে ক্লাব ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ৭০০ গোল করার রেকর্ড গড়েছেন রোনাল্ডো। সোমবার রাতে কিয়েভের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ইউরো ২০২০ বাছাইপর্বের ম্যাচে গোল করে অনন্য এই কীর্তি গড়েছেন পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকা। ম্যাচে ৩৪ বছর বয়সী জুভেন্টাস ফরোয়ার্ড পেনাল্টি থেকে দেশের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন। অবশ্য সিআর সেভেনের আক্ষেপ থাকবে ম্যাচটি ২-১ গোলে হেরে যাওয়ায়। পেশাদার ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ৭০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সুদর্শন এই সুপারস্টার। চেক-অস্ট্রিয়ান বংশোদ্ভূত জোসেফ বিকান সর্বোচ্চ ৮০৫ গোল এ তালিকায় শীর্ষে আছেন। ৭৭২ ও ৭৬৭ গোল নিয়ে এই তালিকায় যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছেন দুই ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোমারিও ও পেলে। হাঙ্গেরির তারকা ফেরেঙ্ক পুসকাসের গোলসংখ্যা ৭৪৬টি। ৭৩৫ গোল নিয়ে রোনাল্ডোর ঠিক আগের অবস্থানে আছেন জার্মানির স্ট্রাইকার গার্ড মুলার। ক্যারিয়ারে ক্লাব ও দেশের হয়ে সর্বমোট ৯৭৩ ম্যাচে রোনাল্ডো ৭০০ গোল করেছেন। এর মধ্যে ৪৫৮টি ম্যাচে তিনি অন্তত একটি করে গোল করেছেন। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ম্যাচে গোলের মাধ্যমে তিনি পর্তুগালের জার্সি গায়ে ৯৫ নম্বর গোল করেছেন। তার আগে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সর্বোচ্চ ১০৯ গোল করে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তালিকার শীর্ষে আছেন ইরানের আলি দাইয়ি। ১২টি ভিন্ন ভিন্ন প্রতিযোগিতায় গড়ে প্রতি ১১২ মিনিটে রোনাল্ডো একটি করে গোল করেছেন। ক্লাব পর্যায়ে স্পোর্টিং লিসবনের হয়ে ৩১ ম্যাচে ৫ গোল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ২৯২ ম্যাচে ১১৮ গোল, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৪৩৮ ম্যাচে ৪৫১ গোল ও জুভেন্টাসের হয়ে ৫১ ম্যাচে করেছেন ৩২ গোল। পর্তুগাল জাতীয় দলের হয়ে প্রতিপক্ষ হিসেবে রোনাল্ডোর সবচেয়ে পছন্দের দল হচ্ছে সুইডেন, লাটভিয়া, এ্যান্ডোরা ও আর্মেনিয়া। এই দেশগুলোর প্রতিটির বিরুদ্ধে তার পাঁচটি করে গোল আছে। এছাড়া ক্লাব প্রতিপক্ষ হিসেবে সেভিয়ার বিরুদ্ধে ২৭টি, এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিরুদ্ধে ২৫টি, গেটাফের বিরুদ্ধে ২৩টি, সেল্টা ভিগোর বিরুদ্ধে ২০টি ও বার্সিলোনার বিরুদ্ধে করেছেন ১৮ গোল। সবচেয়ে বেশি চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গোল, এক মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সর্বোচ্চ গোল, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে সর্বোচ্চ গোল, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়শিপে সর্বোচ্চ ম্যাচ, পর্তুগালের হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড ইতোমধ্যেই রোনাল্ডোর নামের পাশে জুড়ে গেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে বেয়ার লেভারকুসেনের বিরুদ্ধে গোল করে ক্লাব ফুটবলে মেসির ৬০৩ গোলকে টপকে ৬০৫ গোল করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন রোনাল্ডো। আর সিআর সেভেনের গোল যখন ৭০০ হয়েছে তখন মেসির গোলসংখ্যা ৬৭২। আন্তর্জাতিক ফুটবলে রোনাল্ডো অনেক আগে থেকেই ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতা। জাতীয় দলের হয়ে ১৬২ ম্যাচে তার গোলসংখ্যা ৯৫। এ পথে রোনাল্ডো হাঙ্গেরির কিংবদন্তি ফুটবলার ফেরেঙ্ক পুসকাসকে (৮৯ ম্যাচে ৮৪ গোল) পেছনে ফেলেছেন। এখন শুধু আলি দাইয়িকে ছাড়িয়ে যাওয়ার অপেক্ষা। ২০১৮ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম কোন ম্যাচ হেরেছে পর্তুগাল। ফলে কিয়েভে নিজে গোল পেলেও দলের পরাজয়ে মিশ্র অনুভূতি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ক্যারিয়ার গোলের এলিট ক্লাবে নাম লেখানো রোনাল্ডোর। অনন্য রেকর্ড গড়ার পর রোনাল্ডো বলেন, সবাই এমন মাইলফলক ছুঁতে পারে না। আমার সতীর্থ এবং কোচদের ধন্যবাদ, যারা আমাকে এই পর্যায়ে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে। জিততে না পারায় আমি হতাশ, কিন্তু আমার দল নিয়ে আমি গর্বিত। তিনি আরও বলেন, আমার কতগুলো রেকর্ড আছে আমি জানি না। আমি শুধু মুহূর্তগুলো উপভোগ করি এবং যারা আমাকে এমন অসাধারণ উচ্চতায় পৌঁছাতে সাহায্য করেছে তাদের ধন্যবাদ। সর্বশেষ আমি এখানে (কিয়েভের অলিম্পিক স্টেডিয়াম) খেলতে এসে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিতেছিলাম, সুন্দর মুহূর্ত যা এখন অতীত। এই ম্যাচে ভাল খেলেও আমরা জিততে পারিনি। রেকর্ড নিজে নিজেই আসে- আমি তাদের খুঁজি না, রেকর্ডই আমাকে খুঁজে বেড়ায়।
×